পরিচ্ছেদ: দোয়ার মহত্ত্ব
দোয়ার মহত্ত্ব প্রসঙ্গে অনেক আয়াত ও হাদীস রয়েছে। কিছু নিচে উল্লেখ করা হলো। আল্লাহ তা'আলা বলেন:وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِى عَنِّى فَإِنِّى قَرِيبٌ ۖ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ ۖ فَلْيَسْتَجِيبُوا لِى وَلْيُؤْمِنُوا بِى لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُونَ ﴿ ١٨٦﴾অর্থঃ “আমার বান্দারা যদি তোমার কাছে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে, তা হলে (তাদের বলে দিয়ে) আমি তাদের কাছেই আছি৷ যে আমাকে ডাকে আমি তার ডাক শুনি এবং জবাব দিই, কাজেই তাদের উচিত আমার আহ্বানে সাড়া দেওয়া এবং আমার উপর ঈমান আনা; (একথা তুমি তাদের শুনিয়ে দাও) হয়তো তারা সত্য-সরল পথের সন্ধান পাবে।” (সূরা আল-বাকারাহ ২:১৮৬)وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِىٓ أَسْتَجِبْ لَكُمْ ۚ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِى سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ ﴿ ٦٠﴾অর্থঃ “তোমাদের রব বলেন—আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেবো। যেসব মানুষ গর্বের কারণে আমার দাসত্ব থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।” (সূরা গাফির ৪০:৬০)ادْعُوا رَبَّكُمْ تَضَرُّعًا وَخُفْيَةً ۚ إِنَّهُۥ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِينَ ﴿ ٥٥﴾ وَلَا تُفْسِدُوا فِى الْأَرْضِ بَعْدَ إِصْلٰحِهَا وَادْعُوهُ خَوْفًا وَطَمَعًا ۚ إِنَّ رَحْمَتَ اللَّهِ قَرِيبٌ مِّنَ الْمُحْسِنِينَ ﴿ ٥٦﴾অর্থঃ “তোমাদের রবকে ডাকো কান্নাজড়িত কণ্ঠে ও চুপে চুপে৷ অবশ্যই তিনি। সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না। দুনিয়ায় সুস্থ পরিবেশ বহাল করার পর। আর সেখানে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না। আল্লাহকেই ডাকো ভীতি ও আশা-সহকারে। নিশ্চিতভাবেই আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীল লোকদের নিকটবর্তী।” (সূরা আল-আ'রাফ ৭:৫৫-৫৬)فَادْعُوا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ وَلَوْ كَرِهَ الْكٰفِرُونَ ﴿ ١٤﴾অর্থঃ “দ্বীনকে আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট করে তাঁকে ডাকো, তোমাদের এ কাজ কাফিরদের কাছে যতই অসহনীয় হোক না কেন।” (সূরা গাফির ৪০:১৪)هُوَ الْحَىُّ لَآ إِلٰهَ إِلَّا هُوَ فَادْعُوهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ ۗ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعٰلَمِينَ ﴿ ٦٥﴾অর্থঃ “তিনি চিরঞ্জীব। তিনি ছাড়া কোনও সার্বভৌম সত্তা নেই৷ তোমাদের দ্বীন তাঁর জন্য নিবেদিত করে তাঁকেই ডাকো৷ গোটা সৃষ্টি জগতের রব আল্লাহর জন্যই সব প্রশংসা।” (সূরা গাফির ৪০:৬৫)নু'মান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবি (ﷺ) বলেন, “দোয়া-ই হলো ইবাদাত।” এরপর তিনি এ আয়াত পাঠ করেন—وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِىٓ أَسْتَجِبْ لَكُمْ ۚ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِى سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ ﴿ ٦٠﴾অর্থঃ “তোমাদের রব বলেন—আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেবো। যেসব মানুষ গর্বের কারণে আমার দাসত্ব থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।” (সূরা গাফির ৪০:৬০) [বুখারি, আল-আদাবুল মুফরাদ, ৭১৪, সহীহ]আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবি (ﷺ) বলেন, “আল্লাহর কাছে দোয়ার চেয়ে অধিক সম্মানযোগ্য আর কিছুই নেই। [তিরমিযি, ২৩৭০, হাসান গরীব] আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেন, “যে আল্লাহর কাছে চায় না, আল্লাহ তার উপর রাগান্বিত হন।” [তিরমিযি, ২৩৭০, হাসান গরীব] এক ব্যক্তি আবৃত্তি করেছেন:لَا تَسْأَلَنَّ بُنَيَّ آدَمَ حَاجَهً وَسَلِ الَّذِيْ أَبْوَابُهُ لَا تَحْجُبُ اَللّٰهُ بَغْضَبُ إِنْ تَرَكْتَ سُؤَالَهُ وَبُنَيَّ آدَمَ حِيْنَ يُسْأَلُ يَغْضَبُঅর্থঃ মানুষের কাছে কিছু চেয়ো না তাঁর কাছে চাও, যার দুয়ারে দারোয়ান নেই; না চাইলে আল্লাহ রাগান্বিত হন আর মানুষের কাছে চাইলে সে রেগে যায়। আবু সাঈদ খুদরি (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবি (ﷺ) বলেন, “কোনও মুসলিম যদি আল্লাহর কাছে এমন দোয়া করে, যার মধ্যে কোনও পাপ ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নের বিষয় নেই, তা হলে আল্লাহ তাকে তিনটির যে কোনও একটি অবশ্যই দেবেন: ১. হয় দ্রুত তাকে তার দোয়ার ফল দেওয়া হবে, অথবা ২. এটিকে তার আখিরাতের জন্য জমা রাখা হবে, নতুবা ৩. তার কাছ থেকে অনুরূপ কোনও অনিষ্ট দূর করে দেওয়া হবে।” (এ কথা শুনে) সাহাবিগণ বলেন, “তা হলে আমরা বেশি বেশি দোয়া করব!” নবি (ﷺ) বলেন, “আল্লাহর দয়া তোমাদের দোয়ার চেয়ে অনেক বেশি!” [আহমাদ, ৩/১৮, ১১১৩৩, ইসনাদটি সহীহ]সালমান ফারিসি (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেন, “তোমাদের রব লাজুক ও মহানুভব; তাঁর বান্দা যখন তাঁর কাছে দু' হাত তোলে, তখন তিনি হাত দুটিকে খালি অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন।” [আবূ দাউদ, ১৪৮৮, সামগ্রিকভাবে হাসান]নিন্দিত জিনিস প্রতিরোধ করে কাঙ্ক্ষিত জিনিস লাভের জন্য, দোয়া হলো অন্যতম মাধ্যম।