পরিচ্ছেদ: কুরআন তিলাওয়াতের আদব ও নিয়ম
কুরআন তিলাওয়াত, গবেষণা, আলোচনা ইত্যাদির অনেক মাসনূন আদব হাদীস ও সাহাবীগণের বক্তব্যের আলোকে আলিমগণ বিভিন্ন গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেছেন। এখানে সংক্ষেপে কিছু প্রয়োজনীয় বিষয় লিখছি:১. যথাসম্ভব ওযূ-সহ আদবের সাথে তিলাওয়াত করা। ২. সম্ভব হলে মিসওয়াক করে সুন্দর পোশাকে বসে তিলাওয়াত করা। তবে বসে শুয়ে দাঁড়িয়ে, হাঁটতে চলতে সর্বাবস্থায় কুরআন তিলাওয়াত করা যায়। ৩. বিশুদ্ধ তিলাওয়াত করা। ৪. তিলাওয়াতের সময় অর্থের দিকে খেয়াল রাখা এবং যথা সম্ভব অর্থকে হৃদয়ে জাগরুক করে হৃদয়কে নাড়া দেওয়া। ৫. তিলাওয়াতের সময় সাজদার আয়াতে সাজদা করা, তাসবীহের আয়াতে তাসবীহ পড়া, পুরস্কারের আয়াতে পুরস্কার চাওয়া ও আযাবের আয়াতে আযাব থেকে আশ্রয় চাওয়া। ৬. তিলাওয়াতের সময় মনকে যথাসম্ভব বিনীত ও আল্লাহর রহমতের জন্য ব্যাকুল রাখা। ৭. তিলাওয়াতের সাথে সাথে সাধ্যমত বিনীত হৃদয়ে ক্রন্দন করা। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কুরআন তিলাওয়াতের সময় চোখের পানি বইয়ে ক্রন্দন করতেন। মুখচাপা ক্রন্দনে তার বুকের মধ্যে শব্দ উঠত। আবু বকর (রা), উমার (রা) ও অন্যান্য সাহাবায়ে কেরামও সালাতে ও সালাতের বাইরে কুরআন তিলাওয়াতের সময় ক্রন্দন ঠেকাতে পারতেন না। ৮. একান্ত প্রয়োজন ছাড়া তিলাওয়াতের সময় কারো সাথে কথা বলার জন্য তিলাওয়াত কেটে না দেওয়া। যথাসম্ভব মনোযোগের সাথে তিলাওয়াত শেষ করে কথা বলা। ৯. তিন দিনের কমে কুরআন খতম না করা। যথসম্ভব প্রতি মাসে বা ২/৩ মাসে একবার খতম করা। ১০. ঘরের কুরআনকে ফেলে না রাখা। প্রতিদিন অন্তত কিছু সময় তা দেখে পাঠ করা।১১. রমযান মাসে বেশি বেশি তিলাওয়াত করা। ১২. মুখস্থ থাকলেও যথাসম্ভব দেখে দেখে কুরআন তিলাওয়াত করা ; কারণ কুরআন শরীফের (মুসহাফের) পৃষ্ঠায় নজর বুলানোই একটি ইবাদত। ১৩. প্রতি বছর অন্তত একবার উত্তম তিলাওয়াত করতে পারেন এমন কাউকে তিলাওয়াত করে শুনান। [বাইহাকী, শুআবুল ঈমান ২/৩১৯-৫৫৭].