০১

দোয়ার অর্থ

০২

আল্লাহর যিকরের সাধারণ ফযীলত

০৩

দোয়া ক্ববুলের সময় ও স্থান

০৪

দোয়া করার আদব বা বৈশিষ্ট্য

০৫

যে সকল স্থানে হাত তুলে দোয়া করা যায়

০৬

দোয়ার প্রকারভেদ

০৭

যেসব কারণে দোয়া কবুল হয় না

০৮

দোয়া করার নিয়মকানুন

০৯

যাদের দোয়া কবুল হয়

১০

দোয়ার মহত্ত্ব

১১

দোয়া কবুলের শর্ত ও যেসব কারণে দোয়া কবুল হয় না

১২

দোয়া কবুলের শর্তাবলি

১৩

যিকর বা আল্লাহর স্মরণের মর্মকথা

১৪

তাওয়াক্কা করে দোয়া পরিত্যাগ

১৫

আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে দোয়া

১৬

মুসলিম সমাজের দোয়া কেন্দ্রিক শিরক

১৭

কুরআন আলোচনা ও গবেষণার ফযীলত

১৮

যিকর বিষয়ক কয়েকটি বিধান

১৯

তাওহীদের প্রতি ঈমান

২০

রিসালাতের প্রতি ঈমান

২১

আল্লাহর ভালোবাসা ও আল্লাহর জন্য ভালোবাসা

২২

ভালবাসার মাপকাঠি রাসুলের (ﷺ) অনুসরণ

২৩

আল্লাহর জন্য ভালবাসা-ই ঈমান

২৪

ঈমানী ভালোবাসার অন্তরায়

২৫

অতিরিক্ত কিছু নফল সালাত

২৬

মানুষের জীবনে দোয়ার গুরুত্ব

২৭

আল্লাহর কাছে যা চাওয়া বেশি গুরুত্বপূ

২৮

রুকিয়াহ বা ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে চিকিৎসা

২৯

নবি (ﷺ)-এর উদ্দেশে দরুদ পড়ার মহত্ত্ব

৩০

ইস্তিগফারের মূলনীতি

৩১

তাওবা-ইস্তিগফারের ফযীলত ও নির্দেশনা

৩২

দোয়া বা প্রার্থনা জ্ঞাপক যিকর

৩৩

দোয়ার কতিপয় মাসনুন নিয়ম ও আদব

৩৪

শুধু আল্লাহর কাছেই চাওয়া

৩৫

কুরআনী যিকরের বিশেষ ফযীলত

৩৬

কুরআন তিলাওয়াতের আদব ও নিয়ম

৩৭

আত্মশুদ্ধিমূলক মানসিক ও দৈহিক কর্ম

৩৮

হতাশা বর্জন ও আল্লাহর প্রতি সু-ধারণা

৩৯

কৃতজ্ঞতা ও সন্তুষ্টি

৪০

নির্লোভ

৪১

নফল সিয়াম ও নফল দান

৪২

কিয়ামুল লাইল, তাহাজ্জুদ ও রাতের যিকর

পরিচ্ছেদ: দোয়া ক্ববুলের সময় ও স্থান

১. লাইলাতুল ক্বদর দোয়া কবুলের অন্যতম সময়আল্লাহ তা‘আলা লাইলাতুল ক্বদরকে এক হাযার মাসের চেয়ে উত্তম বলেছেন (ক্বদর: ৩)রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ‘ইবাদতের জন্য লাইলাতুল ক্বদরকে খুঁজতে বলতেন এবং নিজে লাইলাতুল ক্বদরে সিজ্দা(সলাত আদায়) করতেন। (ছহীহ বুখারী, হা/২০১৬, ছহীহ মুসলিম, হা/২৮২৮, মিশকাত, হা/২০৮৬ ‘ছিয়াম’ অধ্যায়, ‘লাইলাতুল ক্বদর’ অনুচ্ছেদ)রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ‘আয়েশাহ্ (রাঃ)-কে লাইলাতুল ক্বদরে নিম্নোক্ত দোয়াটি পড়তে বলেন,اَللّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّىْউচ্চারণঃ আল্ল-হুম্মা ইন্নাকা ‘আফুব্বুন্ তুহি:ব্বুল্ ‘আফওয়া ফা‘ফু ‘আন্নী।অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল এবং ক্ষমাকে ভালবাসেন, কাজেই আমাকে ক্ষমা করুন’। (আহমাদ, হা/২৫৪২৩; তিরমিযী হা/৩৫১৩; ইবনু মাজাহ, হা/৩৮৫০, সনদ ছহীহ; মিশকাত, হা/২০৯১)রাসূল (ﷺ) লাইলাতুল ক্বদরে ‘ইবাদত করতেন এবং স্বীয় পরিবারকে ‘ইবাদতের জন্য জাগিয়ে দিতেন। (ছহীহ বুখারী, হা/২০২৪; ছহীহ মুসলিম, হা/২৮৪৪; মিশকাত, হা/২০৯০)২. ‘আরাফার মাঠেউসামা বিন যায়েদ (রাঃ) বলেন, আমি ‘আরাফার মাঠে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সওয়ারীর পিছনে ছিলাম, তিনি সেখানে দু’হাত তুলে দোয়া করলেন’। (ছহীহ নাসাঈ, হা/৩০১১ ‘আরাফার মাঠে দু’হাত তুলে দোয়া করা’ অনুচ্ছেদ, ‘হজ্জ’ অধ্যায়)অন্যত্র বর্ণিত আছে, আল্লাহ তা‘আলা ‘আরাফার দিন মানুষকে সবচেয়ে বেশী জাহান্নাম থেকে মুক্ত করেন এবং ফেরেশতাগণের সামনে গৌরব করে বলেন, ‘এ সকল মানুষ (‘আরাফার মাঠে) কী চায়? অর্থাৎ যা চায় তাই প্রদান করা হবে’। (ছহীহ মুসলিম, হা/৩৩৫৪; ছহীহ ইবনু মাজাহ, হা/৩০১৪; মিশকাত, হা/২৫৯৪, ‘আরাফার মাঠে অবস্থান’ অনুচ্ছেদ)৩. ছাফা-মারওয়া পাহাড়ের উপরজাবির (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লহ্ (ﷺ) ছাফা পাহাড়ের উপর উঠে তিনবার বললেন,لَا إلهَ إلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَ لَهُ الْحَمْدُ يُحْيِىْ وَ يُمِيْتُ وَ هُوَ عَلَى كُلِّ شَيْئٍ قَدِيْرٌউচ্চারণঃ লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহ্:দাহূ লা-শারীকালাহূ লাহুল্ মুল্কু ওয়া লাহুল্ হাম্দু ইউহ্:ঈ ওয়া ইউমীতু ওয়াহুয়া ‘আলা- কুল্লি শাই-ইং ক্বদীর।অর্থঃ ‘আল্লাহ ব্যতীত কোন হক্ব মা‘বূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। রাজত্ব তাঁর হাতে, প্রশংসা একমাত্র তাঁর। তিনি জীবন দান করেন এবং তিনি মরণ দান করেন, তিনি সকল ক্ষমতার অধিকারী’। অতঃপর “আল্ল-হু আকবার” বললেন ও “আল হামদুলিল্লাহ” বললেন এবং তাঁর শক্তি-সামর্থ্য অনুপাতে দোয়া করলেন।অনুরূপ মারওয়া পাহাড়ে উঠে বললেন,لَا إلهَ إلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَ لَهُ الْحَمْدُ وَ هُوَ عَلَى كُلِّ شَيْئٍ قَدِيْرٌউচ্চারণঃ লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহ্:দাহূ লা-শারীকালাহূ লাহুল্ মুলকু ওয়া লাহুল্ হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা- কুল্লি শাই-ইং ক্বদীর।অর্থঃ ‘আল্লাহ ব্যতীত কোন হক্ব মা‘বূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। রাজত্ব তাঁর হাতে, প্রশংসা একমাত্র তাঁর। তিনি সকল ক্ষমতার অধিকারী’। তারপর-لَا إِلهَ إِلاَّ اللّٰهُ، سُبْحَانَ اللّٰهِএবং ِاَلْحَمْدُ لِلّه বললেন। অতঃপর আল্লাহ্‌র ইচ্ছা অনুযায়ী দোয়া করলেন। (ছহীহ নাসাঈ, হা/২৯৭৪, অনুচ্ছেদ ১৭২, ‘হজ্জ’ অধ্যায়, সনদ ছহীহ)৪. ‘বায়তুল্লাহ্’ বা কা‘বা ঘরকে দেখে দোয়াআবু হুরায়রাহ্ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) মক্কায় প্রবেশ করে ‘হাজ্‌রে আসওয়াদ’ বা কালো পাথরের পাশে এসে পাথরটিকে চুম্বন করলেন, বায়তুল্লাহ্ ত্বাওয়াফ করলেন এবং ছাফা পাহাড়ে উঠে বায়তুল্লাহ্‌র দিকে মুখ করে হাত তুলে দোয়া, যিকির ও প্রার্থনা করতে লাগলেন। [(ছহীহ আবূ দাঊদ, হা/১৮৭২, সনদ ছহীহ; মিশকাত, হা/২৫৭৫, (‘হজ্জ’ অধ্যায়)]৫. ছিয়াম অবস্থায়আবু হুরায়রাহ্ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, ‘তিন শ্রেণীর লোকের দোয়া ফেরত দেয়া হয়না। তন্মধ্যে একজন হচ্ছে ছিয়াম পালনকারী, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে ইফতার করে’। (সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১৭৯৭)৬. জুম‘আর দিনেরাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, ‘জুম‘আর দিন এমন একটি সময় আছে, যে সময়ে বান্দা কিছু চাইলে আল্লাহ তাকে প্রদান করেন’। (ছহীহ ইবনু মাজাহ, হা/১০৮৪, সনদ হাসান; মিশকাত, হা/১৩৬৩, ‘স্বলাতুল জুম‘আ’ অনুচ্ছেদ)‘আব্দুল্লাহ্ ইব্‌নু সালাম (রাঃ) বলেন, নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহ্‌র কিতাবে জুম‘আর দিনে এমন একটি সময় পাই, যে সময়ে বান্দা স্বলাত আদায় করে প্রার্থনা করলে আল্লাহ তার প্রার্থনা কবূল করেন। [(আবূ দাঊদ, হা/১০৪৬; তিরমিযী, হা/৪৯১; ইবনু মাজাহ, হা/১০৮৪, ১১৩৯, সনদ ছহীহ; নাসাঈ, হা/১৪৩০; মিশকাত হা/১৩৫৯)]ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত যে, দোয়া ক্ববুলের চূড়ান্ত সময় হচ্ছে ইমাম সাহেবের মিম্বারে বসা হতে স্বলাত শেষ হওয়া পর্যন্ত। (ছহীহ মুসলিম, হা/৮৫৩; বুলূগুল মারাম, হা/৪৬৪) অন্য বর্ণনায় আছে ‘আছর হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। (আবূ দাঊদ, হা/১০৪৮; বুলূগুল মারাম, হা/৪৬৬)৭. হজ্জ পালনকালে পাথর নিক্ষেপের পররাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) প্রথম দু’বার পাথর নিক্ষেপের পর দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতেন এবং অনুনয়-বিনয় সহকারে দোয়া করতেন’। (ছহীহ্ আবূ দাঊদ, হা/১৯৭৩; ‘মানাসিক’ অধ্যায়, সনদ ছহীহ)অন্য বর্ণনায় রয়েছে, তিনি পশ্চিমমুখী হয়ে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে হাত উঠিয়ে প্রার্থনা করতেন। (ছহীহ বুখারী, হা/১৭৫১-৫৩; নাসাঈ, হা/৩০৮৩ ‘হজ্জ’ অধ্যায়)৮. রাতেমু‘আয্ ইব্‌নু জাবাল্ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, ‘কোন ব্যক্তি যদি ওযূ করে দোয়া পড়ে রাতে শয্যায় যায়, তারপর শেষ রাতে উঠে সে আল্লাহ্‌র নিকট যা চায় আল্লাহ তা‘আলা তাকে তাই প্রদান করেন’। (আহমাদ, হা/২২১৪৫; আবূ দাঊদ,হা/৫০৪২, সনদ ছহীহ; মিশকাত, হা/১২১৫; ‘রাতে জাগ্রত হয়ে কি বলবে’ অনুচ্ছেদ)আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক রাতের দুই তৃতীয়াংশের পর প্রথম আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, ‘যে আমাকে ডাকবে আমি তার ডাকে সাড়া দিব, যে আমার নিকট চাইবে আমি তাকে দান করব, যে আমার নিকট ক্ষমা চাইবে আমি তাকে ক্ষমা করব’। (ছহীহ বুখারী, হা/১১৪৫; ছহীহ মুসলিম, হা/১৮০৮; মিশকাত, হা/১২২৩)জাবির (রাঃ) বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি যে, ‘নিশ্চয়ই রাতে একটি সময় রয়েছে, যে সময়ে কোন মুসলমান ইহকাল ও পরকালের কিছু চাইলে আল্লাহ তাকে তা প্রদান করেন এবং এটা প্রতি রাতেই হয়ে থাকে’। (ছহীহ মুসলিম, হা/১৮০৬; মিশকাত, হা/১২২৪)৯. স্বলাতের শেষেপ্রকাশ থাকে যে, স্বলাতের শেষ বলতে সালামের আগে ও পরের সময়কে বুঝানো হয়। আবূ উমামাহ্ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল কোন্ সময় দোয়া সবচেয়ে বেশী কবূল হয়? রাসূল্ (ﷺ) বললেন, ‘শেষ রাতে এবং ফরয স্বলাতের পরে’। (তিরমিযী, হা/৩৫৭৯ ; মিশকাত, হা/৯৬৮, সনদ হাসান ‘স্বলাতের পর যিকির’ অনুচ্ছেদ)উল্লেখ্য যে, ফরয স্বলাতের পর দোয়া ক্ববূল হওয়ার অর্থ হাত তুলে দোয়া নয়; বরং সালামের পর যে সকল দোয়া পাঠের কথা ছহীহ হাদীছ সমূহে এসেছে, সেগুলি পাঠ করা।১০. আযান ও ইক্বামতের মাঝের দোয়া, আযান চলাকালীন দোয়া ও আযানের পরেআনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, ‘‘আযান এবং ইক্বামতের মাঝের দোয়া ফেরত দেয়া হয়না’’। (আহমাদ, হা/১৩৩৮১; আবূ দাঊদ, হা/৫২১, সনদ ছহীহ; মিশকাত হা/৬৭১)‘আব্দুল্লাহ ইব্‌নু ‘আমর (রাঃ) বলেন, জনৈক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল্ (ﷺ)! মুআয্যিনদের মর্যাদা যে আমাদের চেয়ে বেশী হয়ে যাবে, তখন রসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেন, ‘তুমিও তাই বল, মুআয্যিন্ যা বলে। তারপর আযান শেষে চাও, যা চাইবে তাই প্রদান করা হবে’। (ছহীহ আবূ দাঊদ, হা/৫২৪, সনদ হাসান; মিশকাত, হা/৬৭৩ ‘আযানের ফযীলত’ অনুচ্ছেদ)অন্য বর্ণনায় আছে, মুআয্যিনের সাথে সাথে আযানের শব্দগুলি যে বলবে, সে জান্নাতে যাবে। (ছহীহ মুসলিম, হা/৮৭৬; আবূ দাঊদ, হা/৫২৭; মিশকাত, হা/৬৫৮)অপর এক বর্ণনায় আছে, যে ব্যক্তি আযান শুনে বলবে-اَشْهَدُ اَنْ لَا اِلهَ اِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ وَ اَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَ رَسُوْلُهُ رَضِيْتُ بِاللَّهِ رَبَّا وَّ بِمُحَمَّدٍ رَّسُوْلًا وَّ بِالْاِسْلَامِ دِيْنًا.উচ্চারণঃ আশ্‌হাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহ্:দাহূ লা- শারীকা লাহূ ওয়া আশ্‌হাদু আন্না মুহাম্মাদান্ ‘আব্দুহূ ওয়া রসূলুহ্, রযীতু বিল্লা-হি রব্বাওঁ ওয়া বিমুহাম্মাদির রসূলাওঁ ওয়া বিল্ ইসলা-মি দ্বীনা-।অর্থঃ ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এক আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই এবং তাঁর কোন শরীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (ﷺ) তাঁর বান্দা ও রসূল্। আমি আল্লাহ্কে রব হিসাবে, মুহাম্মাদ (ﷺ) কে রসূল্ হিসাবে এবং ইসলামকে দ্বীন হিসাবে মেনে নিয়েছি।'তাহ’লে তার পাপ সমূহ ক্ষমা করা হবে। (ছহীহ মুসলিম, হা/৮৭৭ আবূ দাঊদ, হা/৫২৫; মিশকাত, হা/৬৬১)১১. যুদ্ধের মাঠে শত্রুর সাথে মোকাবেলার সময়রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেন, ‘হে জনগণ! তোমরা যখন শত্রুর সাথে সাক্ষাৎ করবে তখন আল্লাহ্‌র নিকট নিরাপত্তা চাও, ধৈর্যধারণ কর এবং জেনে রেখ, নিশ্চয়ই জান্নাত তরবারীর ছায়ার নীচে’। (ছহীহ বুখারী, হা/২৯৬৬; ছহীহ মুসলিম, হা/৪৬৪০; আবূ দাঊদ, হা/২৬৩১; মিশকাত, হা/৩৯৩০ ‘কাফেরদের পত্রের মাধ্যমে ইসলামের দিকে আহবান’ অনুচ্ছেদ, ‘জিহাদ’ অধ্যায়)অন্য বর্ণনায় রয়েছে, দু’সময় দোয়া ফেরত দেয়া হয় না: ১. আযানের সময় এবং২. যুদ্ধের সময়।(ছহীহ আবূ দাঊদ্, হা/২৫৪০, সনদ ছহীহ; মিশকাত, হা/৬৭২; ‘আযানের ফযীলত’ অনুচ্ছেদ)১২. সিজদার সময়ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, ‘তোমরা সিজদায় বেশী বেশী দোয়া কর, কেননা সিজ্দাহ্ হচ্ছে দোয়া ক্ববূলের উপযুক্ত সময়’। (ছহীহ মুসলিম, হা/১১০২; মিশকাত, হা/৮৭৩ ‘রুকূ‘র বর্ণনা’ অনুচ্ছেদ)অন্য বর্ণনায় রয়েছে, মানুষ সিজদাহ্ অবস্থায় তার প্রতিপালকের সবচেয়ে বেশী নিকটবর্তী হয়। অতএব তোমরা সিজদায় বেশী বেশী দোয়া কর’। (ছহীহ মুসলিম, হা/১১১১; মিশকাত, হা/৮৯৪, ‘সিজদাহ ও তার ফযীলত’ অনুচ্ছেদ) তবে সিজদায় কুরআনের আয়াত দ্বারা দোয়া করা যাবে না’। (ছহীহ মুসলিম, হা/১১০২; মিশকাত, হা/৮৭৩)১৩. স্বলাতের মধ্যে তাশাহ্হুদের পররাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেন, ‘তাশাহ্হুদের পর যার যা ইচ্ছা দোয়া করবে’। (ছহীহ বুখারী, হা/৮৩৫ ‘স্বলাতের মধ্যে তাশাহ্হুদের পর ইচ্ছানুযায়ী দোয়া করা’ অনুচ্ছেদ, ‘আযান’ অধ্যায়)অত্র হাদীছ দ্বারা প্রামাণিত হয় যে, স্বলাতের শেষ বৈঠকে সালাম ফিরানোর পূর্বে যে কোন ধরনের দোয়া করা যায়। চাই তা কুরআনের আয়াত হৌক অথবা হাদীছে বর্ণিত দোয়াই হৌক।১৪. কারো অনুপস্থিতিতে দোয়াকারো অনুপস্থিতিতে তার জন্য দোয়া করলে দোয়া ক্ববুল হয়’। (তিরমিযী, হা/৩৪৪৮; আবূ দাঊদ, হা/১৫৩৬, মিশকাত হা/২২৫০, সনদ হাসান, ‘ দোয়া ’ অধ্যায়)১৫. তিন শ্রেণীর লোকের দোয়া ক্ববুল হওয়া অবশ্যম্ভাবী১. পিতামাতার দোয়া ২. মুসাফিরের দোয়া এবং ৩. মাযলূমের দোয়া’। (আবূ দাঊদ, হা/১৫৩৬; মিশকাত, হা/২২৫০ সনদ হাসান)অন্য বর্ণনায় রয়েছে, তিন শ্রেণীর লোকের দোয়া ফেরত দেয়া হয় না। ১. আল্লাহকে বেশী বেশী স্মরণকারীর দোয়া, ২. মাযলূমের দোয়া, ৩. ন্যায়পরায়ণ শাসকের দোয়া। (সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১২১১)অন্য বর্ণনায় রয়েছে, তিন শ্রেণীর দোয়া রয়েছে যা ফেরত দেওয়া হয় না। ১. পিতামাতার দোয়া, ২. ছিয়াম পালনকারীর দু‘আ ও ৩. মুসাফিরের দোয়া। (সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১৭৯৭)পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের প্রতি লক্ষ্য করলে দোয়া করা ও ক্ববূলের বিভিন্ন সময় ও স্থান দেখা যায়। ‘আল্লামা নওয়াব ছিদ্দীক হাসান খান ভূপালী (রহঃ) তাঁর ‘নুযূলুল আবরার’ গ্রন্থে ২২টি স্থান ও সময় উল্লেখ করেছেন’ (নুযূলুল আবরার, ৪৩-৫৪ পৃঃ)অনুরূপভাবে কানযুল ঊম্মালেও ১৮টি স্থান ও সময়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

সেটিংস

বর্তমান ভাষা