পরিচ্ছেদ: দোয়া কবুলের শর্ত ও যেসব কারণে দোয়া কবুল হয় না
শক্তিশালী উপায়,অন্যতম উপকারী ঔষধ; এটি বিপদ-মুসিবতের শত্রু; এটি বিপদ প্রতিরোধ ও উপশম করে, মুসিবত ঠেকিয়ে রাখে ও অপসারণ করে; আর বিপদ-মুসিবত একান্ত এসে গেলে, দোয়া সেটিকে সহজ করে দেয়; দোয়া হলো মুমিনের মোক্ষম হাতিয়ার। দোয়ার সঙ্গে বিপদ-মুসিবতের সম্পর্ক তিন ধরনের: ১. দোয়া মুসিবতের চেয়ে অধিক শক্তিশালী, এ ক্ষেত্রে এটি তা প্রতিরোধ করে; ২. যখন দোয়া মুসিবতের চেয়ে দুর্বল হয়, তখন উভয়ের মধ্যে লড়াই হওয়ার পরই কেবল ব্যক্তিকে তা স্পর্শ করে, আর ততক্ষণে মুসিবত অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়ে; ৩. দুটিই সমান শক্তিশালী, ফলে উভয়ের মধ্যে লড়াই চলতে থাকে, আর তাতে ব্যক্তি থাকে নিরাপদ। ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেন, “যে-মুসিবত এসে গিয়েছে, আর যা এখনও আসেনি—উভয়টির ক্ষেত্রেই দোয়া অত্যন্ত উপকারী; সুতরাং আল্লাহর বান্দারা, তোমরা দোয়াকে আঁকড়ে ধরো। [তিরমিযি, ৩৫৪৮, গরীব]সালমান ফারসি (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেন, “কেবল দোয়াই পারে তাকদীরের লিখন বদলে দিতে আর কেবল সদাচরণই পারে আয়ু বৃদ্ধি করতে।” [তিরমিযি, ২১৩৯, হাসান গরীব]দোয়া ও আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া হলো অস্ত্রের মতো—যার কার্যকারিতা নির্ভর করে অস্ত্র-চালনাকারীর উপর, নিছক অস্ত্রের ধারের উপর নয়। যখন অস্ত্র হবে পরিপূর্ণ ও নিখুঁত, বাহু হবে শক্তিশালী আর প্রতিবন্ধকতা থাকবে অনুপস্থিত, সেখানেই অস্ত্র দিয়ে শত্রুর উপর মোক্ষম আঘাত হানা সম্ভব; আর যেখানে এ তিনটি বৈশিষ্ট্যের কোনও একটির কমতি থাকবে, সেখানে অস্ত্রের প্রভাবও থাকবে কম। তাই, দোয়া যদি নিজেই অক্ষম হয়, অথবা দোয়াকারী যদি তার অন্তর ও জিহ্বাকে একাত্ম করতে না পারে, কিংবা যদি দোয়া কবুলের ক্ষেত্রে কোনও প্রতিবন্ধকতা থাকে তা হলে দোয়ার কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাবে না। [ইবনুল কাইয়িম, আল-জাওয়াবুল কাফী, ৩৬, দারুল কিতাবিল আরাবি, প্রথম সংস্করণ, ১৪০৭ হিজরি]