পরিচ্ছেদ: নবি (ﷺ)-এর উদ্দেশে দরুদ পড়ার মহত্ত্ব
আল্লাহ তা'আলা বলেন - إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ ۚ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيمًا ﴿٥٦﴾অর্থঃ আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবির প্রতি দরুদ পাঠান৷ হে ঈমানদারগণ! তোমরাও তার প্রতি দরুদ ও সালাম পাঠাও। (সূরা আল-আহযাব ৩৩:৫৬)আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনিল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি নবি (ﷺ)-কে বলতে শুনেছেন, “তোমরা যখন আযান শুনবে, তখন মুআযিন যা বলে তোমরাও তার অনুরূপ বোলো; এরপর আমার জন্য দরুদ পাঠ কোরো, কারণ যে-ব্যক্তি আমার জন্য একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহ তার জন্য দশটি কল্যাণ নাযিল করেন। এরপর তোমরা আমার জন্য আল্লাহর কাছে ওসীলা চাও; ওসীলা হলো জান্নাতের ভেতর এমন একটি স্থান, যা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে কেবল একজনই পাবে, আর আমার প্রত্যাশা—আমিই হবো সেই ব্যক্তি। যে-ব্যক্তি আমার জন্য ওসীলা চায়, তার জন্য (আমার) সুপারিশ বাধ্যতামূলক হয়ে যায়।” [মুসলিম, ৩৮৪]আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেন, “যে-ব্যক্তি আমার জন্য একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহ তার জন্য দশটি কল্যাণ নাযিল করেন।” [মুসলিম, ৪০৮]আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেন, “তোমরা তোমাদের ঘরগুলোকে কবর বানিয়ে ফেলো না, আর আমার কবরকে ঈদে পরিণত কোরো না; তোমরা বরং আমার জন্য দরুদ পাঠ কোরো, কারণ তোমরা যেখানেই থাকো না কেন, তোমাদের দরুদ আমার কাছে পৌঁছে যাবে।” [আবূ দাউদ, ২০৪২, হাসান]হুসাইন ইবনু আলি ইবনি আবী তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, 'আল্লাহর। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, “কৃপণ হলো ওই ব্যক্তি, যার সামনে আমার আলোচনা করা হলো, অথচ সে আমার জন্য দরুদ পাঠ করল না।” [বুখারি, আত-তারীখুল কাবীর, ৫/১৪৮; তিরমিযি, ৩৫৪৬, হাসান]আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেন, “অপদস্থ হোক ওই ব্যক্তি, যার সামনে আমার আলোচনা করা হলো, অথচ সে আমার জন্য দরুদ পাঠ করল না; অপদস্থ হোক ওই ব্যক্তি, যার কাছে রমাদান আসলো আর চলে গেল, অথচ তার গোনাহ মাফ হলো না; আর অপদস্থ হোক ওই ব্যক্তি, যে তার পিতামাতাকে বুড়ো বয়সে পেল, অথচ সে জান্নাত অর্জন করতে পারল না।” [অথচ তারা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাতে পারল না] [তিরমিযি, ৩৫৪৫, হাসান]আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেন, “আল্লাহর কিছু ফেরেশতা পৃথিবীতে ঘুরতে থাকে; তারা আমার উম্মাহর কাছ থেকে সালাম আমার কাছে পৌঁছে দেয়।” [নাসাঈ, ১২৮১, ইসনাদটি সহীহ]আউস ইবনু আউস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবি (ﷺ) বলেন, “তোমাদের সর্বোত্তম দিনগুলোর একটি হলো জুমুআর দিন; এ দিন আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে, এ দিনে তাঁর মৃত্যু হয়েছে, এ দিনে শিঙায় ফু দেওয়া হবে, আর এ দিনেই (শিঙায় ফু দেওয়ার ফলে) সবাই অচেতন হয়ে পড়বে। সুতরাং এ দিন তোমরা বেশি করে আমার জন্য দরুদ পাঠ করো; কারণ তোমাদের দরুদ আমার কাছে পেশ করা হবে।” সাহাবিগণ জিজ্ঞাসা করেন, “(মৃত্যুর পর) আপনার দেহ শেষ হয়ে যাবে; তখন কীভাবে আমাদের দরুদ-পাঠ আপনার কাছে পেশ করা হবে?” নবি (ﷺ) বলেন, “নবিদের দেহ ভক্ষণ করা আল্লাহ তা'আলা মাটির জন্য হারাম করে দিয়েছেন।” [আবু দাউদ, ১০৪৭, দুর্বল]