বিভিন্ন জাদুর জন্য রুকিয়াহ

বিভিন্ন জাদুর জন্য রুকিয়াহ

১১ সাবক্যাট | ১১ দোয়া

অধ্যায়: বিভিন্ন জাদুর জন্য রুকিয়াহ

পরিচ্ছেদ: বিচ্ছেদ ঘটানোর যাদু

৯৪

ভূমিকাআল্লাহ তায়ালা বলেনঃوَاتَّبَعُوا مَا تَتْلُو الشَّيَاطِينُ عَلَىٰ مُلْكِ سُلَيْمَانَ ۖ وَمَا كَفَرَ سُلَيْمَانُ وَلَـٰكِنَّ الشَّيَاطِينَ كَفَرُوا يُعَلِّمُونَ النَّاسَ السِّحْرَ وَمَا أُنزِلَ عَلَى الْمَلَكَيْنِ بِبَابِلَ هَارُوتَ وَمَارُوتَ ۚ وَمَا يُعَلِّمَانِ مِنْ أَحَدٍ حَتَّىٰ يَقُولَا إِنَّمَا نَحْنُ فِتْنَةٌ فَلَا تَكْفُرْ ۖ فَيَتَعَلَّمُونَ مِنْهُمَا مَا يُفَرِّقُونَ بِهِ بَيْنَ الْمَرْءِ وَزَوْجِهِ ۚ وَمَا هُم بِضَارِّينَ بِهِ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّـهِ ۚ وَيَتَعَلَّمُونَ مَا يَضُرُّهُمْ وَلَا يَنفَعُهُمْ ۚ وَلَقَدْ عَلِمُوا لَمَنِ اشْتَرَاهُ مَا لَهُ فِي الْآخِرَةِ مِنْ خَلَاقٍ ۚ وَلَبِئْسَ مَا شَرَوْا بِهِ أَنفُسَهُمْ ۚ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ ﴿١٠٢﴾অর্থঃ আর তারা অনুসরণ করেছে, যা শয়তানরা সুলাইমানের রাজত্বে পাঠ করত। আর সুলাইমান কুফরী করেনি; বরং শয়তানরা কুফরী করেছে। তারা মানুষকে যাদু শেখাত এবং (তারা অনুসরণ করেছে) যা নাযিল করা হয়েছিল বাবেলের দুই ফেরেশতা হারূত ও মারূতের উপর। আর তারা কাউকে শেখাত না যে পর্যন্ত না বলত যে, ‘আমরা তো পরীক্ষা, সুতরাং তোমরা কুফরী করো না। এরপরও তারা এদের কাছ থেকে শিখত, যার মাধ্যমে তারা পুরুষ ও তার স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাত। অথচ তারা তার মাধ্যমে কারো কোন ক্ষতি করতে পারত না আল্লাহর অনুমতি ছাড়া। আর তারা শিখত যা তাদের ক্ষতি করত, তাদের উপকার করত না এবং তারা অবশ্যই জানত যে, যে ব্যক্তি তা ক্রয় করবে, আখিরাতে তার কোন অংশ থাকবে না। আর তা নিশ্চিতরূপে কতই-না মন্দ, যার বিনিময়ে তারা নিজদেরকে বিক্রয় করেছে। যদি তারা জানত। (সূরা বাকারাঃ ১০২)জাবের (রাঃ) বলেন, নবী (ﷺ) এরশাদ করেন, ইবলীস তার আসন পানিতে (সমুদ্রে) রাখে। এবং সে তার বাহিনীকে অভিযানে প্রেরণ করে আর সর্বাপেক্ষা প্রিয় সেই শয়তান হয়, যে সবার থেকে বেশি ফেতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে। অভিযান শেষে সকলেই অভিযানের সফলতা সরদার শয়তানের কাছে পেশ করতে থাকে। অতঃপর সরদার বলে, তোমরা কেউ কোন বড় ধরনের কাজ করে আসতে পারনি। অতঃপর সরদারের কাছে এক ছোট শয়তান এসে বলে, আমি অমুক ব্যক্তিকে ততক্ষণ পর্যন্ত ত্যাগ করিনি যতক্ষণ না আমি তার ও তার স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ ঘটিয়েছি। এরপর রাসূল (ﷺ) বললেন, শয়তানের সরদার সেই ছোট শয়তানকে তার নিকটতম করে নেয় ও বলে, তুমি কতইনা উত্তম। অন্য এক বর্ণনায় আছে। যে, বড় শয়তান ছোট শয়তানের সাথে আলিঙ্গন করে। (মুসলিম)
এ প্রকার যাদুর পরিচয়
এটি যাদুর এমন এক কর্ম যা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ বা দু’বন্ধুর মাঝে বা দু’অংশীদারের মাঝে হিংসা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করে।বিচ্ছেদ ঘটানোর প্রকারভেদঃ১. মা ও সন্তানের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানো।২. পিতা ও সন্তানের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানো ৩. দু'ভাইয়ের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানো। ৪. বন্ধুদের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানো। ৫. ব্যবসায় শরীকদের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানো।৬. স্বামী ও স্ত্রীর বিচ্ছেদ ঘটানো। আর এই প্রকারটি সর্বাপেক্ষা ভয়ানক এবং তা বেশি প্রচলিত।
বিচ্ছেদের যাদুর আলামত
১. হঠাৎ ভালবাসা থেকে শত্রুতায় পরিণত হওয়া। ২. উভয়ের মাঝে অধিক সন্দেহ সৃষ্টি হওয়া। ৩. পরস্পর ক্ষমা না চাওয়া ও ক্ষমা না করা।৪. অতিমাত্রায় মতবিরোধ সৃষ্টি হওয়া যদিও তা সামান্য ব্যাপারকে কেন্দ্র করে।৫. স্ত্রীর সৌন্দর্য অসুন্দরে পরিণত হওয়া। যদিও সে খুবই সুন্দরী হোক স্বামীর কাছে নিকৃষ্ট মনে হওয়া। আর স্ত্রীর কাছে স্বামী নিকৃষ্ট উপলব্ধি হওয়া।৬. যাদুগ্রস্তের নিকট অপর জনের প্রত্যেক কর্মই অপছন্দ হওয়া।৭. যাদুগ্রস্ত অপর পক্ষের বসার স্থানকে অপছন্দ করা। যেমনঃ স্বামী গৃহের বাইরে খুব ভাল থাকে ঘরে প্রবেশ করলেই অন্তরে অতিসংকীর্ণতাবোধ করে। ইবনে কাসীর (রাহেমাহুল্লাহ) বলেনঃ স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছন্নতার যাদুর ফলে যাদুগ্রস্ত অপরজনকে কুদৃষ্টিতে দেখবে বা সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখবে বা এ ধরনের অন্যান্য বিচ্ছেদ সৃষ্টিকারী বিষয়ে পতিত হবে। (তাফসীর ইবনে কাসীরঃ ১/১৪৪)
দুই ব্যক্তির মাঝে বিচ্ছেদের জন্য যাদু যেভাবে করা হয়
যখন কোন ব্যক্তি যাদুকরের কাছে গিয়ে বলে যে, অমুক অমুক ব্যক্তির মাঝে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দিন। তখন যাদুকর তাকে সেই ব্যক্তির নাম ও তার মায়ের নাম জানাতে বলে। এছাড়া সেই ব্যক্তির কাপড়, টুপি, চুল ইত্যাদি নিয়ে আসতে বলে। আর যদি এসবগুলো পাওয়া সম্ভব না হয়, তবে সেই ব্যক্তির রাস্তায় যাদু করা পানি ঢেলে দেয়া হয় যে রাস্তায় উদ্দিষ্ট ব্যক্তি চলাফেরা করে। আর সেই পানি অতিক্রম করা মাত্রই যাদুর দ্বারা আক্রান্ত হয়ে যায়। অথবা এমনও করা হয় যে, খাদ্যদ্রব্য যাদু করে খেতে দেয়া হয়।
চিকিৎসা - প্রথম স্তরঃ চিকিৎসার পূর্বের স্তরঃ
এর চিকিৎসা তিনটি স্তরে করতে হবেঃপ্রথম স্তরঃ চিকিৎসার পূর্বের স্তরঃ১. সেই ঘরে ঈমানী পরিবেশ তৈরি করতে হবে। যেমনঃ সর্বপ্রথম সেই ঘরকে সকল প্রকার ছবি থেকে পবিত্র করতে হবে যেন ফেরেশতা প্রবেশ করতে পারে।২. সেই ঘরকে সকল প্রকার গান-বাজনা থেকে পবিত্র করতে হবে।৩. সেই ঘরের কেউ শরীয়তের বিধান অমান্য করবে না। যেমনঃ পুরুষ সোনা পরবে না আর মহিলা বেপর্দা থাকবে না এবং কোন ব্যক্তি ধুমপান করবে না।৪. অসুস্থ ব্যক্তির সাথে তাবীজ-কবচ, কড়ি বা এধরণের কিছু থাকলে তা খুলে জ্বালিয়ে দিবে।৫. পরিবারের সকলকেই বিশুদ্ধ আকীদায় বিশ্বাসী হিসেবে তৈরি করা। যেন সবাই এর জন্য আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো সাথে সম্পর্ক না রাখে।৬. অসুস্থ ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করা হবে তার অবস্থা নির্ণয় ও তার লক্ষণ বুঝার জন্য যেমনঃ তোমার স্ত্রীকে কি কখনও তোমার নিকট ঘৃণা লাগে? তোমাদের মাঝে কি সাধারণ ও সামান্য বিষয় নিয়ে বিবাদ সৃষ্টি হয়? তুমি কি ঘরের বাহিরে আনন্দ উপলব্ধি করো? আর যখনই ঘরে প্রবেশ করো তখনই কি সমস্যা অনুভব হয়? সহবাসের সময় কি কারে বিরক্ত বোধ হয়? ঘুমের মাঝে কি তাদের উভয়ের মধ্যে কেউ অস্থিরতা অনুভব বা ভীতিজনক স্বপ্ন দেখতে পায়?চিকিৎসক উপরোক্ত প্রশ্নাবলী থেকে দু'টি বা ততোধিক যদি সঠিক হয় তবে চিকিৎসা শুরু করবে।৭. চিকিৎসা আরম্ভ করার পূর্বে নিজে এবং সহযোগী উভয়েই ওযু করে নিবে।৮. অসুস্থ রোগী যদি মহিলা হয়ে থাকে, তবে পর্দা অবস্থায় না হলে চিকিৎসা করবে না।৯. কোন এমন মহিলার চিকিৎসা করবে না, যে শরীয়ত পরিপন্থী পোশাকে রয়েছে যেমনঃ মুখ খোলা, সুগন্ধি ব্যবহৃত অবস্থায় বা নখ বড় করে কাফের মহিলা সদৃশ রয়েছে।১০. মহিলার চিকিৎসা তার মাহরামের (একান্ত আপনজন) উপস্থিতিতে হতে হবে।১১. মাহরাম ব্যতীত অন্য পুরুষ তার সাথে থাকতে পারবে না।১২. সফলতার জন্যে নিজকে সকল কলুষতা ও অন্যের প্রতি সকল আস্থা থেকে মুক্ত রাখবে। আর একমাত্র আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করবে ও তার উপরেই আস্থা রাখবে।
চিকিৎসার দ্বিতীয় স্তরঃ দোয়া ও আয়াত
চিকিৎসক তার হাত রোগীর মাথায় রাখবে এবং তার কানের কাছে এই সব দোয়া ও আয়াত সতর্কতার সাথে এবং বিশুদ্ধ ও স্বজোরে পড়বে।১.بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ ‎﴿١﴾‏ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ ‎﴿٢﴾‏ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ ‎﴿٣﴾‏ مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ ‎﴿٤﴾‏ إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ ‎﴿٥﴾‏ اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ ‎﴿٦﴾‏ صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ ‎﴿٧﴾‏অর্থঃ (১) পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে। (২) সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি সৃষ্টিকুলের রব। (৩) দয়াময়, পরম দয়ালু, পরম করুণাময়, অতি দয়ালু। (৪) বিচার দিবসের মালিক। (৫) আপনারই আমরা ইবাদাত করি এবং আপনারই নিকট আমরা সাহায্য চাই। (৬) আমাদেরকে সরল পথ দেখান। পথের হিদায়াত দিন। (৭) তাদের পথ, যাদের উপর আপনি অনুগ্রহ করেছেন। যাদেরকে নিয়ামত দিয়েছেন।যাদের উপর (আপনার) ক্রোধ আপতিত হয়নি এবং যারা পথভ্রষ্টও নয়। (সূরা ফাতেহা)২.الم ‎﴿١﴾‏ ذَٰلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ ۛ فِيهِ ۛ هُدًى لِّلْمُتَّقِينَ ‎﴿٢﴾‏ الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالْغَيْبِ وَيُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ ‎﴿٣﴾‏ وَالَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنزِلَ مِن قَبْلِكَ وَبِالْآخِرَةِ هُمْ يُوقِنُونَ ‎﴿٤﴾‏ أُولَٰئِكَ عَلَىٰ هُدًى مِّن رَّبِّهِمْ ۖ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ ‎﴿٥﴾‏অর্থঃ (১) আলিফ-লাম-মীম। (২) এই সেই কিতাব, যাতে কোন সন্দেহ নেই, মুত্তাকীদের জন্য হিদায়াত। (৩) গায়েবের প্রতি ঈমান আনে, সালাত কায়েম করে এবং আমি তাদেরকে যে রিয্ক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে। (৪) আর যারা ঈমান আনে তাতে, যা তোমার প্রতি নাযিল করা হয়েছে এবং যা তোমার পূর্বে নাযিল করা হয়েছে। আর আখিরাতের প্রতি তারা ইয়াকীন রাখে। (৫) তারা তাদের রবের পক্ষ থেকে হিদায়াতের উপর রয়েছে এবং তারাই সফলকাম। (সূরা বাকরাঃ ১-৫)৩.وَاتَّبَعُوا مَا تَتْلُو الشَّيَاطِينُ عَلَىٰ مُلْكِ سُلَيْمَانَ ۖ وَمَا كَفَرَ سُلَيْمَانُ وَلَٰكِنَّ الشَّيَاطِينَ كَفَرُوا يُعَلِّمُونَ النَّاسَ السِّحْرَ وَمَا أُنزِلَ عَلَى الْمَلَكَيْنِ بِبَابِلَ هَارُوتَ وَمَارُوتَ ۚ وَمَا يُعَلِّمَانِ مِنْ أَحَدٍ حَتَّىٰ يَقُولَا إِنَّمَا نَحْنُ فِتْنَةٌ فَلَا تَكْفُرْ ۖ فَيَتَعَلَّمُونَ مِنْهُمَا مَا يُفَرِّقُونَ بِهِ بَيْنَ الْمَرْءِ وَزَوْجِهِ ۚ وَمَا هُم بِضَارِّينَ بِهِ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ ۚ وَيَتَعَلَّمُونَ مَا يَضُرُّهُمْ وَلَا يَنفَعُهُمْ ۚ وَلَقَدْ عَلِمُوا لَمَنِ اشْتَرَاهُ مَا لَهُ فِي الْآخِرَةِ مِنْ خَلَاقٍ ۚ وَلَبِئْسَ مَا شَرَوْا بِهِ أَنفُسَهُمْ ۚ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ ‎﴿١٠٢﴾অর্থঃ (১০২) আর তারা অনুসরণ করেছে, যা শয়তানরা সুলাইমানের রাজত্বে পাঠ করত। আর সুলাইমান কুফরী করেনি; বরং শয়তানরা কুফরী করেছে। তারা মানুষকে যাদু শেখাত এবং (তারা অনুসরণ করেছে) যা নাযিল করা হয়েছিল বাবেলের দুই ফেরেশতা হারূত ও মারূতের উপর। আর তারা কাউকে শেখাত না যে পর্যন্ত না বলত যে, ‘আমরা তো পরীক্ষা, সুতরাং তোমরা কুফরী করো না। এরপরও তারা এদের কাছ থেকে শিখত, যার মাধ্যমে তারা পুরুষ ও তার স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাত। অথচ তারা তার মাধ্যমে কারো কোন ক্ষতি করতে পারত না আল্লাহর অনুমতি ছাড়া। আর তারা শিখত যা তাদের ক্ষতি করত, তাদের উপকার করত না এবং তারা অবশ্যই জানত যে, যে ব্যক্তি তা ক্রয় করবে, আখিরাতে তার কোন অংশ থাকবে না। আর তা নিশ্চিতরূপে কতই-না মন্দ, যার বিনিময়ে তারা নিজদেরকে বিক্রয় করেছে। যদি তারা জানত। (সূরা বাকারাঃ ১০২) এ আয়াতটি বেশি বেশি পড়বে।৪.وَإِلَٰهُكُمْ إِلَٰهٌ وَاحِدٌ ۖ لَّا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الرَّحْمَٰنُ الرَّحِيمُ ‎﴿١٦٣﴾‏ إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَالْفُلْكِ الَّتِي تَجْرِي فِي الْبَحْرِ بِمَا يَنفَعُ النَّاسَ وَمَا أَنزَلَ اللَّهُ مِنَ السَّمَاءِ مِن مَّاءٍ فَأَحْيَا بِهِ الْأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا وَبَثَّ فِيهَا مِن كُلِّ دَابَّةٍ وَتَصْرِيفِ الرِّيَاحِ وَالسَّحَابِ الْمُسَخَّرِ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَعْقِلُونَ ‎﴿١٦٤﴾অর্থঃ (১৬৩) আর তোমাদের ইলাহ এক ইলাহ। তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই। তিনি অতি দয়াময়, পরম দয়ালু। (১৬৪) নিশ্চয় আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের বিবর্তনে, সে নৌকায় যা সমুদ্রে মানুষের জন্য কল্যাণকর বস্ত্ত নিয়ে চলে এবং আসমান থেকে আল্লাহ যে বৃষ্টি বর্ষণ করেছেন অতঃপর তার মাধ্যমে মরে যাওয়ার পর যমীনকে জীবিত করেছেন এবং তাতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সকল প্রকার বিচরণশীল প্রাণী ও বাতাসের পরিবর্তনে এবং আসমান ও যমীনের মধ্যবর্তী স্থানে নিয়োজিত মেঘমালায় রয়েছে নিদর্শনসমূহ এমন কওমের জন্য, যারা বিবেকবান। (সূরা বাকারাঃ ১৬৩-১৬৪)৫.اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ ۚ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ ۚ لَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۗ مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِندَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۚ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ ۖ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا ۚ وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ ‎﴿٢٥٥﴾অর্থঃ (২৫৫) আল্লাহ! তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনি স্বাধীন ও নিত্য নতুন ধারক, সব কিছুর ধারক। তন্দ্রা ও নিদ্রা তাঁকে স্পর্শ করেনা। নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু রয়েছে সবই তাঁর। কে আছে এমন, যে তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর নিকট সুপারিশ করতে পারে? সম্মুখের অথবা পশ্চাতের সবই তিনি অবগত আছেন। একমাত্র তিনি যতটুকু ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত, তাঁর জ্ঞানের কিছুই তারা আয়ত্ত করতে পারেনা। তাঁর আসন আসমান ও যমীন ব্যাপী হয়ে আছে এবং এতদুভয়ের সংরক্ষণে তাঁকে বিব্রত হতে হয়না। তিনিই সর্বোচ্চ, মহীয়ান। (আয়াতুল কুরসী, সূরা বাকরাঃ ২৫৫)৬.آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْهِ مِن رَّبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ ۚ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّن رُّسُلِهِ ۚ وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا ۖ غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ ‎﴿٢٨٥﴾‏ لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا ۚ لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ ۗ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِ ۖ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا ۚ أَنتَ مَوْلَانَا فَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ ‎﴿٢٨٦﴾‏অর্থঃ (২৮৫) রাসূল তার নিকট তার রবের পক্ষ থেকে নাযিলকৃত বিষয়ের প্রতি ঈমান এনেছে, আর মুমিনগণও। প্রত্যেকে ঈমান এনেছে আল্লাহর উপর, তাঁর ফেরেশতাকুল, কিতাবসমূহ ও তাঁর রাসূলগণের উপর, আমরা তাঁর রাসূলগণের কারও মধ্যে তারতম্য করি না। আর তারা বলে, আমরা শুনলাম এবং মানলাম। হে আমাদের রব! আমরা আপনারই ক্ষমা প্রার্থনা করি, আর আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তনস্থল। (২৮৬) আল্লাহ কোন ব্যক্তিকে তার সামর্থ্যের বাইরে দায়িত্ব দেন না। সে যা অর্জন করে তা তার জন্যই এবং সে যা কামাই করে তা তার উপরই বর্তাবে। হে আমাদের রব! আমরা যদি ভুলে যাই, অথবা ভুল করি তাহলে আপনি আমাদেরকে পাকড়াও করবেন না। হে আমাদের রব, আমাদের উপর বোঝা চাপিয়ে দেবেন না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন। হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে এমন কিছু বহন করাবেন না, যার সামর্থ্য আমাদের নেই। আর আপনি আমাদেরকে মার্জনা করুন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন, আর আমাদের উপর দয়া করুন। আপনি আমাদের অভিভাবক। অতএব আপনি কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন। (সূরা বাকারাঃ ২৮৫-২৮৬)৭.شَهِدَ اللَّهُ أَنَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ وَالْمَلَائِكَةُ وَأُولُو الْعِلْمِ قَائِمًا بِالْقِسْطِ ۚ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ ‎﴿١٨﴾‏ إِنَّ الدِّينَ عِندَ اللَّهِ الْإِسْلَامُ ۗ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ إِلَّا مِن بَعْدِ مَا جَاءَهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ ۗ وَمَن يَكْفُرْ بِآيَاتِ اللَّهِ فَإِنَّ اللَّهَ سَرِيعُ الْحِسَابِ ‎﴿١٩﴾অর্থঃ (১৮) আল্লাহ সাক্ষ্য দেন যে, তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই, আর ফেরেশতা ও জ্ঞানীগণও। তিনি ন্যায় দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (১৯) নিশ্চয় আল্লাহর নিকট দীন হচ্ছে ইসলাম। আর যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে, তাদের নিকট জ্ঞান আসার পরই তারা মতানৈক্য করেছে, পরস্পর বিদ্বেষবশত। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর আয়াতসমূহের সাথে কুফরী করে, নিশ্চয় আল্লাহ হিসাব গ্রহণে দ্রুত। (সূরা আলে ইমরানঃ ১৮-১৯)৮.إِنَّ رَبَّكُمُ اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْشِ يُغْشِي اللَّيْلَ النَّهَارَ يَطْلُبُهُ حَثِيثًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالنُّجُومَ مُسَخَّرَاتٍ بِأَمْرِهِ ۗ أَلَا لَهُ الْخَلْقُ وَالْأَمْرُ ۗ تَبَارَكَ اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ ‎﴿٥٤﴾‏ ادْعُوا رَبَّكُمْ تَضَرُّعًا وَخُفْيَةً ۚ إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِينَ ‎﴿٥٥﴾‏ وَلَا تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ بَعْدَ إِصْلَاحِهَا وَادْعُوهُ خَوْفًا وَطَمَعًا ۚ إِنَّ رَحْمَتَ اللَّهِ قَرِيبٌ مِّنَ الْمُحْسِنِينَ ‎﴿٥٦﴾অর্থঃ (৫৪) নিশ্চয় তোমাদের রব আসমানসমূহ ও যমীন ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আরশে উঠেছেন। তিনি রাতকে দ্বারা দিনকে ঢেকে দেন। প্রত্যেকটি একে অপরকে দ্রুত অনুসরণ করে। আর (সৃষ্টি করেছেন) সূর্য, চাঁদ ও তারকারাজী, যা তাঁর নির্দেশে নিয়োজিত। জেনে রাখ, সৃষ্টি ও নির্দেশ তাঁরই। আল্লাহ মহান, যিনি সকল সৃষ্টির রব। (৫৫) তোমরা তোমাদের রবকে ডাক অনুনয় বিনয় করে ও চুপিসারে। নিশ্চয় তিনি পছন্দ করেন না সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে। (৫৬) আর তোমরা যমীনে ফাসাদ করো না তার সংশোধনের পর এবং তাঁকে ডাক ভয় ও আশা নিয়ে। নিশ্চয় আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী। (সূরা আ'রাফঃ ৫৪-৫৬)৯.۞ وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنْ أَلْقِ عَصَاكَ ۖ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ ‎﴿١١٧﴾‏ فَوَقَعَ الْحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ ‎﴿١١٨﴾‏ فَغُلِبُوا هُنَالِكَ وَانقَلَبُوا صَاغِرِينَ ‎﴿١١٩﴾‏ وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِينَ ‎﴿١٢٠﴾‏ قَالُوا آمَنَّا بِرَبِّ الْعَالَمِينَ ‎﴿١٢١﴾‏ رَبِّ مُوسَىٰ وَهَارُونَ ‎﴿١٢٢﴾‏অর্থঃ (১১৭) আর আমি মূসার প্রতি ওহী পাঠালাম যে, ‘তুমি তোমার লাঠি ছেড়ে দাও’ তৎক্ষণাৎ সে গিলতে লাগল সেগুলিকে যে অলীক বস্তু তারা বানিয়েছিল। (১১৮) ফলে সত্য প্রকাশ হয়ে গেল এবং তারা যা কিছু করছিল তা বাতিল হয়ে গেল। (১১৯) তাই সেখানে তারা পরাজিত হল এবং লাঞ্ছিত হয়ে গেল। (১২০) আর যাদুকররা সিজদায় পড়ে গেল। (১২১) তারা বলল, ‘আমরা সকল সৃষ্টির রবের প্রতি ঈমান আনলাম, (১২২) মূসা ও হারূনের রবের প্রতি।’ (সূরাঃ আরাফঃ ১১৭-১২২)আয়াতগুলি বেশি বেশি পড়বে, বিশেষ করে ‘وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِينَ’ অংশটি।১০.فَلَمَّا أَلْقَوْا قَالَ مُوسَىٰ مَا جِئْتُم بِهِ السِّحْرُ ۖ إِنَّ اللَّهَ سَيُبْطِلُهُ ۖ إِنَّ اللَّهَ لَا يُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِينَ ‎﴿٨١﴾‏ وَيُحِقُّ اللَّهُ الْحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُجْرِمُونَ ‎﴿٨٢﴾অর্থঃ (৮১) অতঃপর যখন তারা (তাদের রশি ও লাঠি) ফেলল, তখন মূসা বলল, ‘তোমরা যা আনলে, তা যাদু। নিশ্চয় আল্লাহ তা বাতিল করে দেবেন। নিশ্চয় আল্লাহ ফাসাদকারীদের আমল পরিশুদ্ধ করেন না’। (৮২) আর আল্লাহ তাঁর বাণীসমূহের মাধ্যমে সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেন, যদিও অপরাধীরা তা অপছন্দ করে। (সূরা ইউনুসঃ ৮১-৮২)এটিও বেশি বেশি পড়বে, বিশেষ করেঃ " إِنَّ اللَّهَ سَيُبْطِلُهُ " অংশটি বেশি বেশি পড়বে।১১.إِنَّمَا صَنَعُوا كَيْدُ سَاحِرٍ ۖ وَلَا يُفْلِحُ السَّاحِرُ حَيْثُ أَتَىٰ ‎﴿٦٩﴾‏অর্থঃ (৬৯) তারা যা করেছে, তাতো কেবল যাদুকরের কৌশল। আর যাদুকর যেখানেই আসুক না কেন, সে সফল হবে না’। (সূরা ত্বাহাঃ ৬৯)১২.أَفَحَسِبْتُمْ أَنَّمَا خَلَقْنَاكُمْ عَبَثًا وَأَنَّكُمْ إِلَيْنَا لَا تُرْجَعُونَ ‎﴿١١٥﴾‏ فَتَعَالَى اللَّهُ الْمَلِكُ الْحَقُّ ۖ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ ‎﴿١١٦﴾‏ وَمَن يَدْعُ مَعَ اللَّهِ إِلَٰهًا آخَرَ لَا بُرْهَانَ لَهُ بِهِ فَإِنَّمَا حِسَابُهُ عِندَ رَبِّهِ ۚ إِنَّهُ لَا يُفْلِحُ الْكَافِرُونَ ‎﴿١١٧﴾‏ وَقُل رَّبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ ‎﴿١١٨﴾‏অর্থঃ (১১৫) ‘তোমরা কি মনে করেছিলে যে, আমি তোমাদেরকে কেবল অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমার দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে না’? (১১৬) সুতরাং সত্যিকারের মালিক আল্লাহ মহিমান্বিত, তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই; তিনি সম্মানিত ‘আরশের রব। (১১৭) আর যে আল্লাহর সাথে অন্য ইলাহকে ডাকে, যে বিষয়ে তার কাছে প্রমাণ নেই; তার হিসাব কেবল তার রবের কাছে। নিশ্চয় কাফিররা সফলকাম হবে না। (১১৮) আর বল, ‘হে আমাদের রব, আপনি ক্ষমা করুন, দয়া করুন এবং আপনিই সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।’ (সূরা মু'মিনুনঃ ১১৫-১১৮)১৩.وَالصَّافَّاتِ صَفًّا ‎﴿١﴾‏ فَالزَّاجِرَاتِ زَجْرًا ‎﴿٢﴾‏ فَالتَّالِيَاتِ ذِكْرًا ‎﴿٣﴾‏ إِنَّ إِلَٰهَكُمْ لَوَاحِدٌ ‎﴿٤﴾‏ رَّبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا وَرَبُّ الْمَشَارِقِ ‎﴿٥﴾‏ إِنَّا زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِزِينَةٍ الْكَوَاكِبِ ‎﴿٦﴾‏ وَحِفْظًا مِّن كُلِّ شَيْطَانٍ مَّارِدٍ ‎﴿٧﴾‏ لَّا يَسَّمَّعُونَ إِلَى الْمَلَإِ الْأَعْلَىٰ وَيُقْذَفُونَ مِن كُلِّ جَانِبٍ ‎﴿٨﴾‏ دُحُورًا ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌ وَاصِبٌ ‎﴿٩﴾‏ إِلَّا مَنْ خَطِفَ الْخَطْفَةَ فَأَتْبَعَهُ شِهَابٌ ثَاقِبٌ ‎﴿١٠﴾অর্থঃ (১) কসম সারিবদ্ধ ফেরেশতাদের, (২) অতঃপর (মেঘমালা) সুচারুরূপে পরিচালনাকারীদের, (৩) আর উপদেশ গ্রন্থ (আসমানী কিতাব) তিলাওয়াতকারীদের; (৪) নিশ্চয় তোমাদের ইলাহ এক; (৫) তিনি আসমানসমূহ, যমীন ও এ দু’য়ের মধ্যে যা আছে তার রব এবং রব উদয়স্থলসমূহের। (৬) নিশ্চয় আমি কাছের আসমানকে তারকারাজির সৌন্দর্যে সুশোভিত করেছি। (৭) আর প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তান থেকে হিফাযত করেছি। (৮) তারা ঊর্ধ্বজগতের কিছু শুনতে পারে না, কারণ প্রত্যেক দিক থেকে তাদের দিকে নিক্ষেপ করা হয় (উল্কাপিন্ড) (৯) তাড়ানোর জন্য, আর তাদের জন্য আছে অব্যাহত আযাব। (১০) তবে কেউ সন্তর্পণে কিছু শুনে নিলে তাকে পিছু তাড়া করে জ্বলন্ত উল্কাপিন্ড। (সূরা সাফফাত ১-১০)১৪.وَإِذْ صَرَفْنَا إِلَيْكَ نَفَرًا مِّنَ الْجِنِّ يَسْتَمِعُونَ الْقُرْآنَ فَلَمَّا حَضَرُوهُ قَالُوا أَنصِتُوا ۖ فَلَمَّا قُضِيَ وَلَّوْا إِلَىٰ قَوْمِهِم مُّنذِرِينَ ‎﴿٢٩﴾‏ قَالُوا يَا قَوْمَنَا إِنَّا سَمِعْنَا كِتَابًا أُنزِلَ مِن بَعْدِ مُوسَىٰ مُصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ يَهْدِي إِلَى الْحَقِّ وَإِلَىٰ طَرِيقٍ مُّسْتَقِيمٍ ‎﴿٣٠﴾‏ يَا قَوْمَنَا أَجِيبُوا دَاعِيَ اللَّهِ وَآمِنُوا بِهِ يَغْفِرْ لَكُم مِّن ذُنُوبِكُمْ وَيُجِرْكُم مِّنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ ‎﴿٣١﴾‏ وَمَن لَّا يُجِبْ دَاعِيَ اللَّهِ فَلَيْسَ بِمُعْجِزٍ فِي الْأَرْضِ وَلَيْسَ لَهُ مِن دُونِهِ أَوْلِيَاءُ ۚ أُولَٰئِكَ فِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ ‎﴿٣٢﴾অর্থঃ (২৯) আর স্মরণ কর, যখন আমি জিনদের একটি দলকে তোমার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। তারা কুরআন পাঠ শুনছিল। যখন তারা তার কাছে উপস্থিত হল, তখন তারা বলল, ‘চুপ করে শোন। তারপর যখন পাঠ শেষ হল তখন তারা তাদের কওমের কাছে সতর্ককারী হিসেবে ফিরে গেল। (৩০) তারা বলল, ‘হে আমাদের কওম, আমরা তো এক কিতাবের বাণী শুনেছি, যা মূসার পরে নাযিল করা হয়েছে। যা পূর্ববর্তী কিতাবকে সত্যায়ন করে আর সত্য ও সরল পথের প্রতি হিদায়াত করে’। (৩১) ‘হে আমাদের কওম, আল্লাহর দিকে আহবানকারীর প্রতি সাড়া দাও এবং তার প্রতি ঈমান আন, আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করবেন। আর তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক আযাব থেকে রক্ষা করবেন’। (৩২) আর যে আল্লাহর দিকে আহবানকারীর ডাকে সাড়া দেবে না সে যমীনে তাকে অপারগকারী নয়। আর আল্লাহ ছাড়া তার কোন অভিভাবক নেই। এরাই স্পষ্ট বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছে। (সূরা আহকাফঃ ২৯-৩২)১৫.يَا مَعْشَرَ الْجِنِّ وَالْإِنسِ إِنِ اسْتَطَعْتُمْ أَن تَنفُذُوا مِنْ أَقْطَارِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ فَانفُذُوا ۚ لَا تَنفُذُونَ إِلَّا بِسُلْطَانٍ ‎﴿٣٣﴾‏ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ ‎﴿٣٤﴾‏ يُرْسَلُ عَلَيْكُمَا شُوَاظٌ مِّن نَّارٍ وَنُحَاسٌ فَلَا تَنتَصِرَانِ ‎﴿٣٥﴾‏ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ ‎﴿٣٦﴾অর্থঃ (৩৩) হে জিন ও মানবজাতি, যদি তোমরা আসমানসমূহ ও যমীনের সীমানা থেকে বের হতে পার, তাহলে বের হও। কিন্তু তোমরা তো (আল্লাহর দেয়া) শক্তি ছাড়া বের হতে পারবে না। (৩৪) সুতরাং তোমাদের রবের কোন্ নিআমতকে তোমরা উভয়ে অস্বীকার করবে ? (৩৫) তোমাদের উভয়ের প্রতি প্রেরণ করা হবে অগ্নিশিখা ও কালো ধোঁয়া, তখন তোমরা প্রতিরোধ করতে পারবে না। (৩৬) সুতরাং তোমাদের রবের কোন্ নিআমতকে তোমরা উভয়ে অস্বীকার করবে ? (সূরা রহমানঃ ৩৩-৩৬)১৬.لَوْ أَنزَلْنَا هَٰذَا الْقُرْآنَ عَلَىٰ جَبَلٍ لَّرَأَيْتَهُ خَاشِعًا مُّتَصَدِّعًا مِّنْ خَشْيَةِ اللَّهِ ۚ وَتِلْكَ الْأَمْثَالُ نَضْرِبُهَا لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُونَ ‎﴿٢١﴾‏ هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ۖ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ ۖ هُوَ الرَّحْمَٰنُ الرَّحِيمُ ‎﴿٢٢﴾‏ هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ ۚ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ ‎﴿٢٣﴾‏ هُوَ اللَّهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ ۖ لَهُ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَىٰ ۚ يُسَبِّحُ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ ‎﴿٢٤﴾‏অর্থঃ (২১) এ কুরআনকে যদি আমি পাহাড়ের ওপর নাযিল করতাম তবে তুমি অবশ্যই তাকে দেখতে, আল্লাহর ভয়ে বিনীত ও বিদীর্ণ। মানুষের জন্য আমি এ উদাহরণগুলি পেশ করি; হয়ত তারা চিন্তাভাবনা করবে। (২২) তিনিই আল্লাহ, যিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই; দৃশ্য-অদৃশ্যের জ্ঞাতা; তিনিই পরম করুণাময়, দয়ালু। (২৩) তিনিই আল্লাহ; যিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনিই বাদশাহ, মহাপবিত্র, ত্রুটিমুক্ত, নিরাপত্তাদানকারী, রক্ষক, মহাপরাক্রমশালী, মহাপ্রতাপশালী, অতীব মহিমান্বিত, তারা যা শরীক করে তা হতে পবিত্র মহান। (২৪) তিনিই আল্লাহ, স্রষ্টা, উদ্ভাবনকর্তা, আকৃতিদানকারী; তাঁর রয়েছে সুন্দর নামসমূহ; আসমান ও যমীনে যা আছে সবই তার মহিমা ঘোষণা করে। তিনি মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (সূরা হাশরঃ ২১-২৪)১৭.قُلْ أُوحِيَ إِلَيَّ أَنَّهُ اسْتَمَعَ نَفَرٌ مِّنَ الْجِنِّ فَقَالُوا إِنَّا سَمِعْنَا قُرْآنًا عَجَبًا ‎﴿١﴾‏ يَهْدِي إِلَى الرُّشْدِ فَآمَنَّا بِهِ ۖ وَلَن نُّشْرِكَ بِرَبِّنَا أَحَدًا ‎﴿٢﴾‏ وَأَنَّهُ تَعَالَىٰ جَدُّ رَبِّنَا مَا اتَّخَذَ صَاحِبَةً وَلَا وَلَدًا ‎﴿٣﴾‏ وَأَنَّهُ كَانَ يَقُولُ سَفِيهُنَا عَلَى اللَّهِ شَطَطًا ‎﴿٤﴾‏ وَأَنَّا ظَنَنَّا أَن لَّن تَقُولَ الْإِنسُ وَالْجِنُّ عَلَى اللَّهِ كَذِبًا ‎﴿٥﴾‏ وَأَنَّهُ كَانَ رِجَالٌ مِّنَ الْإِنسِ يَعُوذُونَ بِرِجَالٍ مِّنَ الْجِنِّ فَزَادُوهُمْ رَهَقًا ‎﴿٦﴾‏ وَأَنَّهُمْ ظَنُّوا كَمَا ظَنَنتُمْ أَن لَّن يَبْعَثَ اللَّهُ أَحَدًا ‎﴿٧﴾‏ وَأَنَّا لَمَسْنَا السَّمَاءَ فَوَجَدْنَاهَا مُلِئَتْ حَرَسًا شَدِيدًا وَشُهُبًا ‎﴿٨﴾‏ وَأَنَّا كُنَّا نَقْعُدُ مِنْهَا مَقَاعِدَ لِلسَّمْعِ ۖ فَمَن يَسْتَمِعِ الْآنَ يَجِدْ لَهُ شِهَابًا رَّصَدًا ‎﴿٩﴾অর্থঃ (১) বল, ‘আমার প্রতি ওহী করা হয়েছে যে, নিশ্চয় জিনদের একটি দল মনোযোগ সহকারে শুনেছে। অতঃপর বলেছে, ‘আমরা তো এক বিস্ময়কর কুরআন শুনেছি, (২) যা সত্যের দিকে হিদায়াত করে; অতঃপর আমরা তাতে ঈমান এনেছি। আর আমরা কখনো আমাদের রবের সাথে কাউকে শরীক করব না’। (৩) ‘আর নিশ্চয় আমাদের রবের মর্যাদা সমুচ্চ। তিনি কোন সংগিনী গ্রহণ করেননি এবং না কোন সন্তান’। (৪) ‘আর আমাদের মধ্যকার নির্বোধেরা আল্লাহর ব্যাপারে অবাস্তব কথা- বার্তা বলত’। (৫) ‘অথচ আমরা তো ধারণা করতাম যে, মানুষ ও জিন কখনো আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা আরোপ করবে না’। (৬) আর নিশ্চয় কতিপয় মানুষ কতিপয় জিনের আশ্রয় নিত, ফলে তারা তাদের অহংকার বাড়িয়ে দিয়েছিল। (৭) আর নিশ্চয় তারা ধারণা করেছিল যেমন তোমরা ধারণা করেছ যে, আল্লাহ কাউকে কখনই পুনরুত্থিত করবেন না। (৮) ‘আর নিশ্চয় আমরা আকাশ স্পর্শ করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমরা সেটাকে পেলাম যে, তা কঠোর প্রহরী এবং উল্কাপিন্ড দ্বারা পরিপূর্ণ’। (৯) আর আমরা তো সংবাদ শোনার জন্য আকাশের বিভিন্ন ঘাটিতে বসতাম, কিন্তু এখন যে শুনতে চাইবে, সে তার জন্য প্রস্তুত জ্বলন্ত উল্কাপিন্ড পাবে’। (সূরা জ্বিন ১-৯)১৮. সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, সূরা নাস।بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِقُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ ‎﴿١﴾‏ اللَّهُ الصَّمَدُ ‎﴿٢﴾‏ لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ ‎﴿٣﴾‏ وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ ‎﴿٤﴾‏অর্থঃ (১) বল, তিনিই আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়। (২) আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী। (৩) তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি। (৪) আর তাঁর কোন সমকক্ষও নেই। (সূরা ইখলাস ১১২)بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِقُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ ‎﴿١﴾‏ مِن شَرِّ مَا خَلَقَ ‎﴿٢﴾‏ وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ ‎﴿٣﴾‏ وَمِن شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ ‎﴿٤﴾‏ وَمِن شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ ‎﴿٥﴾‏অর্থঃ (১) বল, ‘আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি ঊষার রবের কাছে, (২) তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে, (৩) আর রাতের অন্ধকারের অনিষ্ট থেকে যখন তা গভীর হয়, (৪) আর গিরায় ফুঁ-দানকারী নারীদের অনিষ্ট থেকে, (৫) আর হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে’। (সূরা ফালাক ১১৩)بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِقُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ ‎﴿١﴾‏ مَلِكِ النَّاسِ ‎﴿٢﴾‏ إِلَٰهِ النَّاسِ ‎﴿٣﴾‏ مِن شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ ‎﴿٤﴾‏ الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ ‎﴿٥﴾‏ مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ ‎﴿٦﴾‏অর্থঃ (১) বল, ‘আমি আশ্রয় চাই মানুষের রব, (২) মানুষের অধিপতি, (৩) মানুষের ইলাহ-এর কাছে, (৪) কুমন্ত্রণাদাতার অনিষ্ট থেকে, যে দ্রুত আত্মগোপন করে। (৫) যে মানুষের মনে কুমন্ত্রণা দেয়। (৬) জিন ও মানুষ থেকে। (সূরা নাস ১১৪)
চিকিৎসার দ্বিতীয় স্তরঃ দোয়া পড়ার পরবর্তী পদক্ষেপ
উপরোক্ত সমস্ত আয়াত ও সূরা রোগীর কর্ণপার্শ্বে উচু আওয়াজে এবং বিশুদ্ধভাবে তিলাওয়াত করবে। এরপর রোগীর তিনটি অবস্থার যে কোন একটি হতে পারে। প্রথমতঃ হয়ত রোগী বেহুশ হয়ে পড়ে যাবে এবং সে যেই জ্বিন দ্বারা আক্রান্ত যে যাদুর দায়িত্বে সেই জ্বিন কথা বলতে থাকবে। এমতবাস্থায় চিকিৎসক জিনের ক্ষেত্রে যে ব্যবস্থা নেয়া উচিত সে ব্যবস্থা নিবে, যা আমি আমার অন্য বইয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করেছি। এরপর সে জিনকে নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলি করবেঃ১. তোমার নাম কি? আর তোমার ধর্ম কি? ধর্মের উপর ভিত্তি করে কথা বলতে হবে। যদি সে অমুসলিম হয়ে থাকে তবে তাকে ইসলাম গ্রহণের জন্যে আহবান করবে আর যদি সে মুসলমান হয়ে থাকে তবে তাকে বুঝাবে যে, তোমার জন্য এটা বৈধ নয় যে, তুমি যাদুকরের সেবায় নিয়োজিত থাক। আর না ইসলাম এর অনুমতি দেয়।২. তাকে জিজ্ঞাসা করবে যে, যাদু কোথায় রয়েছে? তাকে সত্য কথা বলতে বাধ্য করতে হবে। কেননা জ্বিন সব সময় মিথ্যা বলে। সে যদি কোন জায়গার খবর দেয় তবে লোক পাঠিয়ে তা বের করতে হবে।৩. ওকে জিজ্ঞাসা করবে যে, সে কি একাই যাদুর সাথে জড়িত না কি আরও কেউ তার সাথে রয়েছে? যদি অন্য আরও জ্বিন থাকে তবে তার মধ্যে সেই জ্বিনকেও উপস্থিত হতে বাধ্য করবে। অতঃপর তার কথাও শোনবে।৪. কখনও জ্বিন বলবে যে, অমুক ব্যক্তি যাদুকরের কাছে গিয়ে যাদু করতে বলেছে। এমন সব কথাও বিশ্বাস করা যাবে না। কেননা জিনের উদ্দেশ্য হল দুই ব্যক্তি মাঝে শক্রতা বৃদ্ধি করা আর শরীয়তে এসব জ্বিনের সাক্ষ্য গ্রহণীয় নয়। কেননা যাদুকরের সেবায় নিয়োজিত ফাসেক সে।আর আল্লাহ তায়ালা এ সম্পর্কে বলেনঃيَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِن جَاءَكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنُوا أَن تُصِيبُوا قَوْمًا بِجَهَالَةٍ فَتُصْبِحُوا عَلَىٰ مَا فَعَلْتُمْ نَادِمِينَ ‎﴿٦﴾‏অর্থঃ হে ঈমানদারগণ, যদি কোন ফাসিক তোমাদের কাছে কোন সংবাদ নিয়ে আসে, তাহলে তোমরা তা যাচাই করে নাও। এ আশঙ্কায় যে, তোমরা অজ্ঞতাবশত কোন কওমকে আক্রমণ করে বসবে, ফলে তোমরা তোমাদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে। (সূরা হুজুরাতঃ ৬)জিনের তথ্যানুযায়ী যদি সেই যাদুর স্থান পাওয়া যায় আর তা বের করা হয়। তবে পানিতে নিম্নোক্ত আয়াতসমূহ পড়বেঃ۞ وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنْ أَلْقِ عَصَاكَ ۖ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ ‎﴿١١٧﴾‏ فَوَقَعَ الْحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ ‎﴿١١٨﴾‏ فَغُلِبُوا هُنَالِكَ وَانقَلَبُوا صَاغِرِينَ ‎﴿١١٩﴾‏ وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِينَ ‎﴿١٢٠﴾‏ قَالُوا آمَنَّا بِرَبِّ الْعَالَمِينَ ‎﴿١٢١﴾‏ رَبِّ مُوسَىٰ وَهَارُونَ ‎﴿١٢٢﴾অর্থঃ (১১৭) আর আমি মূসার প্রতি ওহী পাঠালাম যে, ‘তুমি তোমার লাঠি ছেড়ে দাও’ তৎক্ষণাৎ সে গিলতে লাগল সেগুলিকে যে অলীক বস্তু তারা বানিয়েছিল। (১১৮) ফলে সত্য প্রকাশ হয়ে গেল এবং তারা যা কিছু করছিল তা বাতিল হয়ে গেল। (১১৯) তাই সেখানে তারা পরাজিত হল এবং লাঞ্ছিত হয়ে গেল। (১২০) আর যাদুকররা সিজদায় পড়ে গেল। (১২১) তারা বলল, ‘আমরা সকল সৃষ্টির রবের প্রতি ঈমান আনলাম, (১২২) মূসা ও হারূনের রবের প্রতি।’ (সূরাঃ আরাফঃ ১১৭-১২২)إِنَّمَا صَنَعُوا كَيْدُ سَاحِرٍ ۖ وَلَا يُفْلِحُ السَّاحِرُ حَيْثُ أَتَىٰ ‎﴿٦٩﴾অর্থঃ তারা যা করেছে, তাতো কেবল যাদুকরের কৌশল। আর যাদুকর যেখানেই আসুক না কেন, সে সফল হবে না’। (সূরা ত্বাহাঃ ৬৯)فَلَمَّا أَلْقَوْا قَالَ مُوسَىٰ مَا جِئْتُم بِهِ السِّحْرُ ۖ إِنَّ اللَّهَ سَيُبْطِلُهُ ۖ إِنَّ اللَّهَ لَا يُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِينَ ‎﴿٨١﴾‏ وَيُحِقُّ اللَّهُ الْحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُجْرِمُونَ ‎﴿٨٢﴾‏অর্থঃ (৮১) অতঃপর যখন তারা (তাদের রশি ও লাঠি) ফেলল, তখন মূসা বলল, ‘তোমরা যা আনলে, তা যাদু। নিশ্চয় আল্লাহ তা বাতিল করে দেবেন। নিশ্চয় আল্লাহ ফাসাদকারীদের আমল পরিশুদ্ধ করেন না’। (৮২) আর আল্লাহ তাঁর বাণীসমূহের মাধ্যমে সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেন, যদিও অপরাধীরা তা অপছন্দ করে। (সূরা ইউনুসঃ ৮১-৮২)এসব আয়াতসমূহ এক পাত্র পানিতে পড়ে ফুক দিবে যাতে কুরআন পড়া ভাপ পানিতে যায়। এরপর যাদুকে সেই পানিতে ডুবিয়ে দিবে তা যে কোন ধরণের যাদুর বস্তুই হোক কাগজ বা সুগন্ধি ইত্যাদি। এরপর সেই পানিকে সাধারণ রাস্তা থেকে অনেক দূরে কোথাও ফেলে দিয়ে আসবে। যদি জ্বিন বলে যে, যাদু আক্রান্ত রোগীকে যাদু পান করিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে রোগীকে জিজ্ঞাসা করতে হবে যে তার পেটে ব্যাথা আছে কি না? যদি ব্যাথা থাকে তবে বুঝতে হবে যে, জ্বিন সত্য বলেছে আর ব্যাথ্য না থাকলে বুঝতে হবে যে, জ্বিন মিথ্যা বলেছে।যদি জ্বিন থেকে সত্য তথ্য সংগ্রহ করা শেষ হয় তখন জ্বিনকে বলবে রোগী থেকে বের হয়ে যেতে এবং আর কখনও যেন ফিরে না আসে। এমনিভাবেই ইনশাআল্লাহ যাদু ধ্বংস করা যাবে। অতঃপর পানিতে ইতিপূর্বেই যে তিনটি আয়াত উল্লেখ হয়েছে তা পড়বে এবং সূরা বাকারার ১০২ নং আয়াত পড়ে পানিতে ফুঁ দিবে। রোগীকে তা দ্বারা কিছুদিন গোসল ও পান করতে বলবে।আর যদি জ্বিন বলে যে, রোগী যাদুর বস্তুর উপর দিয়ে অতিক্রম করেছে অথবা তার কোন কিছু যেমন চুল, কাপড় দিয়ে যাদু করেছে তাহলে এমতাবাস্থায় ইতিপূর্বে উল্লেখিত আয়াতগুলি দ্বারা পানি পড়া থেকে কিছুদিন রোগী পান করবে এবং তা দিয়ে গোসল করে নিবে। গোসল বাথরুমে না করে বরং বাথরুমের বাইরে যে কোন জায়গায় করবে এভাবে ব্যাথা দূর না হওয়া পর্যন্ত করতে থাকবে।এরপর জ্বিনকে বলবে যে, সে যেন এই ব্যক্তিকে ছেড়ে চলে যায় আর ফিরে না আসার অঙ্গীকার করে। এরপর প্রায় এক সপ্তাহ পর রুগী দ্বিতীয়বার পড়বে। যদি অসুস্থ ব্যক্তি কোন কিছু অনুভব না করে। তবে বুঝতে হবে যে, যাদু ধ্বংস হয়ে গেছে। যদি রোগী আবারও বেহুশ হয়ে পড়ে তবে বুঝতে হবে যে, জ্বিন মিথ্যাবাদী এবং এখনও সে রোগী থেকে বের হয়ে যায়নি। ওকে বের না হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করবে নম্রতার সাথে। আর যদি এরপরও কথা অমান্য করে তবে মারবে এবং কুরআনের আয়াতসমূহ পড়বে। যদি রোগী বেহুশ না হয় এবং তার শরীরে কাপন শুরু হয় এবং তার নিঃশ্বাস ফুলতে থাকে তবে আয়াতুল কুরসীর ক্যাসেট রোগী প্রতিদিন তিনবার প্রতিবার এক ঘণ্টাব্যাপী শোনবে। এভাবে একমাস শুনবে তারপর পুনরায় সাক্ষাতে আসলে তাকে ঝাড়-ফুঁক দিবে। এবার ইনশাআল্লাহ আরোগ্য লাভ করবে।আর যদি আরোগ্য লাভ না হয় তবে সূরা সাফফাত, ইয়াসীন, দুখান, সূরা জ্বিন এসব সূরার রেকর্ডকৃত ক্যাসেট দিবে যাতে করে দিনে তিনবার তিন সপ্তাহ পর্যন্ত শুনবে। ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তায়ালা তাকে সুস্থ করে দিবেন। আর না হয় সময়সীমা বৃদ্ধি করতে হবে।দ্বিতীয় অবস্থাঝাড়-ফুঁকের সময় রোগী যদি কষ্ট অনুভব করে অথবা কাপতে থাকে, ঝাকুনি আসে অথবা মাথায় খুব বেশি ব্যাথা অনুভব করে বেহুশ না হয়, তবে এ অবস্থায় তিনবার করে শরয়ী ঝাড়-ফুক করবে। যদি রোগী বেহুশ হয়ে যায় তবে পূর্বে উল্লেখিত পদ্ধতি গ্রহণ করবে। আর যদি বেহুশ না হয় মাথা ব্যাথা ও কাপনি কমতে থাকে তবে কিছুদিন তাকে ঝাড়-ফুক করবে। ইনশাআল্লাহ শীঘ্রই সে আরোগ্য লাভ করবে। যদি সুস্থ না হয়, তবে নিম্নোক্ত পদ্ধতিগুলি গ্রহণ করবেঃ১. সূরা সাফফাত সম্পূর্ণ একবার এবং আয়াতুল কুরসী একাধিকবার রেকর্ড করবে। এরপর রোগীকে দিনে তিনবার শোনাবে।২. নামায জামাআতের সাথে আদায় করবে।৩. রোগী ফজর নামাযের পর নিম্নের এই দোয়া-لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌউচ্চারণঃ লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু, ওয়া‘হদাহু লা- শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল ‘হামদু, ওয়া হুআ ‘আলা- কুল্লি শাইয়্যিন ক্বাদীরঅর্থঃ আল্লাহ্‌ ছাড়া কোনো সত্য মাবুদ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই; রাজত্ব তাঁরই, সমস্ত প্রশংসাও তাঁর; আর তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান।একশত বার করে এক মাস পর্যন্ত পড়বে; কিন্তু একটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে, রোগীর কষ্ট ১০ অথবা ১৫ দিন পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে; কিন্তু ধীরে ধীরে কমতে থাকবে এবং মাসের শেষে সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে যাবে।এবার যখন পুনরায় ঝাড়-ফুক করবে তাতে রোগী কোন কষ্ট অনুভব করবে না। ইনশাআল্লাহ যাদু ধ্বংস হয়ে যাবে। এমনও হতে পারে যে, অসুস্থ রোগীর কষ্ট এক মাসেও লাঘব হয়নি। সাথে সাথে রোগীর উদ্বেগও থাকে। এ অবস্থায় যখন রোগী চিকিৎসকের কাছে আসবে তাকে তখন পূর্বের উল্লেখিত আয়াত ও সূরা সমূহ পড়ে ফুক দিবে। এরপর শীঘ্রই বেহুশ হয়ে যাবে। অতঃপর প্রথম অবস্থার পূর্বের পদ্ধতি গ্রহণ করবে।তৃতীয় অবস্থাযদি ঝাড়-ফুক করার সময় কোন পরিবর্তন পরিলক্ষিত না হয়; তবে তাকে পুনরায় তার লক্ষণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে হবে এরপর যদি অধিকাংশ লক্ষণই অবর্তমান হয়, তবে বুঝতে হবে সে যাদুগ্ৰস্ত বা অন্য কোন রোগী নয়। অবস্থা নিশ্চিত হবে, অতঃপর তিনবার করে ঝাড়-ফুক করবে এরপরও যদি লক্ষণ ফুটে না ওঠে আর বার বার ঝাড়-ফুক করা হয়; কিন্তু কিছুই অনুভব না করে, তবে এ অবস্থা খুবই কম। এমতাবস্থায় নিম্নোক্ত পদ্ধতি গ্রহণ করবেঃ১. সূরা ইয়াসীন, দুখান এবং সূরা জ্বিন ক্যাসেটে রেকর্ড করাবে এবং তা প্রত্যেক দিন তিনবার রোগীকে শোনানো হবে।২. বেশি বেশি তাওবা এ ইস্তেগফার করবে কমপক্ষে দিনে ১০০ বার অথবা বেশি।৩. প্রত্যেক দিন ১০০ বার অথবা এর থেকে বেশি (লা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ) পড়বে। এই পদ্ধতি একমাস পর্যন্ত করতে থাকবে।তারপর তার উপর ঝাড়-ফুক করবে এবং পূর্বের দুই অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে।
চিকিৎসার তৃতীয় স্তর হলো চিকিৎসা শেষের পরের স্তর
যদি আল্লাহ তায়ালা আপনার প্রচেষ্টায় রোগীকে সুস্থ করে দেন আর রোগী প্রশান্তি লাভ করে তাহলে আপনি আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করুন যিনি আপনাকে এই সুযোগ দান করেছেন। আর আল্লাহকে বেশি করে স্মরণ করতে হবে যেন আল্লাহ আপনাকে অন্যের জন্যও আরো তাওফীক প্রদান করেন। আর আপনার চিকিৎসায় এ সফলতা যেন আপনার সীমালজঘনও অহংকারের কারণ না হয়।আল্লাহ তায়ালা বলেনঃوَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكُمْ لَئِن شَكَرْتُمْ لَأَزِيدَنَّكُمْ ۖ وَلَئِن كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ ‎﴿٧﴾অর্থঃ আর যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় কর, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আযাব বড় কঠিন’। (সূরা ইবরাহীমঃ ৭)আর রোগী সুস্থ হওয়ার পরও আশঙ্কা মুক্ত নয়, কোথাও আবার কেউ দ্বিতীয়বার তার যাদু পুনরাবৃত্তি না করে। কেননা যারা যাদু করিয়েছে তারা যদি তার চিকিৎসকের নিকট গিয়ে সুস্থ হওয়ার বিষয় জানতে পারে তবে তারা দ্বিতীয়বার যাদুকরের নিকট গিয়ে যাদু করতে সচেষ্ট হবে। সুতরাং রোগী তার চিকিৎসকের নিকট যাওয়ার বিষয় গোপন রাখবে। আর রোগীর সুরক্ষার জন্যে নিম্নের নির্দেশাবলী তাকে প্রদান করুনঃ১. জামাতের সাথে নামায আদায় করা।২. গান-বাজনা শ্রবণ না করা।৩. ঘুমানোর পূর্বে ওযু করে নেয়া এবং আয়াতুল কুরসী তিলাওয়াত করা।৪. সব কাজ বিসমিল্লাহ বলে করা।৫. ফজরের নামাযের পর দৈনিক নিম্নের দোয়া ১০০ বার পড়া।لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌউচ্চারণঃ লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু, ওয়া‘হদাহু লা- শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল ‘হামদু, ওয়া হুআ ‘আলা- কুল্লি শাইয়্যিন ক্বাদীরঅর্থঃ আল্লাহ্‌ ছাড়া কোনো সত্য মাবুদ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই; রাজত্ব তাঁরই, সমস্ত প্রশংসাও তাঁর; আর তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান।৬. প্রত্যহ সামান্য হলেও কুরআনের তিলাওয়াত অবশ্যই করা। যদি কুরআন পড়তে না জানে তবে অন্য কারো থেকে অথবা ক্যাসেটে শুনবে। (কুরআন কারীমের শিক্ষা গ্রহণ করবে। কেননা মুসলমানদের জন্য তা অবশ্যই জরুরী।)৭. সৎলোকদের সংস্পর্শে ওঠা-বসা করবে।৮. সকাল-সন্ধ্যার মাসনুন দোয়াসমূহ পড়বে।

পরিচ্ছেদ: আসক্ত করার যাদু

৯৫

ভূমিকানবী (ﷺ) বলেনঃ “অবৈধ ঝাড়-ফুঁক, তাবিজ-কবজ ও “তিওয়ালা” (আসক্ত করা যাদু) নিশ্চয়ই শিরকের অন্তর্ভুক্ত।” (মুসনাদে আহমদঃ ১/৩৮১, আবু দাউদঃ ৩৮৮৩ ইত্যাদি আলবানী (রহঃ) সহীহ বলেছেন।)আল্লামা ইবনে আছীর (রাহেমাহুল্লাহ) বলেন, “তিওয়ালা” অর্থ হল এমন পন্থা অবলম্বন করা যার ফলে স্ত্রী স্বামীর নিকট যাদু বা অন্য কিছুর মাধ্যমে প্রিয় হয়ে যায়। যা নবী (ﷺ) শিরক বলে আখ্যায়িত করেছেন। কেননা তাদের বিশ্বাস হয় যে, এসব কিছু আল্লাহর নির্ধারিত তাকদীর ব্যতীতই এর মাধ্যমে তাদের মধ্যে এমনটি হয়ে গেল। (আন-নিহায়াঃ ১/২০০) আমি এ বিষয়টি স্পষ্ট করতে চাই যে, হাদীসে যে বিষয়ের ঝাড়ফুঁক নিষেধ এসেছে তা সেই সব ঝাড়ফুঁক যার দ্বারা জ্বিন শয়তান ও অন্য কিছুর সাহায্য নেয়া হয় ও যার মধ্যে শিরক আছে। তবে যেই ঝাড়ফুঁক কুরআন আর হাদীস থেকে হবে তা জায়েয তাতে কোন মতবিরোধ নেই। সহীহ মুসলিমে আছে, ঝাড়ফুঁকে কোন সমস্যা নেই যদি তাতে কোন শিরক না থাকে।
আসক্তকারী যাদুর লক্ষণসমূহ
১. অতিমাত্রায় আসক্ত হয়ে যাওয়া ও ভালোবাসা। ২. সর্বদায় সহবাস করতে চাওয়া। ৩. সহবাসের জন্য অধৈর্য হয়ে যাওয়া। ৪. স্ত্রীকে দেখার জন্যে অস্থির হয়ে যাওয়া। ৫. স্ত্রীর বশে ও তাবে’ হয়ে যাওয়া।
আসক্তকারী যাদু কিভাবে সংঘটিত হয়?
সাধারণত স্বামী-স্ত্রীর মাঝে মতবিরোধের সৃষ্টি হয়েই থাকে আবার তা স্বাভাবিক হয়ে যায়; কিন্তু কতক মহিলা অধৈর্য হয়ে যাদুকরের কাছে ছুটে যায় যাতে যাদুর মাধ্যমে ভালবাসা অধিক মাত্রায় আদায় করতে পারে। এর কারণ মহিলার দ্বীনদারীর অভাব ও তার অজ্ঞতা যে, এটি নিশ্চয়ই হারাম। যাদুকর মহিলার কাছে তার স্বামীর কোন কাপড় যেমনঃ রুমাল, টুপি, জামা, গেঞ্জি ইত্যাদি চায় যাতে তার ঘামের গন্ধ থাকে যা নতুন অথবা বোয়া নয়, বরং ব্যবহৃত। যাদুকর তা থেকে সূতা নেয় আর তাতে গিরা লাগিয়ে কিছু পড়ে ফুঁ দেয়।এরপর সেই মহিলাকে বলে, এই সূতাগুলো নির্জন স্থানে পুঁতে রাখার জন্যে অথবা খাদ্য দ্রব্যে অথবা পানিতে যাদুর ফুঁ দিয়ে দেয়। এই যাদুর নিকৃষ্ট পদ্ধতি হল, অপবিত্র জ্বীনিষ দ্বারা যাদু করা। যেমনঃ হায়েযের রক্ত দিয়ে যাদু করা। অতঃপর সেই মহিলাকে বলা হয়, তা তার স্বামীকে খাইয়ে দিবে বা তার আতর সুগন্ধির সাথে মিশিয়ে দেবে।
আসক্তকারী যাদুর বিপরীত প্রভাব
১. কখনো যাদুর দ্বারা স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমি এমন ব্যক্তি সম্পর্কে জানি, যে তিন বছর এই প্রকার যাদুর প্রভাবে অসুস্থ ছিল।২. কখনো আবার ভালবাসার পরিবর্তে ঘৃণা সৃষ্টি হতে থাকে। আর এটা এজন্য যে, কিছু যাদুকর যাদুর মৌলিক বিষয়ে জ্ঞান রাখে না।৩. কখনো স্ত্রী তার স্বামীর জন্য এমন যাদু করে বসে যে, তার স্বামী যেন সব মহিলাকে ঘৃণা করে কেবল তাকেই ভালবাসে। যার ফলে সেই ব্যক্তি নিজের মা-বোন এবং তার আত্মীয় মহিলাদের ঘৃণা করতে থাকে।৪. কখনও তার দ্বিমূখী যাদুর ক্রিয়া উল্টে গিয়ে স্বামী সকল মহিলাকে ঘৃণার সাথে স্ত্রীকেও ঘৃণা করা শুরু করে। এমন খবরও পেয়েছি যে, স্বামী স্ত্রীকে ঘৃণা করে তালাক দিয়ে দেয়। আর স্ত্রী দ্বিতীয়বার দৌড়ে যাদুকরের কাছে যায় যাতে যাদুর প্রভাব নষ্ট করে দেয়; কিন্তু ঘটনাক্রমে যাদুকর তার পৌঁছার আগেই মারা গেছে।
আসক্তকারী যাদু করার কারণসমূহ
১. স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের মাঝে মতভেদ।২. স্বামীর ধনের প্রতি স্ত্রীর লোভ, বিশেষ করে যদি স্বামী ধনী হয়ে থাকে।৩. স্ত্রীর ধারণা যে, স্বামী হয়ত অন্য বিবাহ করবে, অথচ শরীয়তে তা জায়েয, তাতে কোন দোষ নেই; কিন্তু বর্তমান যুগের মহিলা বিশেষ করে ধ্বংসাত্মক মিডিয়া প্রভাবিত মহিলারা ধারণা করে থাকে যে, তাদের স্বামী অন্য বিবাহ করার অর্থ হলো সে তাকে ভালোবাসে না। এটি একটি মারাত্মক ভুল। কেননা এমন অনেক কারণ রয়েছে যার ফলে পুরুষ এক, দুই, তিন ও চার পর্যন্ত বিবাহ করে।অথচ দেখা যায় সে তার প্রথম স্ত্রীকেই বেশি ভালোবাসে। যেমনঃ কেউ অধিক সন্তান লাভের জন্য বা কেউ স্ত্রীর ঋতুস্রাব ও সন্তান প্রসবোত্তর স্রাবের সময় সহবাস না করে ধৈর্য ধরতে পারে বা কেউ কোন বিশেষ পরিবারের সাথে সম্পর্ক গড়তে চায় বা আরো অনেক কারণ থাকতে পারে।
স্বামীকে আসক্ত করার হালাল যাদু
এটা এমন এক বিষয় যা আমি ফরজ মনে করি মুসলিম রমনীদের জানানো। কথা হল যে, প্রত্যেক নারীই তার স্বামীর ভালবাসা পাওয়ার জন্যে বৈধ যাদু বা পন্থা অবলম্বন করতে পারে।যেমন স্ত্রী তার স্বামীর জন্যে নিজেকে সুসজ্জিত ও পরিপাটি করে রাখবে, স্বামীর সাথে মিষ্টি কথা বলবে, অনুরূপ ফুটন্ত মুচকি হাসি উত্তম ব্যবহার করবে। যাতে তার স্বামী এদিক সেদিক দৃষ্টি না দেয়; বরং নিজের স্ত্রীর দ্বারাই প্রভাবিত থাকে। এছাড়া স্বামীর সম্পদের হেফাযত করবে, তার সন্তানদের যত্ন নিবে। আল্লাহর অবাধ্যতায় ব্যতীত স্বামীকে মান্য করে চলবে; কিন্তু আজকের বিশ্বে দৃষ্টি দিলে সম্পূর্ণই এর বিপরীত দেখতে পাওয়া যায়।কোন মহিলা কোন অনুষ্ঠানে গেলে অথবা নিজের বান্ধবীদের সাক্ষাতে গেলে এমন ভাবে সাজ-গোছ করে ও গয়না পরে, যেন সে বাসর রাতের বধু। অতঃপর যখন সে সেখান হতে ফিরে আসে সম্পূর্ণরূপে খুলে স্বীয় স্থানে রেখে পরবর্তী অনুষ্ঠানের অপেক্ষায় থাকে অথচ তার স্বামী বেচারা যে তার জন্য এসব বস্ত্র ও গয়না ক্রয় করেছে সে বঞ্চিতই থেকে যায় তা উপভোগ করা হতে। সে তাকে গৃহে সেই পুরাতন পোশাকেই পায়, যা হতে পেঁয়াজ ও রসুন ও পার্কের দুর্গন্ধই বের হয়। নারী যদি জ্ঞান করে তবে সে অবশ্যই বুঝবে যে, নিশ্চয়ই তার স্বামীই তার সাজ-সজ্জা ও সৌন্দর্য উপভোগের অগ্রাধিকারী।সুতরাং তোমার স্বামী যখন কাজের জন্য বেরিয়ে যায়, তখন দ্রুত তুমি ঘরের কাজ-কর্ম সেরে গোসল করে, সৌন্দর্য ও সুসজ্জিত হয়ে তার অপেক্ষায় থাক। স্বামী কর্ম হতে ফিরলে তাকে মুচকি হাসি দিয়ে অভ্যার্থনা জানাও। সে যখন গৃহে প্রত্যাবর্তন করে তার সুন্দরী স্ত্রীকে সামনে পাবে, পানাহারও প্রস্তুত, ঘর পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন, তবে অবশ্যই তার ভালোবাসা তোমার প্রতি অনেক গুণে বেড়ে যাবে। আল্লাহর শপথ! এটিই তোমার জন্য বৈধ যাদু হিসেবে পাবে। বিশেষ করে তুমি যদি তোমার সৌন্দর্য গ্রহণের নিয়ত কর আল্লাহর হুকুমের অনুসরণ তারপর স্বামীর দৃষ্টিশক্তি অবনমিত করা। কেননা পরিতৃপ্ত কখনও খাদ্যের আগ্রহ রাখে না; বরং যে তা হতে বঞ্চিত সেই আগ্রহ রাখে। এ মূল্যবান কথাটির প্রতি একটু দৃষ্টি দিবে।
আসক্তকারী যাদুর চিকিৎসা
১. রোগীর জন্যে সেই সব আয়াত পড়তে হবে যা পূর্বে উল্লেখিত হয়েছে। তার মধ্যে সূরা বাকারার ১০২ না পড়ে বরং সূরা তাগাবুন-এর ১৪, ১৫ ও ১৬ নং আয়াত পড়বেঃيَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّ مِنْ أَزْوَاجِكُمْ وَأَوْلَادِكُمْ عَدُوًّا لَّكُمْ فَاحْذَرُوهُمْ ۚ وَإِن تَعْفُوا وَتَصْفَحُوا وَتَغْفِرُوا فَإِنَّ اللَّـهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ ﴿١٤﴾ إِنَّمَا أَمْوَالُكُمْ وَأَوْلَادُكُمْ فِتْنَةٌ ۚ وَاللَّـهُ عِندَهُ أَجْرٌ عَظِيمٌ ﴿١٥﴾ فَاتَّقُوا اللَّـهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ وَاسْمَعُوا وَأَطِيعُوا وَأَنفِقُوا خَيْرًا لِّأَنفُسِكُمْ ۗ وَمَن يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِ فَأُولَـٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ ﴿١٦﴾অর্থঃ "(১৪) হে মুমিনগণ, তোমাদের স্বামী-স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততিদের কেউ কেউ তোমাদের দুশমন। অতএব তোমরা তাদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন কর। আর যদি তোমরা মার্জনা কর, এড়িয়ে যাও এবং মাফ করে দাও তবে নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু। (১৫) তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তো কেবল পরীক্ষা বিশেষ। আর আল্লাহর নিকটই মহান প্রতিদান। (১৬) অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর, শ্রবণ কর, আনুগত্য কর এবং তোমাদের নিজদের কল্যাণে ব্যয় কর, আর যাদেরকে অন্তরের কার্পণ্য থেকে রক্ষা করা হয়, তারাই মূলত সফলকাম। (সূরা তাগাবুনঃ ১৪-১৬)২. এক্ষেত্রে রোগী সাধারণতঃ বেহুশ হবে না তবে পার্শ্বদেশ অবশ হয়ে আসবে। মাথা ব্যথা ও বুক ধড়ফড় অনুভব করবে অথবা সে বারবার বমি করবে অথবা পেটে চরম ব্যাথা করবে যদি বিশেষ করে যাদু পান করানো হয়। সুতরাং সে যদি পেটে ব্যাথা অনুভব করে অথবা বমি করতে চায় তবে নিম্নের আয়াতসমূহ পড়ে পানিতে ফুঁ দিবে আর সেই পানি নিজের। সামনেই রোগীকে পান করাবে। যদি পানি পান করার পর রোগীর কাল অথবা লাল বমি হয় তবে বুঝতে যে, যাদু শেষ হয়ে গেছে। আর না হয় এই পানি তিন সপ্তাহ অথবা এর বেশী পান করতে বলা হবে। যাতে যাদু শেষ হয়ে যায়।সেই আয়াত হল এইঃ১.فَلَمَّا أَلْقَوْا قَالَ مُوسَىٰ مَا جِئْتُم بِهِ السِّحْرُ ۖ إِنَّ اللَّـهَ سَيُبْطِلُهُ ۖ إِنَّ اللَّـهَ لَا يُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِينَ ﴿٨١﴾ وَيُحِقُّ اللَّـهُ الْحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُجْرِمُونَ ﴿٨٢﴾অর্থঃ (৮১) অতঃপর যখন তারা (তাদের রশি ও লাঠি) ফেলল, তখন মূসা বলল, ‘তোমরা যা আনলে, তা যাদু। নিশ্চয় আল্লাহ তা বাতিল করে দেবেন। নিশ্চয় আল্লাহ ফাসাদকারীদের আমল পরিশুদ্ধ করেন না’। (৮২) আর আল্লাহ তাঁর বাণীসমূহের মাধ্যমে সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেন, যদিও অপরাধীরা তা অপছন্দ করে। (সূরা ইউনুসঃ ৮১-৮২)২.وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنْ أَلْقِ عَصَاكَ ۖ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ ﴿١١٧﴾ فَوَقَعَ الْحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ ﴿١١٨﴾ فَغُلِبُوا هُنَالِكَ وَانقَلَبُوا صَاغِرِينَ ﴿١١٩﴾ وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِينَ ﴿١٢٠﴾ قَالُوا آمَنَّا بِرَبِّ الْعَالَمِينَ ﴿١٢١﴾ رَبِّ مُوسَىٰ وَهَارُونَ ﴿١٢٢﴾অর্থঃ (১১৭) আর আমি মূসার প্রতি ওহী পাঠালাম যে, ‘তুমি তোমার লাঠি ছেড়ে দাও’ তৎক্ষণাৎ সে গিলতে লাগল সেগুলিকে যে অলীক বস্তু তারা বানিয়েছিল। (১১৮) ফলে সত্য প্রকাশ হয়ে গেল এবং তারা যা কিছু করছিল তা বাতিল হয়ে গেল। (১১৯) তাই সেখানে তারা পরাজিত হল এবং লাঞ্ছিত হয়ে গেল। (১২০) আর যাদুকররা সিজদায় পড়ে গেল। (১২১) তারা বলল, ‘আমরা সকল সৃষ্টির রবের প্রতি ঈমান আনলাম, (১২২) মূসা ও হারূনের রবের প্রতি।’ (সূরা আরাফঃ ১১৭-১২২)৩.إِنَّمَا صَنَعُوا كَيْدُ سَاحِرٍ ۖ وَلَا يُفْلِحُ السَّاحِرُ حَيْثُ أَتَىٰঅর্থঃ ‘তারা যা করেছে, তাতো কেবল যাদুকরের কৌশল। আর যাদুকর যেখানেই আসুক না কেন, সে সফল হবে না’। (সূরা ত্বো-হাঃ ৬৯)৪.اللَّـهُ لَا إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ ۚ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ ۚ لَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۗ مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِندَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۚ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ ۖ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا ۚ وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ ﴿٢٥٥﴾অর্থঃ আল্লাহ! তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনি স্বাধীন ও নিত্য নতুন ধারক, সব কিছুর ধারক। তন্দ্রা ও নিদ্রা তাঁকে স্পর্শ করেনা। নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু রয়েছে সবই তাঁর। কে আছে এমন, যে তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর নিকট সুপারিশ করতে পারে? সম্মুখের অথবা পশ্চাতের সবই তিনি অবগত আছেন। একমাত্র তিনি যতটুকু ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত, তাঁর জ্ঞানের কিছুই তারা আয়ত্ত করতে পারেনা। তাঁর আসন আসমান ও যমীন ব্যাপী হয়ে আছে এবং এতদুভয়ের সংরক্ষণে তাঁকে বিব্রত হতে হয়না। তিনিই সর্বোচ্চ, মহীয়ান। (সূরা বাকরাঃ ২৫৫)আয়াতগুলি পানির উপর পড়ন তবে স্ত্রীর অগোচরে পড়তে হবে। কেননা সে জানতে পারলে পুনরায় সে যাদুর আশ্রয় নিবে।
আসক্তকারী যাদুর এক উদাহরণ
এক ব্যক্তি আমার কাছে এসে বলতে লাগল, প্রথম অবস্থায় আমি আমার স্ত্রীর সাথে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতাম। এখন জানি না কি হয়ে গেল স্ত্রী থেকে দূরে থাকতে পারি না। কাজের সময়ও তারই ধ্যান চলে আসে। কাজ শেষ হলে দ্রুত স্ত্রীর কাছে পৌঁছার জন্যে তৎপর থাকি। যদি মেহমানদের মাঝে বসে থাকি তবুও বার বার তাদেরকে রেখে স্ত্রীর কাছে চলে যাই। সব সময় আমি তার পিছনেই থাকি। বুঝে আসছে না আমার কি হয়ে গেল। তাকে ছাড়া আমি আর টিকতে পারছি না। সেই যেন আমাকে এখন পরিচালনা করছে। সে যদি রান্না ঘরে যায় আমি তার পিছে, সে যদি শয়ন কক্ষে যায় আমি তার পিছে পিছে, আমি তার পিছে পিছে সে যখন ঝার দেয়। জানি না আমার কি হয়ে গেছে। সে যখন কোন কিছুর আবদার করে সঙ্গে সঙ্গেই তা আমি পূরণ করে দেই।এসব কথা শোনার পর আমি উল্লেখিত আয়াত পড়ে পানিতে ফুঁ দিয়ে দিলাম আর তাকে দিয়ে বললাম, তিন সপ্তাহ পর্যন্ত পানি পান করবে এবং তা দিয়ে গোসল করবে। আর তিন সপ্তাহ পর আমার কাছে আসতে বললাম এবং সাবধান করলাম যে, তার স্ত্রী যেন জানতে না পারে। সে এমনটিই করল এবং সে বলল যে সে সুস্থ হয়ে যাচ্ছে তবে কিছু লক্ষণ এখনো আছে। আমি তার জন্য দ্বিতীয়বার সেই চিকিৎসাই করলাম। আলহামদুলিল্লাহ এসব আল্লাহ তায়ালার করুণা। আমার এর মধ্যে কোন কর্তৃত্ব নেই।

পরিচ্ছেদ: নজরবন্দী বা ভেল্কিবাজির যাদু

৯৬

ভূমিকাসূরা আ'রাফে আল্লাহ তা'আলা এরশাদ করেনঃقَالُوا يَا مُوسَىٰ إِمَّا أَن تُلْقِيَ وَإِمَّا أَن نَّكُونَ نَحْنُ الْمُلْقِينَ ﴿١١٥﴾ قَالَ أَلْقُوا ۖ فَلَمَّا أَلْقَوْا سَحَرُوا أَعْيُنَ النَّاسِ وَاسْتَرْهَبُوهُمْ وَجَاءُوا بِسِحْرٍ عَظِيمٍ ﴿١١٦﴾ ۞ وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنْ أَلْقِ عَصَاكَ ۖ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ ﴿١١٧﴾ فَوَقَعَ الْحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ ﴿١١٨﴾ فَغُلِبُوا هُنَالِكَ وَانقَلَبُوا صَاغِرِينَ ﴿١١٩﴾ وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِينَ ﴿١٢٠﴾ قَالُوا آمَنَّا بِرَبِّ الْعَالَمِينَ ﴿١٢١﴾ رَبِّ مُوسَىٰ وَهَارُونَ ﴿١٢٢﴾অর্থঃ (১১৫) তারা বলল, ‘হে মূসা, হয় তুমি নিক্ষেপ করবে, নয়তো আমরাই নিক্ষেপ করব।’ (১১৬) সে বলল, ‘তোমরা নিক্ষেপ কর।’ অতঃপর যখন তারা নিক্ষেপ করল তখন তারা লোকদের চোখে যাদু করল এবং তাদেরকে ভীত করে তুলল। তারা বড় যাদু প্রদর্শন করল। (১১৭) আর আমি মূসার প্রতি ওহী পাঠালাম যে, ‘তুমি তোমার লাঠি ছেড়ে দাও’ তৎক্ষণাৎ সে গিলতে লাগল সেগুলিকে যে অলীক বস্তু তারা বানিয়েছিল। (১১৮) ফলে সত্য প্রকাশ হয়ে গেল এবং তারা যা কিছু করছিল তা বাতিল হয়ে গেল। (১১৯) তাই সেখানে তারা পরাজিত হল এবং লাঞ্ছিত হয়ে গেল। (১২০) আর যাদুকররা সিজদায় পড়ে গেল। (১২১) তারা বলল, ‘আমরা সকল সৃষ্টির রবের প্রতি ঈমান আনলাম, (১২২) মূসা ও হারূনের রবের প্রতি।’ (সূরা আরাফঃ ১১৫-১২২)আর সূরা ত্বা-হায় আল্লাহ তায়ালা বলেনঃقَالُوا يَا مُوسَىٰ إِمَّا أَن تُلْقِيَ وَإِمَّا أَن نَّكُونَ أَوَّلَ مَنْ أَلْقَىٰ ﴿٦٥﴾ قَالَ بَلْ أَلْقُوا ۖ فَإِذَا حِبَالُهُمْ وَعِصِيُّهُمْ يُخَيَّلُ إِلَيْهِ مِن سِحْرِهِمْ أَنَّهَا تَسْعَىٰ ﴿٦٦﴾অর্থঃ (৬৫) তারা বলল, হে মূসা, হয় তুমি নিক্ষেপ কর, না হয় আমরাই প্রথমে নিক্ষেপ করি। (৬৬) মূসা বলল, ‘বরং তোমরাই নিক্ষেপ কর। অতঃপর তাদের যাদুর প্রভাবে মূসার কাছে মনে হল যেন তাদের রশি ও লাঠিগুলো ছুটোছুটি করছে। (সূরা ত্বা-হাঃ ৬৫-৬৬)
ভেল্কিবাজি যাদুর লক্ষণসমূহ
১. মানুষ কোন স্থিতিশীলবস্তুকে চলতে দেখতে পায়, আবার চলমানকে অচল জড় পদার্থের মত দেখতে পায়।২. বড় ধরণের বস্তুকে ছোট আর ছোটকে বড় দেখতে পায়।৩. একটি বস্তু অন্য কোন বস্তুতে রূপান্তরিত দেখা। যেমনঃ মূসা (আঃ)-এর সময়কালের যাদুর দ্বারা রশি আর লাঠিকে অজগর সাপের রূপে দেখতে পেয়েছিল।
ভেল্কিবাজি যাদু কিভাবে করা হয়?
যাদুকর সাধারণ বা সবার কাছে পরিচিত কোন বস্তু সামনে নিয়ে আসে। অতঃপর নিজে শিরকযুক্ত মন্ত্র পড়ে শয়তানের কাছে প্রার্থনা করে। অতঃপর শয়তানের সাহায্যে সেই বস্তুটি অন্য কোন রূপ দিয়ে দেখানো হয়। এমনি এক ঘটনা এক ব্যক্তি আমার কাছে বর্ণনা করেছে, এক যাদুকর লোকজনের সামনে ডিম রেখে খুব দ্রুত ঘুরায়। অন্য একটি ঘটনা বর্ণনা করল যে, যাদুকর দু’পাথরকে পরস্পর সংঘর্ষ করে দেখতে দেখা যায় দুই ছাগল লড়ে। এসবের উদ্দেশ্য হল মানুষকে অবাক করে তাদের থেকে অর্থ লুটিয়ে নেয়া।কখনও আবার যাদুকর এই প্রকার যাদুকে অন্য প্রকার যাদুর জন্যে কাজে লাগায়। যেমনঃ স্বামী-স্ত্রী বিচ্ছেদের যাদু দ্বারা সুন্দরী স্ত্রীকে কুৎসিত রূপে দেখতে পায় তার স্বামী। আর আসক্তকারী যাদুতে কুৎসিত স্ত্রী সুন্দরীরূপে দেখতে পায় তার স্বামী। আর এ প্রকার যাদু অন্য প্রকারগুলি হতে ভিন্ন যাকে ভেল্কিবাজি বলা হয়। আর সাধারণত হাতের ম্যার-প্যাচের উপর নির্ভর করে।
ভেল্কিবাজির যাদুকে নষ্ট করার পদ্ধতি
এই যাদুকে প্রত্যেক এমন নেক কাজ দ্বারা ভঙ্গ করা যায়, যার দ্বারা শয়তানকে তাড়ানো হয়। যেমনঃ১. আযান, ২. আয়াতুল কুরসী, ৩. শয়তান বিতাড়িতকারী দোয়া-দরূদ ও ৪. বিসমিল্লাহ বলা। তবে এসব কিছু ওযু অবস্থায় করতে হবে।ভেল্কিবাজি যাদুর ক্ষেত্রে উক্ত ব্যবস্থা নেয়ার পরও যদি তা নষ্ট না হয়, তবে বুঝতে হবে ভেল্কিবাজ তার হাতের কারসাজিকেই কাজে লাগিয়েছে, সে আসলে যাদুকর নয়।
ভেল্কিবাজি যাদুর একটি বাস্তব দৃষ্টান্ত ও তার প্রতিকার
এক যাদুকরের কুরআনকে ঘুরানোঃমিশরের এক যাদুকর কুরআন ঘুরিয়ে তার তেলেসমাতি জাহের করত লোকজনের সামনে। কুরআনে এক সূতা বেঁধে সেটাকে চাবির সাথে বেঁধে দিত এরপর কুরআন উপরে উঠিয়ে লটকিয়ে রেখে কিছু মন্ত্র পড়ে কুরআনকে বলত ডানে ঘুর আর কুরআন ডানে ভন ভন করে ঘুরত, বামে ঘুরতে বললে বামে ঘুরত। এভাবে মানুষ ফিতনায় পড়ে যাওয়ার উপক্রম কেননা কুরআনের সাথে এ যাদু। আমি যাদুকরকে চ্যালেঞ্জ করে বললাম আমার সামনে যাদু দেখাতে পারবে না। লোকজন আমার কথা শুনে অবাক হল। আমার সাথে এক যুবক ছিল তাকে অন্য প্রান্তে বসতে বললাম। আমি আমার সাথীকে বললাম বার বার আয়াতুল কুরসী পড়তে থাক।এবার সে আয়াতুল কুরসী পড়তে লাগল। আর আমিও অন্য প্রান্তে আয়াতুল কুরসী পড়তে লাগলাম। অন্যদিকে যাদুকর তার যাদুমন্ত্র শেষ করে কুরআনকে বলল যে, ডান দিকে ঘুর এবার আর ঘুরছে না। দ্বিতীয়বার সে তার যাদুমন্ত্র পড়ে বলল বামে ঘুর; কিন্তু তার যাদু বিফলে গেল। কুরআন নিজ স্থানে অবস্থান করছে। এভাবে আল্লাহ তায়ালা যাদুকরকে লোক সমাগমের সম্মুখে অপদস্ত করেছেন।وَلَيَنصُرَنَّ اللَّـهُ مَن يَنصُرُهُঅর্থঃ “নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা তাকেই সাহায্য করে যে, আল্লাহর আনুগত্য করে।” (সূরা হজ্জঃ ৪০)

পরিচ্ছেদ: পাগল করা যাদু

৯৭

ভূমিকাখারেজা বিনতে সালত তার চাচা থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি নবী (ﷺ)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করলেন। ইসলাম গ্রহণ করার পর তিনি তার নিকট হতে ফিরে আসছিলেন। পথিমধ্যে তিনি এক গোত্রের নিকট দিয়ে অতিক্রম করছিলেন এমন সময় তিনি দেখতে পান যে, এক পাগল জিঞ্জিরে আবদ্ধ রয়েছে। তার সাথের লোকজন বললঃ আমরা খবর পেয়েছি, আপনাদের সেই মহান সাথী নাকি এক মহান কল্যাণসহ আর্বিভূত হয়েছেন। সুতরাং আপনাদের নিকট এমন কিছু কি আছে যা দ্বারা এ পাগলকে চিকিৎসা করতে পারেন? অতঃপর আমি সূরা ফাতিহা পড়ে তাকে ঝাড়-ফুঁক করলে সে সুস্থ হয়ে গেল। তারা আমাকে এর বিনিময়ে ১০০টি ছাগল দিল। আমি নবী (ﷺ)-এর খেদমতে উপস্থিত হয়ে পূর্ণ ঘটনা বর্ণনা করলাম। বললেন তুমি কি সূরা ফাতিহা ছাড়া অন্য কিছুও পড়েছিলে? আমি বললামঃ না। অতঃপর নবী (ﷺ) বললেনঃ আল্লাহর শপথ! কত কত মানুষ ভ্রান্ত ঝাড়-ফুঁকের দ্বারা কামাই করে খায়; আর তুমি তা সঠিক ঝাড়ফুঁকে অর্জন করেছ।” অন্য এক রেওয়ায়েতে আছে যে, সেই সাহাবী সূরা ফাতেহা পড়ে তিন দিন সকাল সন্ধ্যা ঝাড়ফুঁক করেন। যখনই সূরা ফাতেহা পড়া শেষ করতেন মুখের থুতু জমা করে রোগীর উপর নিক্ষেপ করতেন। (আবু দাউদঃ ত্বিবঃ ১৯, ইমাম নববী সহীহ বলেছেন এবং শায়খ আলবানীও।)
পাগল করা যাদুর লক্ষণসমূহ
১. অস্থিরতা, দিশাহারা ও ভুল-ভ্রান্তি বেশি হওয়া। ২. কথা-বার্তায় সামঞ্জস্যহীনতা। ৩. চোখের অবস্থা পরিবর্তন হওয়া এবং অসুন্দর হওয়া। ৪. কোন এক স্থানে স্ত্রী না থাকা। ৫. কোন এক কর্মে স্থীর না থাকা। ৬. নিজে পরিপাটি থাকায় উদাসীনতা।৭. আর যে সময় তা চূড়ান্তরূপ ধারণ করে সেই রোগী অজানা পথে চলতে থাকে। আর কখনও কখনও নির্জন স্থানে শুয়ে যায়।
পাগল করা যাদু কিভাবে করা হয়?
যেই জ্বিনের উপর এই যাদুর কাজ অর্পিত হয় (যাদুকরের নির্দেশ অনুযায়ী) সেই জ্বিন রোগীর মস্তিষ্কে অবস্থান করে তার স্মরণশক্তি ও চালিকা শক্তির উপর এমনভাবে চাপ সৃষ্টি করে ও কন্ট্রোল করে যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। যার ফলে পাগলের অবস্থায় পতিত হয়।
পাগল করা যাদুর চিকিৎসা
১. ইতিপূর্বে উল্লেখিত আয়াতগুলি পড়তে হবে।২. যখন রোগী বেহুশ হয়ে যাবে, তখন তার সাথে সেই পদ্ধতিই গ্রহণ করতে হবে যেমন পূর্বে বর্ণনা করা হয়েছে।৩. আর যদি রোগী বেহুশ না হয় তবে উল্লেখিত পন্থায় তিন বার অথবা এরও অধিকবার ঝাড়ফুঁক করতে হবে। এরপরও যদি বেহুশ না হয় তবে সেই সব সূরাকে কোন ক্যাসেটে রেকর্ড করে তাকে প্রতিদিন দুই অথবা তিনবার এক মাস পর্যন্ত শুনাতে হবেঃ ঝাড়-ফুঁকের আয়াতসমূহও সূরাগুলি হলোঃসূরা বাকারা, হুদ, হিজর, সাফফাত, কাফ, আর রহমান, মূলক, জ্বিন, আ’লা, যিলযাল, হুমাযা, কাফিরুন, ফালাক, ও সূরা নাস দেখা যাবে এসব সূরা শুনার ফলে রোগীর অন্তরে ধড়ফড় শুরু করবে এমনকি রোগী আয়াত শুনতে শুনতে বেহুশ হয়ে যেতে পারে। এরপর জ্বিন কথা বলতে থাকবে আর কখনও কষ্ট বৃদ্ধি পেয়ে পনের দিনের অধিকও থাকতে পারে। অতঃপর ধীরে ধীরে কমতে কমতে মাসের শেষে একেবারেই শেষ হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় রোগীকে আয়াতগুলো তার উপর স্বাভাবিকতা আসার জন্য পড়তে থাকতে হবে।৪. চিকিৎসাকালীন সময়ে রোগীকে ব্যাথা কমের কোন ঔষধ ব্যহার করতে দেয়া যাবে না। কেননা এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খারাপ হতে পারে।৫. চিকিৎসাকালীন সময়ে বিদ্যুতের ঝটকা দেয়া যেতে পারে। কেননা তাতে যেমন দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করতে পারে তেমনি জ্বীনের জন্যও বেশি কষ্টের কারণ হয়ে থাকে।৬. এমনও হতে পারে যে, আপনি এক মাসের সময় থেকে কম নির্ধারণ করতে পারেন। অথবা তিন মাস অথবা এর অধিকও হতে পারে।৭. চিকিৎসার সময়কালে এটাও খেয়াল রাখতে হবে যে, রোগী যেন কোন সাগীরা ও কাবীরা গোনাহ যেন না করে। যেমনঃ গান-শোনা ধুমপান, অথবা নামায না পড়া ইত্যাদি। আর যদি মহিলা হয় তবে বেপর্দা যাতে না থাকে।৮. যদি রোগীর পেটে ব্যাথা হয় তবে বুঝতে হবে যে, রোগীকে যাদু করা বস্তু পান করানো হয়েছে অথবা খাওয়ানো হয়েছে। আপনি তখন উল্লেখিত আয়াত তিলাওয়াত করে পানিতে ফুঁ দিয়ে রোগীকে সুস্থ হওয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত পান করাবেন, যাতে যাদুর প্রতিক্রিয়া নিঃশেষ হয়ে যায়। অথবা রোগী বমি করে দেয়।
পাগল করা যাদুর কতিপয় উদাহরণ
প্রথম উদাহরণঃকিছু লোক এক ব্যক্তিকে জিঞ্জিরে বেঁধে আমার কাছে নিয়ে আসল সে আমাকে দেখামাত্র যারা তাকে বন্দি করে নিয়ে আসছিল তাদেরকে এমন জোরে লাথ মারল যে, তারা অনেক দূরে গিয়ে পড়ল। এরপর তাদের সবাই মিলে তাকে বশে এনে মাটিতে ফেলে দেয়। এরপর আমি কুরআন পড়ে ঝাড়তে লাগলাম এরই মধ্যে সে আমার চেহারায় থুতু দিতে লাগল। এরপর আমি কতক ক্যাসেট ৪৫ দিন পর্যন্ত শুনতে দিলাম আর ৪৫ দিন পর আমার কাছে আসতে বললাম। আর যখন তারা পুনরায় রোগীকে নিয়ে আসল তখন চেতনা ও অনুভূতি রোগীর মধ্যে ছিল। আর প্রথমবার যেই বেআদবী করেছিল তাতে সে লজ্জিত ছিল, কেননা সে তখন পাগল অবস্থায় ছিল। আর এখন সেই কুরআনে কারীমের তেলাওয়াত করে তাকে কোন দূর্ঘটনা পরিলক্ষিত হয়নি। অতঃপর সে পূর্ণ সুস্থ হয়ে ফেরত চলে গেল। আর সে আমাকে জিজ্ঞাসা করল আমাকে আল্লাহ সুস্থ করে দেয়ায় কোন দান খয়রাত দিতে হবে কি না? অথবা রোযা রাখা জরুরী কিনা? আমি উত্তরে বললাম তা তোমার জন্যে ওয়াজিব নয় তবে যদি তুমি সাদকা কর তবে তা উত্তম।দ্বিতীয় উদাহরণঃএকদিন আমার কাছে এক এমন যুবক আসল সে যে পাগল তাতে কোন সন্দেহ নেই।যখনই আমি কুরআন পড়তে লাগলাম তখন বুঝা গেল যে, যাদুর দ্বারা তাকে পাগল করা হয়েছে, সে কয়েকদিন পর বিয়ে করতে যাচ্ছিল। অতঃপর আমি আরও আয়াত পড়ে তাকে ঝাড়লাম এবং কুরআনের ক্যাসেট এক মাস পর্যন্ত শুনতে বললাম। আর এরপর আসতে বললাম। প্রায় বিশ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর তার এক আত্মীয় সুসংবাদ দিল যে, সে পূর্ণ সুস্থ এবং সে বিয়েও করেছে। আলহামদুলিল্লাহ এই সব আল্লাহ তায়ালার দয়া ও কৃপার ফল।

পরিচ্ছেদ: একাকিত্ব ও নির্জনতা পছন্দের যাদু

৯৮

এই যাদুর লক্ষণসমূহ১. একাকিত্বকে পছন্দ করা। ২. সম্পূর্ণরূপে আলাদা থাকা। ৩. সর্বদায় চুপ থাকা। ৪. মানুষের সাথে সামাজিকতাকে ঘৃণা করা। ৫. অস্বস্থি মেজাজ। ৬. সব সময় মাথা ব্যাথা।
এই প্রকার যাদু যেভাবে করা হয়ে থাকে
যাদুকর জ্বিনকে সেই ব্যক্তির কাছে প্রেরণ করে যাকে যাদু করতে চায়। আর জ্বিনকে নির্দেশ দেয় যে, সে যেন ব্যক্তিটির মস্তিষ্ককে নিজ আয়ত্বে নিয়ে আসে। আর এ যাদুর প্রভাব এতোই বেশি হয় জ্বিন যত শক্তিশালী হয়।
এই প্রকার যাদুর চিকিৎসা
(ক) পূর্বের পদ্ধতিতে তাকে রুকিয়া করবে। আর যখন রোগী বেহুশ হয়ে যাবে তখন তাকে উত্তম কাজের নির্দেশ আর অন্যায়, অবিচার, পাপ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিবে। যেমনঃ পূর্বে বর্ণনা করা হয়েছে।(খ) আর যদি রোগী বেহুশ না হয় তবে কুরআনের ক্যাসেট তাকে শোনার জন্য দিবে যাতে থাকবে ১. সূরা ফাতেহা, ২. সূরা বাকারা ৩. আলে-ইমরান, ৪. সূরা ইয়াসীন, ৫. আস-সাফ্‌ফাত, ৬. আদ-দুখান, ৭. যারিয়াত, ৮. হাশর, ৯. মাআরেজ, ১০. গাশিয়া, ১১. যিলযাল, ১২. আলক্বারিয়া, ১৩. ফলাক ও ১৪. সূরা নাস।(গ) এই সমস্ত সূরাসমূহকে তিনটি ক্যাসেটে রেকর্ড করবে আর রোগীকে বলবে, এক ক্যাসেট সকালে ও দ্বিতীয়টি বিকালে ও অন্যটি ঘুমানোর সময় শুনবে। এভাবে ৪৫ দিন শুনবে বা মেয়াদ ৬০ দিন পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। উক্ত সময় অতিক্রম করলে আল্লাহর ইচ্ছায় সে আরোগ্য লাভ করবে।(ঘ) রোগী তার আরামের জন্যে কোন ঔষধ ব্যবহার করবে না।(ঙ) রোগী যদি পেটে ব্যাথা অনুভব করে তাহলে উল্লেখিত সূরা সমূহ পড়ে পানিতে ফুঁ দিয়ে রোগীকে উপরোক্ত মেয়াদ পর্যন্ত পান করতে দিবে।(চ) আর যদি রোগীর সর্বদায় পেটে ব্যাথা থাকে তবে সেই পানির দ্বারা প্রতি তিন দিন অন্তর অন্তর গোসল করবে তবে শর্ত হলো সে পানি বৃদ্ধি করে নিবে না বা গরম করবে না এবং পরিস্কার জায়গায় গোসল করবে।

পরিচ্ছেদ: অজানা আওয়াজ শুনতে পাওয়া

৯৯

এই যাদুর লক্ষণসমূহ১. ভীতিজনক স্বপ্ন দেখা।২. স্বপ্নে কাউকে ডাকতে দেখা।৩. জাগ্রত অবস্থায় আওয়াজ শোনা অথচ কাউকে দেখতে না পাওয়া।৪. ওয়াসওয়াসা বৃদ্ধি পাওয়া।৫. নিকটাত্মীয় ও বন্ধুদের সম্পর্কে অতিমাত্রায় সন্দেহ সৃষ্টি হওয়া।৬. স্বপ্নে উচু স্থান থেকে নিচে পড়ে যেতে দেখা।৭. স্বপ্নে ভয়ঙ্কর জন্তুকে দেখতে পাওয়া যা তাকে তাড়া করছে।
এই প্রকার যাদু যেভাবে করা হয়ে থাকে
যাদুকর কোন জ্বিনকে এই কাজের দায়িত্ব অর্পণ করে থাকে যে, অমুক ব্যক্তিকে নিদ্রা ও জাগ্রত অবস্থায় ভীতিজনক কিছু দেখাও, অতঃপর সেই জ্বিন নিদ্রা অবস্থায় স্বপ্নের মাধ্যমে ভয়ঙ্কর জম্ভর রূপ ধারণ করে ভীতি প্রদর্শন করে। আর কখনও জাগ্রত অবস্থায় ভীতিজনক আওয়াজে তাকে ডাকে। কখনও সেই কণ্ঠ পরিচিত মনে হয় কখনো অপরিচিত।এই যাদু দ্বারা আক্রান্ত হয়ে কখনও মানুষ পাগল হয়ে যায় আবার কখনও ওয়াসওয়াসা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকে প্রতিক্রিয়া যাদুর শক্তি অনুযায়ী কম বা বেশি হয়ে থাকে।
এই প্রকার যাদুর চিকিৎসা
১. পুস্তকে প্রাথমিক আলোচনায় যাদুর চিকিৎসার যেই পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে তা অবলম্বন করবে।২. বেহুশ হলে যেই পন্থা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে তা গ্রহণ করতে হবে।৩. যদি রোগী বেহুশ না হয় তবে চিকিৎসায় নিম্নের নির্দেশনা প্রদান করবেঃ(ক) ঘুমানোর পূর্বে ওযু, এবং আয়াতুল কুরসী পড়বে।(খ) রোগী দু’হাত প্রার্থণার মত উঠাবে এবং সূরা নাস, সূরা ফালাক ও সূরা ইখলাস পড়ে দু'হাতে ফুঁ দিবে এবং সমস্ত শরীর দু’হাতে স্পর্শ করবে এমনটি তিনবার করবে। (বুখারী ও মুসলিম)(গ) সকালে সূরা সাফফাত পড়বে আর সূরা দুখান রাতে ঘুমানোর সময় পড়বে অথবা কমপক্ষে এই দু'টি সূরা শুনবে।৪. তিন দিন অন্তর অন্তর সূরা বাকারা পড়বে অথবা শুনবে।৫. প্রত্যেকদিন সকাল-সন্ধ্যায় সাতবার নিম্নের দু’আ পড়বেঃفَإِن تَوَلَّوْا فَقُلْ حَسْبِيَ اللَّـهُ لَا إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ۖ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ ۖ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ ﴿١٢٩﴾অর্থঃ অতঃপর যদি তারা বিমুখ হয়, তবে বল, ‘আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই। আমি তাঁরই উপর তাওয়াক্কুল করেছি। আর তিনিই মহাআরশের রব’। (সূরা তাওবাঃ ১২৯)৬. প্রত্যেক দিন রাতে ঘুমানোর সময় সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়বে। (বুখারী ও মুসলিম)৭. শোয়ার সময় রোগী এই দোয়া পড়বেঃبِسْمِ اللّٰهِ وَضَعْتُ جَنْبِي، اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِي ذَنْبِي وَأَخْسِئْ شَيْطَانِي وَفُكَّ رِهَانِي، وَاجْعَلْنِي فِي النَّدِيِّ الْأَعْلَي৮. নিম্নের সূরাসমূহ ক্যাসেটে রেকর্ড করে রোগীকে প্রত্যহ তিন বার শুনাবেঃ সুরা ফুসসিলাত, সূরা ফাতাহ, সূরা জ্বিন।এভাবে এক মাস চালাবে ইনশাআল্লাহ রোগী সুস্থ হয়ে যাবে।

পরিচ্ছেদ: কাউকে যাদুর মাধ্যমে শারীরিকভাবে রোগী বানিয়ে দেয়া

১০০

এই যাদুর লক্ষণসমূহ১. শরীরের কোন অঙ্গে সর্বদায় ব্যাথা থাকা।২. শরীরে ঝাকুনি বা খিচুনী এসে বেহুশ হয়ে যাওয়া।৩. শরীরের কোন অঙ্গ অচল হয়ে যাওয়া।৪. সমস্ত শরীর নির্জীব হয়ে যাওয়া।৫. পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের কোন একটি কাজ না করা।এখানে একটি বিষয় স্পষ্ট করতে হয় যে, এই লক্ষণসমূহ সাধারণ রোগের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে, তবে এর পার্থক্য নির্ণয়ের জন্যে রোগীর উপর কুরআন পড়ে ঝাড়লে রোগী যদি কোনরূপ খিচুনী অনুভব করে অবশ হয়ে যায়, অথবা সে বেহুশ হয়ে পড়ে অথবা শরীরে কম্পন সৃষ্টি হয় অথবা মাথায় ব্যাথা অনুভব হয় তবে বুঝতে হবে যে, রোগীকে যাদু করা হয়েছে। আর এমনটি না হলে বুঝতে হবে যে এটা সাধারণ রোগ এর চিকিৎসা ডাক্তার দিয়ে করতে হবে।
এই যাদু কিভাবে হয়ে থাকে
এটা সবার কাছেই জানা যে, মানুষের মস্তিষ্ক সব অংশের মূল শরীর যে কোন অংশকে মস্তিষ্ক পরিচালনা করে এবং বিপদ আসলে বিপদ সংকেত দিয়ে অঙ্গকে রক্ষা করে। আর তা সেকেন্ডের কম সময়ের মধ্যেই হয়ে থাকে।فَأَرُونِي مَاذَا خَلَقَ الَّذِينَ مِن دُونِهِঅর্থঃ এ আল্লাহর সৃষ্টি; অতএব আমাকে দেখাও, তিনি ছাড়া আর যারা আছে তারা কী সৃষ্টি করেছে! (সূরা লোকমানঃ ১১)যখন মানুষ এই ধরণের যাদুতে আক্রান্ত হয় তখন জ্বিন লোকটির মস্তিস্ককে আয়ত্বে নিয়ে আসে। অতঃপর যাদুকর যে অঙ্গের সমস্যা করতে বলে সেই জ্বিন সেই অঙ্গের সমস্যাই করে। অতএব হয়ত জ্বিন মানুষের শ্রবণ শক্তি অথবা দৃষ্টিশক্তির কেন্দ্র বিন্দুতে প্রভাব বিস্তার করে অথবা মস্তিষ্কের সঙ্গে সম্পর্ক যে কোন অঙ্গে রগ যার সম্পর্ক অঙ্গে প্রভাবিত করে এমতাবস্থায় অঙ্গ তিনটি অবস্থায় পতিত হতে পারেঃএর তিন অবস্থাঃ১. হয়ত জ্বীন আল্লাহর পক্ষ হতে সাহায্যপ্রাপ্ত হয়ে কোন অঙ্গে চালিকা শক্তি একেকবার নিস্তেজ করে দেয় তখন সে অঙ্গ সম্পূর্ণরূপে অচল হয়ে যায় ফলে সে রোগী সম্পূর্ণরূপে অন্ধ অথবা শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলা।২. অথবা জ্বীন আল্লাহর শক্তির দ্বারাই কোন অঙ্গেও চালিকা শক্তি অচল করে আবার কখনো ছেড়ে দেয় যার ফলে সে অঙ্গ কখনো ঠিক হয়ে যায় আবার পুনরায় সে আক্রান্ত হয়ে যায়।৩. অথবা রোগীর মস্তিষ্কের চালিকা শক্তি বরাবর চলমান থাকা অবস্থায় তার কোন অঙ্গ ছিনিয়ে নেয় তখন আর নড়াচড়া থাকে না। যার জন্যে অঙ্গসমূহের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয় যদিও তা অবশ নয়। আর আল্লাহ তায়ালা যাদুকরদের সম্পর্কে বলেনঃوَمَا هُمْ بِضَارِّينَ بِهِ مِنْ أَحَدٍ إِلاَّ بِإِذْنِ اللّٰهِঅর্থঃ “আর তারা আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কাউকে ক্ষতি করতে পারবে না।” (সূরা বাকারাহঃ ১০২)এই আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, যাদুকর আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত কাউকে কোন ক্ষতি করতে পারবে না। তাই সমস্ত রোগ ব্যধি আল্লাহর ইচ্ছায় হয় এবং আল্লাহর ইচ্ছায় মুক্তি পায়। ঔষধ ব্যতীতও যে, ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে আল্লাহর ইচ্ছায় রোগমুক্তি হয়, অনেক ডাক্তারই তো মানতে চায় না। তবে বাস্তব প্রমাণ দেখার পর তারা মানতে বাধ্য হয়।এক ডাক্তার আমার কাছে এসে বলতে লাগল যে, আমি একটি ব্যাপারে এসেছি যা আমাকে আশ্চর্যান্বিত করে ফেলেছে। আমি বললাম কি সেই ব্যাপার? সে বললঃ এক ব্যক্তি আমার কাছে তার একটি ছেলে নিয়ে আসল যে পোলিও রোগে আক্রান্ত অর্থাৎ তার বাচ্চাটির শরীরের অচল অবস্থা হয়েছিল। যখন আমি চেক-আপ করে জানতে পারলাম যে, সে মেরুদন্ডজনিত এমন রোগে আক্রান্ত যার কোন চিকিৎসা নেই। অপারেশনও বিফল; কিন্তু কয়েক সপ্তাহ পর লোকটি আমার নিকট আসলে আমি তার সেই চার হাত পা অচল ছেলেটির ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে সে বলেঃ আলহামদুলিল্লাহ এখন সে বসে এমনকি দেয়ালের উপর দিয়ে চলে।আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, তুমি তোমার সন্তানকে কার নিকট হতে চিকিৎসা করেছ?উত্তরে সে বললঃ শায়খ ওহীদের কাছে।ডাঃ বললঃ তাই আমি আপনার কাছে বিষয়টি জানতে এসেছি যে, আপনি তার চিকিৎসা কিভাবে করেছেন? আমি সেই ডাক্তারকে বললাম, আমি কুরআনের আয়াত পড়েছি এবং কালো জিরার তেলের উপর ফুঁ দিয়ে অবশ অঙ্গগুলিতে মালিশ করতে বললাম। আল্লাহ তায়ালা সেই বান্দাকে সুস্থ করে দিয়েছেন। এসব আল্লাহর কৃপা আমার কাছে কিছুই নেই।
এই প্রকার যাদুর চিকিৎসা
১. যেমন আমি পূর্বে বর্ণনা করেছি অনুরূপ, রোগীর সামনে কোরআনের আয়াত তিনবার তেলাওয়াত করার পর রোগী বেহুশ হয়ে গেলে অনুরূপ পদ্ধতি অবলম্বন করে চিকিৎসা করতে হবে।২. আর যদি রোগী বেহুশ না হয় আর সামান্য লক্ষণ কেবল দেখা দেয় তবে নিম্নের পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবেঃ ক্যাসেটে সূরা ফাতেহা, আয়াতুল কুরসী, সূরা দুখান, সূরা জ্বিন এবং সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস ঘোট সূরা সমূহ সূরা বাইয়্যিনা থেকে সূরা নাস পর্যন্ত রেকর্ড করে রোগীকে দিবে। আর রোগী তা প্রত্যেকদিন তিনবার শুনবে।এছাড়া রোগীকে কালো জিরার তেলের সাথে নিম্নের দোয়া, আয়াত ও সূরাসমূহ পড়ে ফুঁ দিয়ে দিবে এবং গুরুত্বের সাথে রোগীর কপালে ও ব্যথিত স্থানে সকাল-সন্ধ্যা মালিশ করতে বলবে।সেই সব আয়াত ও সূরা এইঃ ১. সূরা ফাতেহা, ২. সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস৩. এই আয়াতটি সাতবার পড়বে।وَنُنَزِّلُ مِنَ ٱلۡقُرۡءَانِ مَا هُوَ شِفَاۤءࣱ وَرَحۡمَةࣱ لِّلۡمُؤۡمِنِینَঅর্থঃ “আর আমি কুরআন নাযিল করি যা মুমিনদের জন্য শিফা ও রহমত” (সুরা ১৭ঃ৮২)৪.بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ وَاللَّهُ يشْفِيْك مِنْ كُلِّ دَاءٍ يُؤْذِيكَ، وَمِنْ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عيْنِ حَاسِدٍ اللَّهُ يشْفِيْكউচ্চারণঃ বিসমিল্লাহি আরকীকা মিন কুল্লি শায়ইন ইউযিকা মিন শাররি কুল্লি নাফসিন আও আয়নিন আও হাসিদিন, আল্লাহু ইয়াশফীকা” অর্থঃ আমি আল্লাহর নামে এমন প্রতিটি জিনিস থেকে আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি যা আপনাকে কষ্ট দেয়, প্রতিটি সৃষ্টিজীবের এবং প্রতিটি চোখের এবং প্রতিটি হিংসুকের অনিষ্ট থেকে আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি। আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য দান করুন। [সহিহ (আলবানী) ইবনে মাজাহঃ ৩৫২৩]৫.اَللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ أَذْهِبِ الْبَأْسَ، اِشْفِ وَأَنْتَ الشَّافِي، لَا شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقَمًاউচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা রাব্বান না-স, আয্‌হিবিল বা-'স, ইশ্‌ফি, ওয়া আনতাশ শা-ফী, লা- শিফা-আ ইল্লা- শিফা-উকা, শিফা-আন লা- ইউগা-দিরু সাক্বামাঅর্থঃহে আল্লাহ্‌, হে মানুষের প্রতিপালক, অসুবিধা দূর করুন, সুস্থতা দান করুন, আপনিই শিফা বা সুস্থতা দানকারী, আপনার শিফা (সুস্থতা প্রদান বা রোগ নিরাময়) ছাড়া আর কোনো শিফা নেই, এমনভাবে শিফা দান করুন যার পরে আর কোনো অসুস্থতা-রোগব্যাধি অবশিষ্ট থাকবে না।এই আমল ষাট দিন পর্যন্ত করবে। সুস্থ হলে তো ভাল আর না হয় দ্বিতীয়বার উক্ত ঝাড়-ফুঁক করবে অতঃপর একই পদ্ধতি প্রদান করবে। দ্বিতীয়বারের মত অনুরূপভাবে যা তার অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজন সেভাবে পদ্ধতি গ্রহণ করবে।
এ ধরণের চিকিৎসার কতিপয় উদাহরণ
এক মাস ব্যাপী এক মেয়ে কথা বলে নাএক মেয়ে কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলে এক মাস থেকে। সে নিজের ভাই এবং বাবার সাথে আমার নিকট আসল। তারা বললেন, তার মুখ এমনভাবে বন্ধ হয়ে গেছে যে, খাওয়া-দাওয়ার জন্যেই তার মুখ জোর করে খুলতে হয়। তারা বললেন, এমন অবস্থা তার ৩৫ দিন ব্যাপী। তারপর ওর উপর যখন কুরআন পড়লাম আর সে তা শ্রবণ করে কথা বলা শুরু করল আলহামদুলিল্লাহ! অতঃপর সে বাকশক্তি ফিরে পেলো।জ্বিনে এক মহিলার পা ধরে রাখাঃএক মহিলা আমার কাছে এসে বলল, তার পায়ে অত্যান্ত ব্যাথা। আমি মনে করলাম যে, হয়তো তার পা কোন ব্যাধির কারণে এমন হয়েছে। কেননা সে একেবারেই পা উঠাতে পারছিল না।তবুও আমি ঝাড়ফুঁক শুরু করলাম। সেই মহিলা সূরা ফাতেহা শোনামাত্রই বেহুশ হয়ে গেল। আর জ্বিন কথা বলতে লাগল, সে বললঃ সে এই মহিলার পা ধরে রেখেছে। আমি তাকে বললাম, আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন করতে চাইলে এই মহিলার ভেতর থেকে বেরিয়ে যাও। আলহামদুলিল্লাহ সেই মহিলা থেকে জ্বিন বের হয়ে গেল। আর সে হাঁটা শুরু করল।এক ব্যক্তির চেহারা জ্বিন বাঁকা করে দিয়েছিলঃএকদিন এক ব্যক্তি আমার কাছে আসল যার চেহারা ডান দিক ঘুরানো ছিল। আমি যখন তাকে উক্ত ঝাড়ফুঁক করলাম তখন জ্বিন কথা বললঃ এই ব্যক্তি আমাকে কষ্ট দিয়েছে যার জন্যে আমি তার চেহারা ঘুরিয়ে দিয়েছি। অতঃপর আমি জ্বিনকে ওয়াজ নসীহত করলাম যার ফলে আলহামদুলিল্লাহ জ্বিন সেই ব্যক্তিকে ছেড়ে দিল। আর সেই ব্যক্তি সুস্থ হয়ে দাঁড়াল ও তার মুখমন্ডল ও সোজা হয়ে গেল। এমন এক মেয়ের ঘটনা যার চিকিৎসায় ডাক্তারও অপারগঃএকদিন এক ব্যক্তি এসে আমাকে বলল, তার মেয়ে হঠাৎ আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে বেহুশ হয়ে যায় এরপর দু'মাস পর্যন্ত কথা বলতে পারে না। শুধু এখন শুনতে পায়। খাবার খেতে পারে না, আর না সে তার শরীরের কোন অঙ্গ নড়া-চড়া করে। বর্তমানে সে সৌদি আরবের আবহা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ডাক্তারগণ বলেছেন তার জন্য সকল প্রকার চেষ্টা করা হয়েছে; এমন কি একজন ডাক্তার বলেন তার সব রিপোর্ট ভাল; কিন্তু বুঝে আসছে না এর মূল তথ্য ও রহস্য। এখন সে কঠিন মুহূর্তে সময় কাটছে। শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়ার জন্যে তার গলায় ছিদ্র করে দেয়া হয়েছে। আর নাক দিয়ে পাইপের মাধ্যমে তার পেটে খাবার দেয়া হয় যাতে বাকী জীবন এভাবে চলতে পারে।আমি চিকিৎসার জন্যে কারো কাছে যাই না; যদিও সে যে কেউ হোক; সে যেহেতু আমার এক প্রিয় বন্ধু এবং বড় আলেম শায়খ সাঈদ বিন মুসফির কাহতানীর মাধ্যম নিয়ে আমার কাছে এসেছিল এজন্যে বাধ্য হয়ে আমাকে সাথে যেতে হয়।হাসপাতালে প্রবেশের বিশেষ অনুমতি পাওয়ার পর উপরোক্ত মেয়ের চিকিৎসার জন্যে তার কাছে পৌছলাম। সেখানে দেখতে পেলাম যে, মেয়েটি বোবা হয়ে তার বিছানায় শুয়ে আছে। সে শুনতে ও দেখতে পায় মাত্র; কিন্তু বলতে পারে না, এক মাথা ছাড়া কোন কিছু নড়াতেও পারছে না এবং দুর্বল হয়ে এমন অবস্থায় পৌছেছে যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। আমি তাকে কিছু লক্ষণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে সে মাথায় না বোধক উত্তর দেয়। আমি বুঝতে পারলাম না তার কি হয়েছে এরপর আমি নামায পড়ার জন্যে মসজিদে গেলাম সেখানে নামায পড়ে তার সুস্থতার জন্যে আল্লাহর কাছে দু’আ করি এবং ফিরে এসে আমি তার মাথায় হাত রেখে সূরা ফালাক তেলাওয়াত করি এবং নিম্নে দু’আটি পড়িঃاَللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ أَذْهِبِ الْبَأْسَ اِشْفِ وَأَنْتَ الشَّافِيْ لَا شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقَمًاউচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা রাব্বান না-স, আয্‌হিবিল বা-'স, ইশ্‌ফি, ওয়া আনতাশ শা-ফী, লা- শিফা- আ ইল্লা- শিফা-উকা, শিফা-আন লা- ইউগা-দিরু সাক্বমা।অর্থঃ হে আল্লাহ, হে মানুষের প্রতিপালক, অসুবিধা দূর করুন, সুস্থতা দান করুন, আপনিই শিফা বা সুস্থতা দানকারী, আপনার শিফা (সুস্থতা প্রদান বা রোগ নিরাময়) ছাড়া আর কোনো শিফা নেই, এমনভাবে শিফা দান করুন যার পরে আর কোনো অসুস্থতা-রোগব্যাধি অবশিষ্ট থাকবে না। [বুখারীঃ ৫৭৪৩]অতঃপর মেয়েটি আল্লাহ তায়ালার করুণায় কথা বলতে লাগল। তার বাবা ও ভাই খুশিতে কেঁদে ফেলল। তার পিতা আমার মাথায় চুম্বন করতে চাইলে আমি তাকে বললাম যে, এতে আমার কোন কৃতিত্ব নেই। এসব আল্লাহ তায়ালার মেহেরবানী। এরপর মেয়েটি বলল যে, আমি হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরে যেতে চাই। অতঃপর তারা তাকে বাড়িতে নিয়ে গেল।জ্বিনের যাদুর স্থান দেখানোঃএক অসুস্থ যুবক আমার কাছে আসল। যখন আমি তার সামনে কুরআনের আয়াত তেলাওয়াত করলাম তখন তার ভীতরের জ্বিন কথা বলতে লাগলঃ সে যাদুর দায়িত্বপ্রাপ্ত তাকে অমুক ব্যক্তি যাদু করেছে। আর যাদুর জিনিস গুলো এক খুঁটির মধ্যে রাখা আছে। এরপর আমি জ্বিনকে বের হয়ে যেতে বললাম অতঃপর সে বের হয়ে গেল আলহামদুলিল্লাহ। আর রোগীর লোকজন খুঁটির নিচে কিছু ছিন্ন-ভিন্ন কাগজের টুকরা পেল যাতে কিছু কিছু অক্ষর লিখা আছে। তারা সেগুলো পানিতে নিক্ষেপ করে যাদুকে নিঃশেষ করলো। আলহামদুলিল্লাহ রোগী সুস্থ হয়ে গেল।

পরিচ্ছেদ: ইস্তেহাযা অর্থাৎ জরায়ু থেকে অনিয়মিত দীর্ঘ মেয়াদী স্রাবের যাদু

১০১

ভূমিকাএ প্রকার যাদুর মাধ্যমে কেবল মহিলারাই আক্রান্ত হয়ে থাকে। যে মহিলাকে স্রাব প্রবাহিত করিয়ে যাদু করা হয় যাদুকর সে মহিলার শরীরে জ্বিন প্রেরণ করে সেই জ্বিন তখন তার রগে রক্তে চলতে থাকে, যেমনঃনবী (ﷺ) বলেছেনঃ “শয়তান আদম সন্তানের ভেতরে রক্ত প্রবাহের ন্যায় প্রবাহিত হয়।” (বুখারী ও মুসলিম)জ্বিন যখন মহিলার জরায়ুর বিশেষ রগ পর্যন্ত পৌছে ওটাকে আঘাত করে; যার ফলে সেই রগ থেকে রক্ত প্রবাহিত হতে থাকে। নবী (ﷺ) হামনা বিনতে জাহাশের ইস্তেহাযা বিষয়ের প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন এটাতো শয়তানের একটি আঘাত মারার ফল। (হাদীসটি তিরমিযী বর্ণনা করেছেন এবং সহীহ) অন্য এক বর্ণনাতে আছে “এটা তো রগের রক্ত, হায়েযের নয়।” (নাসায়ী ও মুসনাদে আহমদ)উভয় বর্ণনা একত্রিত করলে বুঝা যায় যে, ইস্তেহাযা সেই সময়ই হয়ে থাকে যখন শয়তান মহিলার জরায়ুতে যে রগগুলো রয়েছে তার কোনটিতে যখন আঘাত হানে।
স্রাবের যাদু কি?
মুসলিম মনীষীগণ এই রক্তের নামকরণ করেছে ইস্তেহাযা আর ডাক্তারগণ তাদের পরিভাষায় বলেন জরায়ু স্রাব।আল্লামা ইবনে আসীর বলেন ইস্তেহাযা বলা হয় ঋতু স্রাবের নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত সময়ে রক্ত প্রবাহিত হলে। (নিহায়াঃ ১/৪৭৯) এর সময়সীমা কয়েকমাস পর্যন্ত হতে পারে। রক্তের পরিমাণ কখনও কম হয় কখনও বেশি।
স্রাবের যাদুর চিকিৎসা
উপরোক্ত ঝাড়ফুঁক পানিতে পড়ে সে পানি পান করবে ও তা দ্বারা গোসল করবে তিনদিন তা ব্যবহার করলে আল্লাহর হুকুমে স্রাব বন্ধ হয়ে যাবে। দীর্ঘ সময় পার হলেও যদি রক্ত প্রবাহ বন্ধ না হয় তবে “লিকুল্লি নাবায়্যিন মুসতাকৃর”(প্রত্যেক সংবাদের নির্ধারিত সময় রয়েছে) এই আয়াতকে পরিচ্ছন্ন কালির মাধ্যমে লিখে পানিতে গুলিয়ে রোগীকে দুই অথবা তিন সপ্তাহ পান করাবে। ইনশাআল্লাহ রোগ থেকে মুক্তি পাবে।
এই যাদুর চিকিৎসার এক বাস্তব উদাহরণ
এই রোগে আক্রান্ত এক মহিলা আমার কাছে আসল। অতঃপর আমি তাকে কুরআনের আয়াত পড়ে ঝাড়লাম এবং কুরআনের ক্যাসেট শুনার জন্যও দিলাম।আলহামদুলিল্লাহ সে কিছুদিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছে। আর কুরআনের আয়াত বৈধ কালি দ্বারা লিখিত আয়াতকে পানিতে মিশ্রিত করে সে পানি পান ও তা দ্বারা গোসলের বৈধতার শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) মত দিয়েছেন। (ফতোয়া ইবনে তাইমিয়াঃ ১৯/৬৪)

পরিচ্ছেদ: বিয়ে ভাঙ্গার যাদু

১০২

এই যাদুর লক্ষণসমূহ১. বিয়ের প্রস্তাবকারীকে খুব খারাপ মনে হওয়া। ২. সর্বদা মস্তিষ্কে অশান্তি বিরাজ করা। বিভিন্ন সময়ে মাথা ব্যাথা হওয়া যার চিকিৎসা কোন ঔষধে হয় না।৩. ঘুমের মধ্যে স্বস্তি না পাওয়া। ৪. পেটে সর্বদা ব্যাথা অনুভব করা। ৫. পিঠের নিম্নাংশের জোড়ে ব্যাথা অনুভব হওয়া।৬. মানুষিক অশান্তি বিশেষ করে আসরের পর থেকে অর্ধরাত পর্যন্ত।
এই যাদু কিভাবে করা হয় তার বর্ণনা
বিয়ের বিরোধী ও হিংসুক ব্যক্তি খবীস যাদুকরের কাছে গিয়ে আবদার করে যে, অমুকের মেয়েকে এমন যাদু কর যেন সে বিয়ে করতে অস্বীকার করে।যাদুকর তাকে বলে, এই কাজ সহজ তুমি শুধু সেই মেয়ের কোন বস্তু যেমনঃ চুল, কাপড় ইত্যাদি এনে দাও। আর তার ও তার মার নাম এনে দাও। এরপর কাজ সহজে হয়ে যাবে। যাদুকর এই কাজের জন্যে জ্বীন নির্ধারণ করে। অতঃপর জ্বিন সেই মেয়ে অথবা ছেলের পিছু করতে থাকে। আর নিম্নের যে কোন এক অবস্থায় পেলে তার মধ্যে প্রবেশ করেঃ১. ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থা। ২. অতি মাত্রায় রাগান্বিত অবস্থা।৩. অতি উদাসীন বা গাফিলতির অবস্থা। ৪. অতিমাত্রায় যৌন স্পৃহার অবস্থায়। এক্ষেত্রে জ্বিন দু’অবস্থার এক অবস্থা গ্রহণ করেঃ১. হয়ত মেয়ের মধ্যে প্রবেশ করে তার অন্তরে ঘৃণা জন্মায় ফলে যে ব্যক্তিই তাকে প্রস্তাব দেয় তা প্রত্যাখ্যান করে।২. মহিলার ভেতর প্রবেশ না করতে পারলে, সে ছেলের ভেতরে প্রবেশ করে তার অন্তরে ঘৃণা জন্মায় যে, পাত্রী অসুন্দর ও কুৎসিত। পরিণামে যে ব্যক্তিই সেই মেয়েকে প্রস্তাব দেয় বিনা কারণেই সে পরক্ষণেই প্রত্যাখ্যান করে যদিও প্রথমে সে সম্মত ছিল। আর তা শয়তানের কুমন্ত্রণার ফলেই, এরূপ অবস্থায় যাদুর প্রচন্ডতার কারণে পুরুষ প্রস্তাবের জন্য মহিলার বাড়িতে যাওয়ার পর হতেই অস্থিরতা বোধ করতঃ দ্রুত সেখান হতে বিদায় হয়ে যায় এর বিপরীতও হতে পারে।
এই ধরণের যাদুর চিকিৎসা
১. আপনি উল্লেখিত আয়াতসমূহ ও দোয়া পড়ে ঝাড়বেন। তবে যদি রোগী বেহুশ হয়ে পড়ে আর জ্বিন কথা বলতে থাকে তবুও সেই পূর্বের উল্লেখিত পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে।২. আর যদি রোগী বেহুশ না হয় আর শরীরে অন্য ধরণের পরিবর্তন অনুভব করে তবে তাকে নিম্নের নির্দেশনা মেনে চলার জন্যে বলতে হবেঃ১. সকল নামায সঠিক সময়ে পড়ার পাবন্দি থাকতে হবে। ২. গান-বাজনা থেকে বেঁচে চলতে হবে। ৩. শুয়ার পূর্বে অযূ করে আয়াতুল কুরসী পড়ে নিবে।৪. দু'হাত তুলে শুয়ার পূর্বে সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়ে হাতে ফুঁ দিয়ে সমস্ত শরীর স্পর্শ করবে (এমনটি তিনবার করবে)৫. আয়াতুল কুরসী এক ঘন্টার ক্যাসেটে বার বার রেকর্ড করে দৈনিক একবার শুনবে।৬. অন্য একটি এক ঘণ্টার ক্যাসেটে বার বার সূরা ফালাক, নাস ও ইখলাস রেকর্ড করে দৈনিক কমপক্ষে একবার শুনবে।৭. পূর্বে বর্ণিত কুরআনের আয়াতসমূহ ও দোয়া পড়ে পানিতে ফুঁ দিয়ে রোগীকে পান করতে বলবে এবং সেই পানি দিয়ে গোসল করাবে এই কাজটি তিন দিন করবে। আর গোসল কোন পবিত্র স্থানে করবে।৮. রোগী অবশ্যই ফজরের নামাযের পর দৈনিকلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ، وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌউচ্চারণঃ লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু, ওয়া‘হদাহু লা- শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল ‘হামদু, ওয়া হুআ ‘আলা- কুল্লি শাইয়্যিন ক্বাদীরঅর্থঃ আল্লাহ্‌ ছাড়া কোনো সত্য মাবুদ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই; রাজত্ব তাঁরই, সমস্ত প্রশংসাও তাঁর; আর তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান।একশবার পড়বে।৯. শরয়ী পর্দা মেনে চলবে। এই আমল এক মাস পর্যন্ত করবে। এরপর দু’টি অবস্থার একটি হবেঃইনশাআল্লাহ হয়ত সে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবে অথবা তার কষ্ট বৃদ্ধি পাবে এবং কুরআন পড়ে রোগীকে ঝাড়লে বেহুশ হয়ে যাবে। এমন অবস্থায় পূর্বের বর্ণিত পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে।

পরিচ্ছেদ: যৌন অক্ষমতার চিকিৎসা

১০৩

জাদুকর (আল্লাহ তাদের অভিশপ্ত করুক) সদ্য বিবাহিত দম্পত্তিকেও জাদুটোনার মাধ্যমে পরাভূত করে নির্বীয বা যৌন অক্ষম বানিয়ে দিতে পারে, যাতে করে সে তার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করতে না পারে। এ যৌন অক্ষমতা দুই ধরনেরঃ১. স্বামীর ক্ষেত্রে যৌন অক্ষমতা বা নির্বীযতা।২. স্ত্রীর ক্ষেত্রে কামশীতলতা।স্বামীকে নির্দিষ্ট কিছু প্রশ্ন করার মাধ্যমে এ সমস্যা নির্ণয় করা যেতে পারে। যৌন অক্ষমতার লক্ষণগুলো হল-উরুতে ব্যথা এবং মাথাব্যথাসহ মাথা ভারী মনে হওয়া এবং মেজাজে পরিবর্তন আসা। যৌন অক্ষমতার সমস্যা নির্ণয় হয়ে গেলে, চিকিৎসা খুবই সহজ ও সাধারণ। প্রথমে সাতটি লোটাস পাতা নিয়ে দুটি পাথর দিয়ে পিষতে হবে, অতঃপর এ মিশ্রণ বড়। এক পাত্র পানিতে মেশাতে হবে। অতঃপর সূরা ফাতিহা, এবং জাদুটোনা বাতিলকারক সূরা ইউনুস, আল-আ'রাফ, ত্ব-হা ও আল মুওয়াতাইন(ফালাক ও নাস) তেলাওয়াত করতে হবে।১. সূরা আল ফাতিহা: (১-৭)بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ ﴿١﴾ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ ﴿٢﴾ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ ﴿٣﴾ مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ ﴿٤﴾ إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ ﴿٥﴾ اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ ﴿٦﴾ صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ ﴿٧﴾অর্থঃ (১) পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে। (২) সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি সৃষ্টিকুলের রব। (৩) দয়াময়, পরম দয়ালু, পরম করুণাময়, অতি দয়ালু। (৪) বিচার দিবসের মালিক। (৫) আপনারই আমরা ইবাদাত করি এবং আপনারই নিকট আমরা সাহায্য চাই। (৬) আমাদেরকে সরল পথ দেখান। পথের হিদায়াত দিন। (৭) তাদের পথ, যাদের উপর আপনি অনুগ্রহ করেছেন। যাদেরকে নিয়ামত দিয়েছেন।যাদের উপর (আপনার) ক্রোধ আপতিত হয়নি এবং যারা পথভ্রষ্টও নয়।২. আয়াতুল কুরসী (বাকারা ২:২৫৫)اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ ۚ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ ۚ لَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۗ مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِندَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۚ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ ۖ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا ۚ وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ ﴿٢٥٥﴾অর্থঃ আল্লাহ! তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনি স্বাধীন ও নিত্য নতুন ধারক, সব কিছুর ধারক। তন্দ্রা ও নিদ্রা তাঁকে স্পর্শ করেনা। নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু রয়েছে সবই তাঁর। কে আছে এমন, যে তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর নিকট সুপারিশ করতে পারে? সম্মুখের অথবা পশ্চাতের সবই তিনি অবগত আছেন। একমাত্র তিনি যতটুকু ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত, তাঁর জ্ঞানের কিছুই তারা আয়ত্ত করতে পারেনা। তাঁর আসন আসমান ও যমীন ব্যাপী হয়ে আছে এবং এতদুভয়ের সংরক্ষণে তাঁকে বিব্রত হতে হয়না। তিনিই সর্বোচ্চ, মহীয়ান।৩. আল-আরাফ: (১১৭-১২২)وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنْ أَلْقِ عَصَاكَ ۖ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ ﴿١١٧﴾ فَوَقَعَ الْحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ ﴿١١٨﴾ فَغُلِبُوا هُنَالِكَ وَانقَلَبُوا صَاغِرِينَ ﴿١١٩﴾ وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِينَ ﴿١٢٠﴾ قَالُوا آمَنَّا بِرَبِّ الْعَالَمِينَ ﴿١٢١﴾ رَبِّ مُوسَىٰ وَهَارُونَ ﴿١٢٢﴾অর্থঃ (১১৭) আর আমি মূসার প্রতি ওহী পাঠালাম যে, ‘তুমি তোমার লাঠি ছেড়ে দাও’ তৎক্ষণাৎ সে গিলতে লাগল সেগুলিকে যে অলীক বস্তু তারা বানিয়েছিল। (১১৮) ফলে সত্য প্রকাশ হয়ে গেল এবং তারা যা কিছু করছিল তা বাতিল হয়ে গেল। (১১৯) তাই সেখানে তারা পরাজিত হল এবং লাঞ্ছিত হয়ে গেল। (১২০) আর যাদুকররা সিজদায় পড়ে গেল। (১২১) তারা বলল, ‘আমরা সকল সৃষ্টির রবের প্রতি ঈমান আনলাম, (১২২) মূসা ও হারূনের রবের প্রতি।’৪. সূরা-ইউনুস: (৮১-৮২)فَلَمَّا أَلْقَوْا قَالَ مُوسَىٰ مَا جِئْتُم بِهِ السِّحْرُ ۖ إِنَّ اللَّهَ سَيُبْطِلُهُ ۖ إِنَّ اللَّهَ لَا يُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِينَ ﴿٨١﴾ وَيُحِقُّ اللَّهُ الْحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُجْرِمُونَ ﴿٨٢﴾অর্থঃ (৮১) অতঃপর যখন তারা (তাদের রশি ও লাঠি) ফেলল, তখন মূসা বলল, ‘তোমরা যা আনলে, তা যাদু। নিশ্চয় আল্লাহ তা বাতিল করে দেবেন। নিশ্চয় আল্লাহ ফাসাদকারীদের আমল পরিশুদ্ধ করেন না’। (৮২) আর আল্লাহ তাঁর বাণীসমূহের মাধ্যমে সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেন, যদিও অপরাধীরা তা অপছন্দ করে।৫. সূরা ত্ব-হা: (২০:৬৯)وَأَلْقِ مَا فِي يَمِينِكَ تَلْقَفْ مَا صَنَعُوا ۖ إِنَّمَا صَنَعُوا كَيْدُ سَاحِرٍ ۖ وَلَا يُفْلِحُ السَّاحِرُ حَيْثُ أَتَىٰ ﴿٦٩﴾অর্থঃ ‘আর তোমার ডান হাতে যা আছে, তা ফেলে দাও। তারা যা করেছে, এটা সেগুলো গ্রাস করে ফেলবে। তারা যা করেছে, তাতো কেবল যাদুকরের কৌশল। আর যাদুকর যেখানেই আসুক না কেন, সে সফল হবে না’।৬. যেসব সূরাহ তেলাওয়াত করে আল্লাহর কাছে সুরক্ষার প্রার্থনা করা হয়-সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাসقُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ ﴿١﴾ اللَّهُ الصَّمَدُ ﴿٢﴾ لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ ﴿٣﴾ وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ ﴿٤﴾অর্থঃ (১) বল, তিনিই আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়। (২) আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী। (৩) তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি। (৪) আর তাঁর কোন সমকক্ষও নেই। (সূরা ইখলাস)قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ ﴿١﴾ مِن شَرِّ مَا خَلَقَ ﴿٢﴾ وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ ﴿٣﴾ وَمِن شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ ﴿٤﴾ وَمِن شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ ﴿٥﴾অর্থঃ (১) বল, ‘আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি ঊষার রবের কাছে, (২) তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে, (৩) আর রাতের অন্ধকারের অনিষ্ট থেকে যখন তা গভীর হয়, (৪) আর গিরায় ফুঁ-দানকারী নারীদের অনিষ্ট থেকে, (৫) আর হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে’। (সূরা ফালাক)قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ ﴿١﴾ مَلِكِ النَّاسِ ﴿٢﴾ إِلَٰهِ النَّاسِ ﴿٣﴾ مِن شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ ﴿٤﴾ الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ ﴿٥﴾ مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ ﴿٦﴾অর্থঃ (১) বল, ‘আমি আশ্রয় চাই মানুষের রব, (২) মানুষের অধিপতি, (৩) মানুষের ইলাহ-এর কাছে, (৪) কুমন্ত্রণাদাতার অনিষ্ট থেকে, যে দ্রুত আত্মগোপন করে। (৫) যে মানুষের মনে কুমন্ত্রণা দেয়। (৬) জিন ও মানুষ থেকে। (সূরা নাস)অতঃপর অক্ষম ব্যক্তি উপরোক্ত রুকিয়া পাঠ করা পানি তার শরীরে ঢালবেন এবং এর কিছু অংশ পান করবেন, আর বাকি অংশ দিয়ে টানা। সাতদিন গোসল করবেন। এছাড়া তিনি জলপাইয়ের তেলে উপরোক্ত রুকিয়া পাঠ করবেন এবং এ তেল তার শরীরে মালিশ করবেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রথম গোসল থেকেই যৌন অক্ষমতার সমস্যা নিরাময় লাভ করে।

পরিচ্ছেদ: গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা

১০৪

যিনি বিয়ে করতে ইচ্ছুক তিনি যিকির ও আল্লাহর রাসূল (ﷺ)-এর দেখানো পদ্ধতি অনুসারে আল্লাহর কাছে সুরক্ষা ও আশ্রয় প্রার্থনা করে নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন। যে ঘরে বসে বিয়ে পড়ানো হবে সেই ঘরে বসে তিনি সূরা বাকারা তেলাওয়াত করবেন, তবে গ্রামের অজ্ঞ লোকরা যা করে তিনি তা করবেন না। গ্রামের অজ্ঞ লোকরা যৌন অক্ষমতার জন্য জাদুকরের শরণাপন্ন হন, আর এ সুযোগে শয়তান ও বদ জ্বিনরা তার এবং তার স্ত্রীর ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে। তিনি যখন স্ত্রীর সঙ্গে যৌন মিলনের মাধ্যমে বিয়েকে আইনসিদ্ধ করবেন তখন নিম্নোক্ত কাজগুলো করবেন:১. তিনি তার স্ত্রীর কপালে হাত রাখবেন এবং এ দোয়া পাঠ করবেন:اَللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا وَخَيْرَ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَمِنْ شَرِّ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ اَللّٰهُمَّ بَارِكَ لِيْ فِيْهَاউচ্চারণঃ “আল্লা-হুম্মা, ইন্নী আসআলুকা খাইরাহা- ওয়া খাইরা মা- জাবালতাহা- ‘আলাইহি, ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিন শাররিহা- ওয়া মিন শাররি মা- জাবালতাহা- ‘আলাইহি। আল্লা-হুম্মা বা-রিক লি ফিহা-”অর্থঃ হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে কল্যাণ প্রার্থনা করছি, এমন কল্যাণ যা আপনি তার (স্ত্রীর) মাঝে দিয়েছেন এবং একইসঙ্গে আমি আপনার কাছে মন্দ প্রভাব থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি, এমন মন্দ যা তার মাঝে রয়েছে, হে আল্লাহ আপনি আমাকে বরকত দান করুন।২. তারা উভয়েই দু' রাকায়াত নফল সালাত আদায়ের মাধ্যমে তাদের এ নবজীবন শুরু করবেন, এবং আল্লাহর কাছে রহমত প্রার্থনা করবেন।৩. যখন তিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করবেন তখন নিম্নোক্ত দোয়া পাঠ করবেন:بِاسْمِ اللَّهِ اَللَّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ وَجَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَاউচ্চারণঃ বিসমিল্লা-হি, আল্লা-হুম্মা, জান্নিব্‌নাশ্‌ শাইত্বা-না ওয়া জান্নিবিশ শাইত্বা-না মা রাযাক্ক্‌তানা-অর্থঃ আল্লাহ্‌র নামে, হে আল্লাহ্‌, আমাদেরকে শয়তান থেকে দূরে রাখুন এবং আমাদের যা রিযক দিবেন তা থেকে শয়তানকে দূরে রাখুন।৪. তিনি নিয়মিত যিকির করবেন এবং আল্লাহর কাছে সুরক্ষা চেয়ে দোয়া করতে থাকবেন।

সেটিংস

বর্তমান ভাষা