পরিচ্ছেদ: বিচ্ছেদ ঘটানোর যাদু

৯৪

ভূমিকাআল্লাহ তায়ালা বলেনঃوَاتَّبَعُوا مَا تَتْلُو الشَّيَاطِينُ عَلَىٰ مُلْكِ سُلَيْمَانَ ۖ وَمَا كَفَرَ سُلَيْمَانُ وَلَـٰكِنَّ الشَّيَاطِينَ كَفَرُوا يُعَلِّمُونَ النَّاسَ السِّحْرَ وَمَا أُنزِلَ عَلَى الْمَلَكَيْنِ بِبَابِلَ هَارُوتَ وَمَارُوتَ ۚ وَمَا يُعَلِّمَانِ مِنْ أَحَدٍ حَتَّىٰ يَقُولَا إِنَّمَا نَحْنُ فِتْنَةٌ فَلَا تَكْفُرْ ۖ فَيَتَعَلَّمُونَ مِنْهُمَا مَا يُفَرِّقُونَ بِهِ بَيْنَ الْمَرْءِ وَزَوْجِهِ ۚ وَمَا هُم بِضَارِّينَ بِهِ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّـهِ ۚ وَيَتَعَلَّمُونَ مَا يَضُرُّهُمْ وَلَا يَنفَعُهُمْ ۚ وَلَقَدْ عَلِمُوا لَمَنِ اشْتَرَاهُ مَا لَهُ فِي الْآخِرَةِ مِنْ خَلَاقٍ ۚ وَلَبِئْسَ مَا شَرَوْا بِهِ أَنفُسَهُمْ ۚ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ ﴿١٠٢﴾অর্থঃ আর তারা অনুসরণ করেছে, যা শয়তানরা সুলাইমানের রাজত্বে পাঠ করত। আর সুলাইমান কুফরী করেনি; বরং শয়তানরা কুফরী করেছে। তারা মানুষকে যাদু শেখাত এবং (তারা অনুসরণ করেছে) যা নাযিল করা হয়েছিল বাবেলের দুই ফেরেশতা হারূত ও মারূতের উপর। আর তারা কাউকে শেখাত না যে পর্যন্ত না বলত যে, ‘আমরা তো পরীক্ষা, সুতরাং তোমরা কুফরী করো না। এরপরও তারা এদের কাছ থেকে শিখত, যার মাধ্যমে তারা পুরুষ ও তার স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাত। অথচ তারা তার মাধ্যমে কারো কোন ক্ষতি করতে পারত না আল্লাহর অনুমতি ছাড়া। আর তারা শিখত যা তাদের ক্ষতি করত, তাদের উপকার করত না এবং তারা অবশ্যই জানত যে, যে ব্যক্তি তা ক্রয় করবে, আখিরাতে তার কোন অংশ থাকবে না। আর তা নিশ্চিতরূপে কতই-না মন্দ, যার বিনিময়ে তারা নিজদেরকে বিক্রয় করেছে। যদি তারা জানত। (সূরা বাকারাঃ ১০২)জাবের (রাঃ) বলেন, নবী (ﷺ) এরশাদ করেন, ইবলীস তার আসন পানিতে (সমুদ্রে) রাখে। এবং সে তার বাহিনীকে অভিযানে প্রেরণ করে আর সর্বাপেক্ষা প্রিয় সেই শয়তান হয়, যে সবার থেকে বেশি ফেতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে। অভিযান শেষে সকলেই অভিযানের সফলতা সরদার শয়তানের কাছে পেশ করতে থাকে। অতঃপর সরদার বলে, তোমরা কেউ কোন বড় ধরনের কাজ করে আসতে পারনি। অতঃপর সরদারের কাছে এক ছোট শয়তান এসে বলে, আমি অমুক ব্যক্তিকে ততক্ষণ পর্যন্ত ত্যাগ করিনি যতক্ষণ না আমি তার ও তার স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ ঘটিয়েছি। এরপর রাসূল (ﷺ) বললেন, শয়তানের সরদার সেই ছোট শয়তানকে তার নিকটতম করে নেয় ও বলে, তুমি কতইনা উত্তম। অন্য এক বর্ণনায় আছে। যে, বড় শয়তান ছোট শয়তানের সাথে আলিঙ্গন করে। (মুসলিম)
এ প্রকার যাদুর পরিচয়
এটি যাদুর এমন এক কর্ম যা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ বা দু’বন্ধুর মাঝে বা দু’অংশীদারের মাঝে হিংসা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করে।বিচ্ছেদ ঘটানোর প্রকারভেদঃ১. মা ও সন্তানের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানো।২. পিতা ও সন্তানের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানো ৩. দু'ভাইয়ের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানো। ৪. বন্ধুদের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানো। ৫. ব্যবসায় শরীকদের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানো।৬. স্বামী ও স্ত্রীর বিচ্ছেদ ঘটানো। আর এই প্রকারটি সর্বাপেক্ষা ভয়ানক এবং তা বেশি প্রচলিত।
বিচ্ছেদের যাদুর আলামত
১. হঠাৎ ভালবাসা থেকে শত্রুতায় পরিণত হওয়া। ২. উভয়ের মাঝে অধিক সন্দেহ সৃষ্টি হওয়া। ৩. পরস্পর ক্ষমা না চাওয়া ও ক্ষমা না করা।৪. অতিমাত্রায় মতবিরোধ সৃষ্টি হওয়া যদিও তা সামান্য ব্যাপারকে কেন্দ্র করে।৫. স্ত্রীর সৌন্দর্য অসুন্দরে পরিণত হওয়া। যদিও সে খুবই সুন্দরী হোক স্বামীর কাছে নিকৃষ্ট মনে হওয়া। আর স্ত্রীর কাছে স্বামী নিকৃষ্ট উপলব্ধি হওয়া।৬. যাদুগ্রস্তের নিকট অপর জনের প্রত্যেক কর্মই অপছন্দ হওয়া।৭. যাদুগ্রস্ত অপর পক্ষের বসার স্থানকে অপছন্দ করা। যেমনঃ স্বামী গৃহের বাইরে খুব ভাল থাকে ঘরে প্রবেশ করলেই অন্তরে অতিসংকীর্ণতাবোধ করে। ইবনে কাসীর (রাহেমাহুল্লাহ) বলেনঃ স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছন্নতার যাদুর ফলে যাদুগ্রস্ত অপরজনকে কুদৃষ্টিতে দেখবে বা সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখবে বা এ ধরনের অন্যান্য বিচ্ছেদ সৃষ্টিকারী বিষয়ে পতিত হবে। (তাফসীর ইবনে কাসীরঃ ১/১৪৪)
দুই ব্যক্তির মাঝে বিচ্ছেদের জন্য যাদু যেভাবে করা হয়
যখন কোন ব্যক্তি যাদুকরের কাছে গিয়ে বলে যে, অমুক অমুক ব্যক্তির মাঝে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দিন। তখন যাদুকর তাকে সেই ব্যক্তির নাম ও তার মায়ের নাম জানাতে বলে। এছাড়া সেই ব্যক্তির কাপড়, টুপি, চুল ইত্যাদি নিয়ে আসতে বলে। আর যদি এসবগুলো পাওয়া সম্ভব না হয়, তবে সেই ব্যক্তির রাস্তায় যাদু করা পানি ঢেলে দেয়া হয় যে রাস্তায় উদ্দিষ্ট ব্যক্তি চলাফেরা করে। আর সেই পানি অতিক্রম করা মাত্রই যাদুর দ্বারা আক্রান্ত হয়ে যায়। অথবা এমনও করা হয় যে, খাদ্যদ্রব্য যাদু করে খেতে দেয়া হয়।
চিকিৎসা - প্রথম স্তরঃ চিকিৎসার পূর্বের স্তরঃ
এর চিকিৎসা তিনটি স্তরে করতে হবেঃপ্রথম স্তরঃ চিকিৎসার পূর্বের স্তরঃ১. সেই ঘরে ঈমানী পরিবেশ তৈরি করতে হবে। যেমনঃ সর্বপ্রথম সেই ঘরকে সকল প্রকার ছবি থেকে পবিত্র করতে হবে যেন ফেরেশতা প্রবেশ করতে পারে।২. সেই ঘরকে সকল প্রকার গান-বাজনা থেকে পবিত্র করতে হবে।৩. সেই ঘরের কেউ শরীয়তের বিধান অমান্য করবে না। যেমনঃ পুরুষ সোনা পরবে না আর মহিলা বেপর্দা থাকবে না এবং কোন ব্যক্তি ধুমপান করবে না।৪. অসুস্থ ব্যক্তির সাথে তাবীজ-কবচ, কড়ি বা এধরণের কিছু থাকলে তা খুলে জ্বালিয়ে দিবে।৫. পরিবারের সকলকেই বিশুদ্ধ আকীদায় বিশ্বাসী হিসেবে তৈরি করা। যেন সবাই এর জন্য আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো সাথে সম্পর্ক না রাখে।৬. অসুস্থ ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করা হবে তার অবস্থা নির্ণয় ও তার লক্ষণ বুঝার জন্য যেমনঃ তোমার স্ত্রীকে কি কখনও তোমার নিকট ঘৃণা লাগে? তোমাদের মাঝে কি সাধারণ ও সামান্য বিষয় নিয়ে বিবাদ সৃষ্টি হয়? তুমি কি ঘরের বাহিরে আনন্দ উপলব্ধি করো? আর যখনই ঘরে প্রবেশ করো তখনই কি সমস্যা অনুভব হয়? সহবাসের সময় কি কারে বিরক্ত বোধ হয়? ঘুমের মাঝে কি তাদের উভয়ের মধ্যে কেউ অস্থিরতা অনুভব বা ভীতিজনক স্বপ্ন দেখতে পায়?চিকিৎসক উপরোক্ত প্রশ্নাবলী থেকে দু'টি বা ততোধিক যদি সঠিক হয় তবে চিকিৎসা শুরু করবে।৭. চিকিৎসা আরম্ভ করার পূর্বে নিজে এবং সহযোগী উভয়েই ওযু করে নিবে।৮. অসুস্থ রোগী যদি মহিলা হয়ে থাকে, তবে পর্দা অবস্থায় না হলে চিকিৎসা করবে না।৯. কোন এমন মহিলার চিকিৎসা করবে না, যে শরীয়ত পরিপন্থী পোশাকে রয়েছে যেমনঃ মুখ খোলা, সুগন্ধি ব্যবহৃত অবস্থায় বা নখ বড় করে কাফের মহিলা সদৃশ রয়েছে।১০. মহিলার চিকিৎসা তার মাহরামের (একান্ত আপনজন) উপস্থিতিতে হতে হবে।১১. মাহরাম ব্যতীত অন্য পুরুষ তার সাথে থাকতে পারবে না।১২. সফলতার জন্যে নিজকে সকল কলুষতা ও অন্যের প্রতি সকল আস্থা থেকে মুক্ত রাখবে। আর একমাত্র আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করবে ও তার উপরেই আস্থা রাখবে।
চিকিৎসার দ্বিতীয় স্তরঃ দোয়া ও আয়াত
চিকিৎসক তার হাত রোগীর মাথায় রাখবে এবং তার কানের কাছে এই সব দোয়া ও আয়াত সতর্কতার সাথে এবং বিশুদ্ধ ও স্বজোরে পড়বে।১.بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ ‎﴿١﴾‏ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ ‎﴿٢﴾‏ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ ‎﴿٣﴾‏ مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ ‎﴿٤﴾‏ إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ ‎﴿٥﴾‏ اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ ‎﴿٦﴾‏ صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ ‎﴿٧﴾‏অর্থঃ (১) পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে। (২) সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি সৃষ্টিকুলের রব। (৩) দয়াময়, পরম দয়ালু, পরম করুণাময়, অতি দয়ালু। (৪) বিচার দিবসের মালিক। (৫) আপনারই আমরা ইবাদাত করি এবং আপনারই নিকট আমরা সাহায্য চাই। (৬) আমাদেরকে সরল পথ দেখান। পথের হিদায়াত দিন। (৭) তাদের পথ, যাদের উপর আপনি অনুগ্রহ করেছেন। যাদেরকে নিয়ামত দিয়েছেন।যাদের উপর (আপনার) ক্রোধ আপতিত হয়নি এবং যারা পথভ্রষ্টও নয়। (সূরা ফাতেহা)২.الم ‎﴿١﴾‏ ذَٰلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ ۛ فِيهِ ۛ هُدًى لِّلْمُتَّقِينَ ‎﴿٢﴾‏ الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالْغَيْبِ وَيُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ ‎﴿٣﴾‏ وَالَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنزِلَ مِن قَبْلِكَ وَبِالْآخِرَةِ هُمْ يُوقِنُونَ ‎﴿٤﴾‏ أُولَٰئِكَ عَلَىٰ هُدًى مِّن رَّبِّهِمْ ۖ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ ‎﴿٥﴾‏অর্থঃ (১) আলিফ-লাম-মীম। (২) এই সেই কিতাব, যাতে কোন সন্দেহ নেই, মুত্তাকীদের জন্য হিদায়াত। (৩) গায়েবের প্রতি ঈমান আনে, সালাত কায়েম করে এবং আমি তাদেরকে যে রিয্ক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে। (৪) আর যারা ঈমান আনে তাতে, যা তোমার প্রতি নাযিল করা হয়েছে এবং যা তোমার পূর্বে নাযিল করা হয়েছে। আর আখিরাতের প্রতি তারা ইয়াকীন রাখে। (৫) তারা তাদের রবের পক্ষ থেকে হিদায়াতের উপর রয়েছে এবং তারাই সফলকাম। (সূরা বাকরাঃ ১-৫)৩.وَاتَّبَعُوا مَا تَتْلُو الشَّيَاطِينُ عَلَىٰ مُلْكِ سُلَيْمَانَ ۖ وَمَا كَفَرَ سُلَيْمَانُ وَلَٰكِنَّ الشَّيَاطِينَ كَفَرُوا يُعَلِّمُونَ النَّاسَ السِّحْرَ وَمَا أُنزِلَ عَلَى الْمَلَكَيْنِ بِبَابِلَ هَارُوتَ وَمَارُوتَ ۚ وَمَا يُعَلِّمَانِ مِنْ أَحَدٍ حَتَّىٰ يَقُولَا إِنَّمَا نَحْنُ فِتْنَةٌ فَلَا تَكْفُرْ ۖ فَيَتَعَلَّمُونَ مِنْهُمَا مَا يُفَرِّقُونَ بِهِ بَيْنَ الْمَرْءِ وَزَوْجِهِ ۚ وَمَا هُم بِضَارِّينَ بِهِ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ ۚ وَيَتَعَلَّمُونَ مَا يَضُرُّهُمْ وَلَا يَنفَعُهُمْ ۚ وَلَقَدْ عَلِمُوا لَمَنِ اشْتَرَاهُ مَا لَهُ فِي الْآخِرَةِ مِنْ خَلَاقٍ ۚ وَلَبِئْسَ مَا شَرَوْا بِهِ أَنفُسَهُمْ ۚ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ ‎﴿١٠٢﴾অর্থঃ (১০২) আর তারা অনুসরণ করেছে, যা শয়তানরা সুলাইমানের রাজত্বে পাঠ করত। আর সুলাইমান কুফরী করেনি; বরং শয়তানরা কুফরী করেছে। তারা মানুষকে যাদু শেখাত এবং (তারা অনুসরণ করেছে) যা নাযিল করা হয়েছিল বাবেলের দুই ফেরেশতা হারূত ও মারূতের উপর। আর তারা কাউকে শেখাত না যে পর্যন্ত না বলত যে, ‘আমরা তো পরীক্ষা, সুতরাং তোমরা কুফরী করো না। এরপরও তারা এদের কাছ থেকে শিখত, যার মাধ্যমে তারা পুরুষ ও তার স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাত। অথচ তারা তার মাধ্যমে কারো কোন ক্ষতি করতে পারত না আল্লাহর অনুমতি ছাড়া। আর তারা শিখত যা তাদের ক্ষতি করত, তাদের উপকার করত না এবং তারা অবশ্যই জানত যে, যে ব্যক্তি তা ক্রয় করবে, আখিরাতে তার কোন অংশ থাকবে না। আর তা নিশ্চিতরূপে কতই-না মন্দ, যার বিনিময়ে তারা নিজদেরকে বিক্রয় করেছে। যদি তারা জানত। (সূরা বাকারাঃ ১০২) এ আয়াতটি বেশি বেশি পড়বে।৪.وَإِلَٰهُكُمْ إِلَٰهٌ وَاحِدٌ ۖ لَّا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الرَّحْمَٰنُ الرَّحِيمُ ‎﴿١٦٣﴾‏ إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَالْفُلْكِ الَّتِي تَجْرِي فِي الْبَحْرِ بِمَا يَنفَعُ النَّاسَ وَمَا أَنزَلَ اللَّهُ مِنَ السَّمَاءِ مِن مَّاءٍ فَأَحْيَا بِهِ الْأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا وَبَثَّ فِيهَا مِن كُلِّ دَابَّةٍ وَتَصْرِيفِ الرِّيَاحِ وَالسَّحَابِ الْمُسَخَّرِ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَعْقِلُونَ ‎﴿١٦٤﴾অর্থঃ (১৬৩) আর তোমাদের ইলাহ এক ইলাহ। তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই। তিনি অতি দয়াময়, পরম দয়ালু। (১৬৪) নিশ্চয় আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের বিবর্তনে, সে নৌকায় যা সমুদ্রে মানুষের জন্য কল্যাণকর বস্ত্ত নিয়ে চলে এবং আসমান থেকে আল্লাহ যে বৃষ্টি বর্ষণ করেছেন অতঃপর তার মাধ্যমে মরে যাওয়ার পর যমীনকে জীবিত করেছেন এবং তাতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সকল প্রকার বিচরণশীল প্রাণী ও বাতাসের পরিবর্তনে এবং আসমান ও যমীনের মধ্যবর্তী স্থানে নিয়োজিত মেঘমালায় রয়েছে নিদর্শনসমূহ এমন কওমের জন্য, যারা বিবেকবান। (সূরা বাকারাঃ ১৬৩-১৬৪)৫.اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ ۚ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ ۚ لَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۗ مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِندَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۚ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ ۖ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا ۚ وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ ‎﴿٢٥٥﴾অর্থঃ (২৫৫) আল্লাহ! তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনি স্বাধীন ও নিত্য নতুন ধারক, সব কিছুর ধারক। তন্দ্রা ও নিদ্রা তাঁকে স্পর্শ করেনা। নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু রয়েছে সবই তাঁর। কে আছে এমন, যে তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর নিকট সুপারিশ করতে পারে? সম্মুখের অথবা পশ্চাতের সবই তিনি অবগত আছেন। একমাত্র তিনি যতটুকু ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত, তাঁর জ্ঞানের কিছুই তারা আয়ত্ত করতে পারেনা। তাঁর আসন আসমান ও যমীন ব্যাপী হয়ে আছে এবং এতদুভয়ের সংরক্ষণে তাঁকে বিব্রত হতে হয়না। তিনিই সর্বোচ্চ, মহীয়ান। (আয়াতুল কুরসী, সূরা বাকরাঃ ২৫৫)৬.آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْهِ مِن رَّبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ ۚ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّن رُّسُلِهِ ۚ وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا ۖ غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ ‎﴿٢٨٥﴾‏ لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا ۚ لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ ۗ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِ ۖ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا ۚ أَنتَ مَوْلَانَا فَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ ‎﴿٢٨٦﴾‏অর্থঃ (২৮৫) রাসূল তার নিকট তার রবের পক্ষ থেকে নাযিলকৃত বিষয়ের প্রতি ঈমান এনেছে, আর মুমিনগণও। প্রত্যেকে ঈমান এনেছে আল্লাহর উপর, তাঁর ফেরেশতাকুল, কিতাবসমূহ ও তাঁর রাসূলগণের উপর, আমরা তাঁর রাসূলগণের কারও মধ্যে তারতম্য করি না। আর তারা বলে, আমরা শুনলাম এবং মানলাম। হে আমাদের রব! আমরা আপনারই ক্ষমা প্রার্থনা করি, আর আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তনস্থল। (২৮৬) আল্লাহ কোন ব্যক্তিকে তার সামর্থ্যের বাইরে দায়িত্ব দেন না। সে যা অর্জন করে তা তার জন্যই এবং সে যা কামাই করে তা তার উপরই বর্তাবে। হে আমাদের রব! আমরা যদি ভুলে যাই, অথবা ভুল করি তাহলে আপনি আমাদেরকে পাকড়াও করবেন না। হে আমাদের রব, আমাদের উপর বোঝা চাপিয়ে দেবেন না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন। হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে এমন কিছু বহন করাবেন না, যার সামর্থ্য আমাদের নেই। আর আপনি আমাদেরকে মার্জনা করুন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন, আর আমাদের উপর দয়া করুন। আপনি আমাদের অভিভাবক। অতএব আপনি কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন। (সূরা বাকারাঃ ২৮৫-২৮৬)৭.شَهِدَ اللَّهُ أَنَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ وَالْمَلَائِكَةُ وَأُولُو الْعِلْمِ قَائِمًا بِالْقِسْطِ ۚ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ ‎﴿١٨﴾‏ إِنَّ الدِّينَ عِندَ اللَّهِ الْإِسْلَامُ ۗ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ إِلَّا مِن بَعْدِ مَا جَاءَهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ ۗ وَمَن يَكْفُرْ بِآيَاتِ اللَّهِ فَإِنَّ اللَّهَ سَرِيعُ الْحِسَابِ ‎﴿١٩﴾অর্থঃ (১৮) আল্লাহ সাক্ষ্য দেন যে, তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই, আর ফেরেশতা ও জ্ঞানীগণও। তিনি ন্যায় দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (১৯) নিশ্চয় আল্লাহর নিকট দীন হচ্ছে ইসলাম। আর যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে, তাদের নিকট জ্ঞান আসার পরই তারা মতানৈক্য করেছে, পরস্পর বিদ্বেষবশত। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর আয়াতসমূহের সাথে কুফরী করে, নিশ্চয় আল্লাহ হিসাব গ্রহণে দ্রুত। (সূরা আলে ইমরানঃ ১৮-১৯)৮.إِنَّ رَبَّكُمُ اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْشِ يُغْشِي اللَّيْلَ النَّهَارَ يَطْلُبُهُ حَثِيثًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالنُّجُومَ مُسَخَّرَاتٍ بِأَمْرِهِ ۗ أَلَا لَهُ الْخَلْقُ وَالْأَمْرُ ۗ تَبَارَكَ اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ ‎﴿٥٤﴾‏ ادْعُوا رَبَّكُمْ تَضَرُّعًا وَخُفْيَةً ۚ إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِينَ ‎﴿٥٥﴾‏ وَلَا تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ بَعْدَ إِصْلَاحِهَا وَادْعُوهُ خَوْفًا وَطَمَعًا ۚ إِنَّ رَحْمَتَ اللَّهِ قَرِيبٌ مِّنَ الْمُحْسِنِينَ ‎﴿٥٦﴾অর্থঃ (৫৪) নিশ্চয় তোমাদের রব আসমানসমূহ ও যমীন ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আরশে উঠেছেন। তিনি রাতকে দ্বারা দিনকে ঢেকে দেন। প্রত্যেকটি একে অপরকে দ্রুত অনুসরণ করে। আর (সৃষ্টি করেছেন) সূর্য, চাঁদ ও তারকারাজী, যা তাঁর নির্দেশে নিয়োজিত। জেনে রাখ, সৃষ্টি ও নির্দেশ তাঁরই। আল্লাহ মহান, যিনি সকল সৃষ্টির রব। (৫৫) তোমরা তোমাদের রবকে ডাক অনুনয় বিনয় করে ও চুপিসারে। নিশ্চয় তিনি পছন্দ করেন না সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে। (৫৬) আর তোমরা যমীনে ফাসাদ করো না তার সংশোধনের পর এবং তাঁকে ডাক ভয় ও আশা নিয়ে। নিশ্চয় আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী। (সূরা আ'রাফঃ ৫৪-৫৬)৯.۞ وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنْ أَلْقِ عَصَاكَ ۖ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ ‎﴿١١٧﴾‏ فَوَقَعَ الْحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ ‎﴿١١٨﴾‏ فَغُلِبُوا هُنَالِكَ وَانقَلَبُوا صَاغِرِينَ ‎﴿١١٩﴾‏ وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِينَ ‎﴿١٢٠﴾‏ قَالُوا آمَنَّا بِرَبِّ الْعَالَمِينَ ‎﴿١٢١﴾‏ رَبِّ مُوسَىٰ وَهَارُونَ ‎﴿١٢٢﴾‏অর্থঃ (১১৭) আর আমি মূসার প্রতি ওহী পাঠালাম যে, ‘তুমি তোমার লাঠি ছেড়ে দাও’ তৎক্ষণাৎ সে গিলতে লাগল সেগুলিকে যে অলীক বস্তু তারা বানিয়েছিল। (১১৮) ফলে সত্য প্রকাশ হয়ে গেল এবং তারা যা কিছু করছিল তা বাতিল হয়ে গেল। (১১৯) তাই সেখানে তারা পরাজিত হল এবং লাঞ্ছিত হয়ে গেল। (১২০) আর যাদুকররা সিজদায় পড়ে গেল। (১২১) তারা বলল, ‘আমরা সকল সৃষ্টির রবের প্রতি ঈমান আনলাম, (১২২) মূসা ও হারূনের রবের প্রতি।’ (সূরাঃ আরাফঃ ১১৭-১২২)আয়াতগুলি বেশি বেশি পড়বে, বিশেষ করে ‘وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِينَ’ অংশটি।১০.فَلَمَّا أَلْقَوْا قَالَ مُوسَىٰ مَا جِئْتُم بِهِ السِّحْرُ ۖ إِنَّ اللَّهَ سَيُبْطِلُهُ ۖ إِنَّ اللَّهَ لَا يُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِينَ ‎﴿٨١﴾‏ وَيُحِقُّ اللَّهُ الْحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُجْرِمُونَ ‎﴿٨٢﴾অর্থঃ (৮১) অতঃপর যখন তারা (তাদের রশি ও লাঠি) ফেলল, তখন মূসা বলল, ‘তোমরা যা আনলে, তা যাদু। নিশ্চয় আল্লাহ তা বাতিল করে দেবেন। নিশ্চয় আল্লাহ ফাসাদকারীদের আমল পরিশুদ্ধ করেন না’। (৮২) আর আল্লাহ তাঁর বাণীসমূহের মাধ্যমে সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেন, যদিও অপরাধীরা তা অপছন্দ করে। (সূরা ইউনুসঃ ৮১-৮২)এটিও বেশি বেশি পড়বে, বিশেষ করেঃ " إِنَّ اللَّهَ سَيُبْطِلُهُ " অংশটি বেশি বেশি পড়বে।১১.إِنَّمَا صَنَعُوا كَيْدُ سَاحِرٍ ۖ وَلَا يُفْلِحُ السَّاحِرُ حَيْثُ أَتَىٰ ‎﴿٦٩﴾‏অর্থঃ (৬৯) তারা যা করেছে, তাতো কেবল যাদুকরের কৌশল। আর যাদুকর যেখানেই আসুক না কেন, সে সফল হবে না’। (সূরা ত্বাহাঃ ৬৯)১২.أَفَحَسِبْتُمْ أَنَّمَا خَلَقْنَاكُمْ عَبَثًا وَأَنَّكُمْ إِلَيْنَا لَا تُرْجَعُونَ ‎﴿١١٥﴾‏ فَتَعَالَى اللَّهُ الْمَلِكُ الْحَقُّ ۖ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ ‎﴿١١٦﴾‏ وَمَن يَدْعُ مَعَ اللَّهِ إِلَٰهًا آخَرَ لَا بُرْهَانَ لَهُ بِهِ فَإِنَّمَا حِسَابُهُ عِندَ رَبِّهِ ۚ إِنَّهُ لَا يُفْلِحُ الْكَافِرُونَ ‎﴿١١٧﴾‏ وَقُل رَّبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ ‎﴿١١٨﴾‏অর্থঃ (১১৫) ‘তোমরা কি মনে করেছিলে যে, আমি তোমাদেরকে কেবল অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমার দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে না’? (১১৬) সুতরাং সত্যিকারের মালিক আল্লাহ মহিমান্বিত, তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই; তিনি সম্মানিত ‘আরশের রব। (১১৭) আর যে আল্লাহর সাথে অন্য ইলাহকে ডাকে, যে বিষয়ে তার কাছে প্রমাণ নেই; তার হিসাব কেবল তার রবের কাছে। নিশ্চয় কাফিররা সফলকাম হবে না। (১১৮) আর বল, ‘হে আমাদের রব, আপনি ক্ষমা করুন, দয়া করুন এবং আপনিই সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।’ (সূরা মু'মিনুনঃ ১১৫-১১৮)১৩.وَالصَّافَّاتِ صَفًّا ‎﴿١﴾‏ فَالزَّاجِرَاتِ زَجْرًا ‎﴿٢﴾‏ فَالتَّالِيَاتِ ذِكْرًا ‎﴿٣﴾‏ إِنَّ إِلَٰهَكُمْ لَوَاحِدٌ ‎﴿٤﴾‏ رَّبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا وَرَبُّ الْمَشَارِقِ ‎﴿٥﴾‏ إِنَّا زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِزِينَةٍ الْكَوَاكِبِ ‎﴿٦﴾‏ وَحِفْظًا مِّن كُلِّ شَيْطَانٍ مَّارِدٍ ‎﴿٧﴾‏ لَّا يَسَّمَّعُونَ إِلَى الْمَلَإِ الْأَعْلَىٰ وَيُقْذَفُونَ مِن كُلِّ جَانِبٍ ‎﴿٨﴾‏ دُحُورًا ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌ وَاصِبٌ ‎﴿٩﴾‏ إِلَّا مَنْ خَطِفَ الْخَطْفَةَ فَأَتْبَعَهُ شِهَابٌ ثَاقِبٌ ‎﴿١٠﴾অর্থঃ (১) কসম সারিবদ্ধ ফেরেশতাদের, (২) অতঃপর (মেঘমালা) সুচারুরূপে পরিচালনাকারীদের, (৩) আর উপদেশ গ্রন্থ (আসমানী কিতাব) তিলাওয়াতকারীদের; (৪) নিশ্চয় তোমাদের ইলাহ এক; (৫) তিনি আসমানসমূহ, যমীন ও এ দু’য়ের মধ্যে যা আছে তার রব এবং রব উদয়স্থলসমূহের। (৬) নিশ্চয় আমি কাছের আসমানকে তারকারাজির সৌন্দর্যে সুশোভিত করেছি। (৭) আর প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তান থেকে হিফাযত করেছি। (৮) তারা ঊর্ধ্বজগতের কিছু শুনতে পারে না, কারণ প্রত্যেক দিক থেকে তাদের দিকে নিক্ষেপ করা হয় (উল্কাপিন্ড) (৯) তাড়ানোর জন্য, আর তাদের জন্য আছে অব্যাহত আযাব। (১০) তবে কেউ সন্তর্পণে কিছু শুনে নিলে তাকে পিছু তাড়া করে জ্বলন্ত উল্কাপিন্ড। (সূরা সাফফাত ১-১০)১৪.وَإِذْ صَرَفْنَا إِلَيْكَ نَفَرًا مِّنَ الْجِنِّ يَسْتَمِعُونَ الْقُرْآنَ فَلَمَّا حَضَرُوهُ قَالُوا أَنصِتُوا ۖ فَلَمَّا قُضِيَ وَلَّوْا إِلَىٰ قَوْمِهِم مُّنذِرِينَ ‎﴿٢٩﴾‏ قَالُوا يَا قَوْمَنَا إِنَّا سَمِعْنَا كِتَابًا أُنزِلَ مِن بَعْدِ مُوسَىٰ مُصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ يَهْدِي إِلَى الْحَقِّ وَإِلَىٰ طَرِيقٍ مُّسْتَقِيمٍ ‎﴿٣٠﴾‏ يَا قَوْمَنَا أَجِيبُوا دَاعِيَ اللَّهِ وَآمِنُوا بِهِ يَغْفِرْ لَكُم مِّن ذُنُوبِكُمْ وَيُجِرْكُم مِّنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ ‎﴿٣١﴾‏ وَمَن لَّا يُجِبْ دَاعِيَ اللَّهِ فَلَيْسَ بِمُعْجِزٍ فِي الْأَرْضِ وَلَيْسَ لَهُ مِن دُونِهِ أَوْلِيَاءُ ۚ أُولَٰئِكَ فِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ ‎﴿٣٢﴾অর্থঃ (২৯) আর স্মরণ কর, যখন আমি জিনদের একটি দলকে তোমার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। তারা কুরআন পাঠ শুনছিল। যখন তারা তার কাছে উপস্থিত হল, তখন তারা বলল, ‘চুপ করে শোন। তারপর যখন পাঠ শেষ হল তখন তারা তাদের কওমের কাছে সতর্ককারী হিসেবে ফিরে গেল। (৩০) তারা বলল, ‘হে আমাদের কওম, আমরা তো এক কিতাবের বাণী শুনেছি, যা মূসার পরে নাযিল করা হয়েছে। যা পূর্ববর্তী কিতাবকে সত্যায়ন করে আর সত্য ও সরল পথের প্রতি হিদায়াত করে’। (৩১) ‘হে আমাদের কওম, আল্লাহর দিকে আহবানকারীর প্রতি সাড়া দাও এবং তার প্রতি ঈমান আন, আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করবেন। আর তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক আযাব থেকে রক্ষা করবেন’। (৩২) আর যে আল্লাহর দিকে আহবানকারীর ডাকে সাড়া দেবে না সে যমীনে তাকে অপারগকারী নয়। আর আল্লাহ ছাড়া তার কোন অভিভাবক নেই। এরাই স্পষ্ট বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছে। (সূরা আহকাফঃ ২৯-৩২)১৫.يَا مَعْشَرَ الْجِنِّ وَالْإِنسِ إِنِ اسْتَطَعْتُمْ أَن تَنفُذُوا مِنْ أَقْطَارِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ فَانفُذُوا ۚ لَا تَنفُذُونَ إِلَّا بِسُلْطَانٍ ‎﴿٣٣﴾‏ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ ‎﴿٣٤﴾‏ يُرْسَلُ عَلَيْكُمَا شُوَاظٌ مِّن نَّارٍ وَنُحَاسٌ فَلَا تَنتَصِرَانِ ‎﴿٣٥﴾‏ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ ‎﴿٣٦﴾অর্থঃ (৩৩) হে জিন ও মানবজাতি, যদি তোমরা আসমানসমূহ ও যমীনের সীমানা থেকে বের হতে পার, তাহলে বের হও। কিন্তু তোমরা তো (আল্লাহর দেয়া) শক্তি ছাড়া বের হতে পারবে না। (৩৪) সুতরাং তোমাদের রবের কোন্ নিআমতকে তোমরা উভয়ে অস্বীকার করবে ? (৩৫) তোমাদের উভয়ের প্রতি প্রেরণ করা হবে অগ্নিশিখা ও কালো ধোঁয়া, তখন তোমরা প্রতিরোধ করতে পারবে না। (৩৬) সুতরাং তোমাদের রবের কোন্ নিআমতকে তোমরা উভয়ে অস্বীকার করবে ? (সূরা রহমানঃ ৩৩-৩৬)১৬.لَوْ أَنزَلْنَا هَٰذَا الْقُرْآنَ عَلَىٰ جَبَلٍ لَّرَأَيْتَهُ خَاشِعًا مُّتَصَدِّعًا مِّنْ خَشْيَةِ اللَّهِ ۚ وَتِلْكَ الْأَمْثَالُ نَضْرِبُهَا لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُونَ ‎﴿٢١﴾‏ هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ۖ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ ۖ هُوَ الرَّحْمَٰنُ الرَّحِيمُ ‎﴿٢٢﴾‏ هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ ۚ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ ‎﴿٢٣﴾‏ هُوَ اللَّهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ ۖ لَهُ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَىٰ ۚ يُسَبِّحُ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ ‎﴿٢٤﴾‏অর্থঃ (২১) এ কুরআনকে যদি আমি পাহাড়ের ওপর নাযিল করতাম তবে তুমি অবশ্যই তাকে দেখতে, আল্লাহর ভয়ে বিনীত ও বিদীর্ণ। মানুষের জন্য আমি এ উদাহরণগুলি পেশ করি; হয়ত তারা চিন্তাভাবনা করবে। (২২) তিনিই আল্লাহ, যিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই; দৃশ্য-অদৃশ্যের জ্ঞাতা; তিনিই পরম করুণাময়, দয়ালু। (২৩) তিনিই আল্লাহ; যিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনিই বাদশাহ, মহাপবিত্র, ত্রুটিমুক্ত, নিরাপত্তাদানকারী, রক্ষক, মহাপরাক্রমশালী, মহাপ্রতাপশালী, অতীব মহিমান্বিত, তারা যা শরীক করে তা হতে পবিত্র মহান। (২৪) তিনিই আল্লাহ, স্রষ্টা, উদ্ভাবনকর্তা, আকৃতিদানকারী; তাঁর রয়েছে সুন্দর নামসমূহ; আসমান ও যমীনে যা আছে সবই তার মহিমা ঘোষণা করে। তিনি মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (সূরা হাশরঃ ২১-২৪)১৭.قُلْ أُوحِيَ إِلَيَّ أَنَّهُ اسْتَمَعَ نَفَرٌ مِّنَ الْجِنِّ فَقَالُوا إِنَّا سَمِعْنَا قُرْآنًا عَجَبًا ‎﴿١﴾‏ يَهْدِي إِلَى الرُّشْدِ فَآمَنَّا بِهِ ۖ وَلَن نُّشْرِكَ بِرَبِّنَا أَحَدًا ‎﴿٢﴾‏ وَأَنَّهُ تَعَالَىٰ جَدُّ رَبِّنَا مَا اتَّخَذَ صَاحِبَةً وَلَا وَلَدًا ‎﴿٣﴾‏ وَأَنَّهُ كَانَ يَقُولُ سَفِيهُنَا عَلَى اللَّهِ شَطَطًا ‎﴿٤﴾‏ وَأَنَّا ظَنَنَّا أَن لَّن تَقُولَ الْإِنسُ وَالْجِنُّ عَلَى اللَّهِ كَذِبًا ‎﴿٥﴾‏ وَأَنَّهُ كَانَ رِجَالٌ مِّنَ الْإِنسِ يَعُوذُونَ بِرِجَالٍ مِّنَ الْجِنِّ فَزَادُوهُمْ رَهَقًا ‎﴿٦﴾‏ وَأَنَّهُمْ ظَنُّوا كَمَا ظَنَنتُمْ أَن لَّن يَبْعَثَ اللَّهُ أَحَدًا ‎﴿٧﴾‏ وَأَنَّا لَمَسْنَا السَّمَاءَ فَوَجَدْنَاهَا مُلِئَتْ حَرَسًا شَدِيدًا وَشُهُبًا ‎﴿٨﴾‏ وَأَنَّا كُنَّا نَقْعُدُ مِنْهَا مَقَاعِدَ لِلسَّمْعِ ۖ فَمَن يَسْتَمِعِ الْآنَ يَجِدْ لَهُ شِهَابًا رَّصَدًا ‎﴿٩﴾অর্থঃ (১) বল, ‘আমার প্রতি ওহী করা হয়েছে যে, নিশ্চয় জিনদের একটি দল মনোযোগ সহকারে শুনেছে। অতঃপর বলেছে, ‘আমরা তো এক বিস্ময়কর কুরআন শুনেছি, (২) যা সত্যের দিকে হিদায়াত করে; অতঃপর আমরা তাতে ঈমান এনেছি। আর আমরা কখনো আমাদের রবের সাথে কাউকে শরীক করব না’। (৩) ‘আর নিশ্চয় আমাদের রবের মর্যাদা সমুচ্চ। তিনি কোন সংগিনী গ্রহণ করেননি এবং না কোন সন্তান’। (৪) ‘আর আমাদের মধ্যকার নির্বোধেরা আল্লাহর ব্যাপারে অবাস্তব কথা- বার্তা বলত’। (৫) ‘অথচ আমরা তো ধারণা করতাম যে, মানুষ ও জিন কখনো আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা আরোপ করবে না’। (৬) আর নিশ্চয় কতিপয় মানুষ কতিপয় জিনের আশ্রয় নিত, ফলে তারা তাদের অহংকার বাড়িয়ে দিয়েছিল। (৭) আর নিশ্চয় তারা ধারণা করেছিল যেমন তোমরা ধারণা করেছ যে, আল্লাহ কাউকে কখনই পুনরুত্থিত করবেন না। (৮) ‘আর নিশ্চয় আমরা আকাশ স্পর্শ করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমরা সেটাকে পেলাম যে, তা কঠোর প্রহরী এবং উল্কাপিন্ড দ্বারা পরিপূর্ণ’। (৯) আর আমরা তো সংবাদ শোনার জন্য আকাশের বিভিন্ন ঘাটিতে বসতাম, কিন্তু এখন যে শুনতে চাইবে, সে তার জন্য প্রস্তুত জ্বলন্ত উল্কাপিন্ড পাবে’। (সূরা জ্বিন ১-৯)১৮. সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, সূরা নাস।بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِقُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ ‎﴿١﴾‏ اللَّهُ الصَّمَدُ ‎﴿٢﴾‏ لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ ‎﴿٣﴾‏ وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ ‎﴿٤﴾‏অর্থঃ (১) বল, তিনিই আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়। (২) আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী। (৩) তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি। (৪) আর তাঁর কোন সমকক্ষও নেই। (সূরা ইখলাস ১১২)بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِقُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ ‎﴿١﴾‏ مِن شَرِّ مَا خَلَقَ ‎﴿٢﴾‏ وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ ‎﴿٣﴾‏ وَمِن شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ ‎﴿٤﴾‏ وَمِن شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ ‎﴿٥﴾‏অর্থঃ (১) বল, ‘আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি ঊষার রবের কাছে, (২) তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে, (৩) আর রাতের অন্ধকারের অনিষ্ট থেকে যখন তা গভীর হয়, (৪) আর গিরায় ফুঁ-দানকারী নারীদের অনিষ্ট থেকে, (৫) আর হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে’। (সূরা ফালাক ১১৩)بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِقُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ ‎﴿١﴾‏ مَلِكِ النَّاسِ ‎﴿٢﴾‏ إِلَٰهِ النَّاسِ ‎﴿٣﴾‏ مِن شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ ‎﴿٤﴾‏ الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ ‎﴿٥﴾‏ مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ ‎﴿٦﴾‏অর্থঃ (১) বল, ‘আমি আশ্রয় চাই মানুষের রব, (২) মানুষের অধিপতি, (৩) মানুষের ইলাহ-এর কাছে, (৪) কুমন্ত্রণাদাতার অনিষ্ট থেকে, যে দ্রুত আত্মগোপন করে। (৫) যে মানুষের মনে কুমন্ত্রণা দেয়। (৬) জিন ও মানুষ থেকে। (সূরা নাস ১১৪)
চিকিৎসার দ্বিতীয় স্তরঃ দোয়া পড়ার পরবর্তী পদক্ষেপ
উপরোক্ত সমস্ত আয়াত ও সূরা রোগীর কর্ণপার্শ্বে উচু আওয়াজে এবং বিশুদ্ধভাবে তিলাওয়াত করবে। এরপর রোগীর তিনটি অবস্থার যে কোন একটি হতে পারে। প্রথমতঃ হয়ত রোগী বেহুশ হয়ে পড়ে যাবে এবং সে যেই জ্বিন দ্বারা আক্রান্ত যে যাদুর দায়িত্বে সেই জ্বিন কথা বলতে থাকবে। এমতবাস্থায় চিকিৎসক জিনের ক্ষেত্রে যে ব্যবস্থা নেয়া উচিত সে ব্যবস্থা নিবে, যা আমি আমার অন্য বইয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করেছি। এরপর সে জিনকে নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলি করবেঃ১. তোমার নাম কি? আর তোমার ধর্ম কি? ধর্মের উপর ভিত্তি করে কথা বলতে হবে। যদি সে অমুসলিম হয়ে থাকে তবে তাকে ইসলাম গ্রহণের জন্যে আহবান করবে আর যদি সে মুসলমান হয়ে থাকে তবে তাকে বুঝাবে যে, তোমার জন্য এটা বৈধ নয় যে, তুমি যাদুকরের সেবায় নিয়োজিত থাক। আর না ইসলাম এর অনুমতি দেয়।২. তাকে জিজ্ঞাসা করবে যে, যাদু কোথায় রয়েছে? তাকে সত্য কথা বলতে বাধ্য করতে হবে। কেননা জ্বিন সব সময় মিথ্যা বলে। সে যদি কোন জায়গার খবর দেয় তবে লোক পাঠিয়ে তা বের করতে হবে।৩. ওকে জিজ্ঞাসা করবে যে, সে কি একাই যাদুর সাথে জড়িত না কি আরও কেউ তার সাথে রয়েছে? যদি অন্য আরও জ্বিন থাকে তবে তার মধ্যে সেই জ্বিনকেও উপস্থিত হতে বাধ্য করবে। অতঃপর তার কথাও শোনবে।৪. কখনও জ্বিন বলবে যে, অমুক ব্যক্তি যাদুকরের কাছে গিয়ে যাদু করতে বলেছে। এমন সব কথাও বিশ্বাস করা যাবে না। কেননা জিনের উদ্দেশ্য হল দুই ব্যক্তি মাঝে শক্রতা বৃদ্ধি করা আর শরীয়তে এসব জ্বিনের সাক্ষ্য গ্রহণীয় নয়। কেননা যাদুকরের সেবায় নিয়োজিত ফাসেক সে।আর আল্লাহ তায়ালা এ সম্পর্কে বলেনঃيَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِن جَاءَكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنُوا أَن تُصِيبُوا قَوْمًا بِجَهَالَةٍ فَتُصْبِحُوا عَلَىٰ مَا فَعَلْتُمْ نَادِمِينَ ‎﴿٦﴾‏অর্থঃ হে ঈমানদারগণ, যদি কোন ফাসিক তোমাদের কাছে কোন সংবাদ নিয়ে আসে, তাহলে তোমরা তা যাচাই করে নাও। এ আশঙ্কায় যে, তোমরা অজ্ঞতাবশত কোন কওমকে আক্রমণ করে বসবে, ফলে তোমরা তোমাদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে। (সূরা হুজুরাতঃ ৬)জিনের তথ্যানুযায়ী যদি সেই যাদুর স্থান পাওয়া যায় আর তা বের করা হয়। তবে পানিতে নিম্নোক্ত আয়াতসমূহ পড়বেঃ۞ وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنْ أَلْقِ عَصَاكَ ۖ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ ‎﴿١١٧﴾‏ فَوَقَعَ الْحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ ‎﴿١١٨﴾‏ فَغُلِبُوا هُنَالِكَ وَانقَلَبُوا صَاغِرِينَ ‎﴿١١٩﴾‏ وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِينَ ‎﴿١٢٠﴾‏ قَالُوا آمَنَّا بِرَبِّ الْعَالَمِينَ ‎﴿١٢١﴾‏ رَبِّ مُوسَىٰ وَهَارُونَ ‎﴿١٢٢﴾অর্থঃ (১১৭) আর আমি মূসার প্রতি ওহী পাঠালাম যে, ‘তুমি তোমার লাঠি ছেড়ে দাও’ তৎক্ষণাৎ সে গিলতে লাগল সেগুলিকে যে অলীক বস্তু তারা বানিয়েছিল। (১১৮) ফলে সত্য প্রকাশ হয়ে গেল এবং তারা যা কিছু করছিল তা বাতিল হয়ে গেল। (১১৯) তাই সেখানে তারা পরাজিত হল এবং লাঞ্ছিত হয়ে গেল। (১২০) আর যাদুকররা সিজদায় পড়ে গেল। (১২১) তারা বলল, ‘আমরা সকল সৃষ্টির রবের প্রতি ঈমান আনলাম, (১২২) মূসা ও হারূনের রবের প্রতি।’ (সূরাঃ আরাফঃ ১১৭-১২২)إِنَّمَا صَنَعُوا كَيْدُ سَاحِرٍ ۖ وَلَا يُفْلِحُ السَّاحِرُ حَيْثُ أَتَىٰ ‎﴿٦٩﴾অর্থঃ তারা যা করেছে, তাতো কেবল যাদুকরের কৌশল। আর যাদুকর যেখানেই আসুক না কেন, সে সফল হবে না’। (সূরা ত্বাহাঃ ৬৯)فَلَمَّا أَلْقَوْا قَالَ مُوسَىٰ مَا جِئْتُم بِهِ السِّحْرُ ۖ إِنَّ اللَّهَ سَيُبْطِلُهُ ۖ إِنَّ اللَّهَ لَا يُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِينَ ‎﴿٨١﴾‏ وَيُحِقُّ اللَّهُ الْحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُجْرِمُونَ ‎﴿٨٢﴾‏অর্থঃ (৮১) অতঃপর যখন তারা (তাদের রশি ও লাঠি) ফেলল, তখন মূসা বলল, ‘তোমরা যা আনলে, তা যাদু। নিশ্চয় আল্লাহ তা বাতিল করে দেবেন। নিশ্চয় আল্লাহ ফাসাদকারীদের আমল পরিশুদ্ধ করেন না’। (৮২) আর আল্লাহ তাঁর বাণীসমূহের মাধ্যমে সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেন, যদিও অপরাধীরা তা অপছন্দ করে। (সূরা ইউনুসঃ ৮১-৮২)এসব আয়াতসমূহ এক পাত্র পানিতে পড়ে ফুক দিবে যাতে কুরআন পড়া ভাপ পানিতে যায়। এরপর যাদুকে সেই পানিতে ডুবিয়ে দিবে তা যে কোন ধরণের যাদুর বস্তুই হোক কাগজ বা সুগন্ধি ইত্যাদি। এরপর সেই পানিকে সাধারণ রাস্তা থেকে অনেক দূরে কোথাও ফেলে দিয়ে আসবে। যদি জ্বিন বলে যে, যাদু আক্রান্ত রোগীকে যাদু পান করিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে রোগীকে জিজ্ঞাসা করতে হবে যে তার পেটে ব্যাথা আছে কি না? যদি ব্যাথা থাকে তবে বুঝতে হবে যে, জ্বিন সত্য বলেছে আর ব্যাথ্য না থাকলে বুঝতে হবে যে, জ্বিন মিথ্যা বলেছে।যদি জ্বিন থেকে সত্য তথ্য সংগ্রহ করা শেষ হয় তখন জ্বিনকে বলবে রোগী থেকে বের হয়ে যেতে এবং আর কখনও যেন ফিরে না আসে। এমনিভাবেই ইনশাআল্লাহ যাদু ধ্বংস করা যাবে। অতঃপর পানিতে ইতিপূর্বেই যে তিনটি আয়াত উল্লেখ হয়েছে তা পড়বে এবং সূরা বাকারার ১০২ নং আয়াত পড়ে পানিতে ফুঁ দিবে। রোগীকে তা দ্বারা কিছুদিন গোসল ও পান করতে বলবে।আর যদি জ্বিন বলে যে, রোগী যাদুর বস্তুর উপর দিয়ে অতিক্রম করেছে অথবা তার কোন কিছু যেমন চুল, কাপড় দিয়ে যাদু করেছে তাহলে এমতাবাস্থায় ইতিপূর্বে উল্লেখিত আয়াতগুলি দ্বারা পানি পড়া থেকে কিছুদিন রোগী পান করবে এবং তা দিয়ে গোসল করে নিবে। গোসল বাথরুমে না করে বরং বাথরুমের বাইরে যে কোন জায়গায় করবে এভাবে ব্যাথা দূর না হওয়া পর্যন্ত করতে থাকবে।এরপর জ্বিনকে বলবে যে, সে যেন এই ব্যক্তিকে ছেড়ে চলে যায় আর ফিরে না আসার অঙ্গীকার করে। এরপর প্রায় এক সপ্তাহ পর রুগী দ্বিতীয়বার পড়বে। যদি অসুস্থ ব্যক্তি কোন কিছু অনুভব না করে। তবে বুঝতে হবে যে, যাদু ধ্বংস হয়ে গেছে। যদি রোগী আবারও বেহুশ হয়ে পড়ে তবে বুঝতে হবে যে, জ্বিন মিথ্যাবাদী এবং এখনও সে রোগী থেকে বের হয়ে যায়নি। ওকে বের না হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করবে নম্রতার সাথে। আর যদি এরপরও কথা অমান্য করে তবে মারবে এবং কুরআনের আয়াতসমূহ পড়বে। যদি রোগী বেহুশ না হয় এবং তার শরীরে কাপন শুরু হয় এবং তার নিঃশ্বাস ফুলতে থাকে তবে আয়াতুল কুরসীর ক্যাসেট রোগী প্রতিদিন তিনবার প্রতিবার এক ঘণ্টাব্যাপী শোনবে। এভাবে একমাস শুনবে তারপর পুনরায় সাক্ষাতে আসলে তাকে ঝাড়-ফুঁক দিবে। এবার ইনশাআল্লাহ আরোগ্য লাভ করবে।আর যদি আরোগ্য লাভ না হয় তবে সূরা সাফফাত, ইয়াসীন, দুখান, সূরা জ্বিন এসব সূরার রেকর্ডকৃত ক্যাসেট দিবে যাতে করে দিনে তিনবার তিন সপ্তাহ পর্যন্ত শুনবে। ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তায়ালা তাকে সুস্থ করে দিবেন। আর না হয় সময়সীমা বৃদ্ধি করতে হবে।দ্বিতীয় অবস্থাঝাড়-ফুঁকের সময় রোগী যদি কষ্ট অনুভব করে অথবা কাপতে থাকে, ঝাকুনি আসে অথবা মাথায় খুব বেশি ব্যাথা অনুভব করে বেহুশ না হয়, তবে এ অবস্থায় তিনবার করে শরয়ী ঝাড়-ফুক করবে। যদি রোগী বেহুশ হয়ে যায় তবে পূর্বে উল্লেখিত পদ্ধতি গ্রহণ করবে। আর যদি বেহুশ না হয় মাথা ব্যাথা ও কাপনি কমতে থাকে তবে কিছুদিন তাকে ঝাড়-ফুক করবে। ইনশাআল্লাহ শীঘ্রই সে আরোগ্য লাভ করবে। যদি সুস্থ না হয়, তবে নিম্নোক্ত পদ্ধতিগুলি গ্রহণ করবেঃ১. সূরা সাফফাত সম্পূর্ণ একবার এবং আয়াতুল কুরসী একাধিকবার রেকর্ড করবে। এরপর রোগীকে দিনে তিনবার শোনাবে।২. নামায জামাআতের সাথে আদায় করবে।৩. রোগী ফজর নামাযের পর নিম্নের এই দোয়া-لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌউচ্চারণঃ লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু, ওয়া‘হদাহু লা- শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল ‘হামদু, ওয়া হুআ ‘আলা- কুল্লি শাইয়্যিন ক্বাদীরঅর্থঃ আল্লাহ্‌ ছাড়া কোনো সত্য মাবুদ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই; রাজত্ব তাঁরই, সমস্ত প্রশংসাও তাঁর; আর তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান।একশত বার করে এক মাস পর্যন্ত পড়বে; কিন্তু একটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে, রোগীর কষ্ট ১০ অথবা ১৫ দিন পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে; কিন্তু ধীরে ধীরে কমতে থাকবে এবং মাসের শেষে সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে যাবে।এবার যখন পুনরায় ঝাড়-ফুক করবে তাতে রোগী কোন কষ্ট অনুভব করবে না। ইনশাআল্লাহ যাদু ধ্বংস হয়ে যাবে। এমনও হতে পারে যে, অসুস্থ রোগীর কষ্ট এক মাসেও লাঘব হয়নি। সাথে সাথে রোগীর উদ্বেগও থাকে। এ অবস্থায় যখন রোগী চিকিৎসকের কাছে আসবে তাকে তখন পূর্বের উল্লেখিত আয়াত ও সূরা সমূহ পড়ে ফুক দিবে। এরপর শীঘ্রই বেহুশ হয়ে যাবে। অতঃপর প্রথম অবস্থার পূর্বের পদ্ধতি গ্রহণ করবে।তৃতীয় অবস্থাযদি ঝাড়-ফুক করার সময় কোন পরিবর্তন পরিলক্ষিত না হয়; তবে তাকে পুনরায় তার লক্ষণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে হবে এরপর যদি অধিকাংশ লক্ষণই অবর্তমান হয়, তবে বুঝতে হবে সে যাদুগ্ৰস্ত বা অন্য কোন রোগী নয়। অবস্থা নিশ্চিত হবে, অতঃপর তিনবার করে ঝাড়-ফুক করবে এরপরও যদি লক্ষণ ফুটে না ওঠে আর বার বার ঝাড়-ফুক করা হয়; কিন্তু কিছুই অনুভব না করে, তবে এ অবস্থা খুবই কম। এমতাবস্থায় নিম্নোক্ত পদ্ধতি গ্রহণ করবেঃ১. সূরা ইয়াসীন, দুখান এবং সূরা জ্বিন ক্যাসেটে রেকর্ড করাবে এবং তা প্রত্যেক দিন তিনবার রোগীকে শোনানো হবে।২. বেশি বেশি তাওবা এ ইস্তেগফার করবে কমপক্ষে দিনে ১০০ বার অথবা বেশি।৩. প্রত্যেক দিন ১০০ বার অথবা এর থেকে বেশি (লা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ) পড়বে। এই পদ্ধতি একমাস পর্যন্ত করতে থাকবে।তারপর তার উপর ঝাড়-ফুক করবে এবং পূর্বের দুই অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে।
চিকিৎসার তৃতীয় স্তর হলো চিকিৎসা শেষের পরের স্তর
যদি আল্লাহ তায়ালা আপনার প্রচেষ্টায় রোগীকে সুস্থ করে দেন আর রোগী প্রশান্তি লাভ করে তাহলে আপনি আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করুন যিনি আপনাকে এই সুযোগ দান করেছেন। আর আল্লাহকে বেশি করে স্মরণ করতে হবে যেন আল্লাহ আপনাকে অন্যের জন্যও আরো তাওফীক প্রদান করেন। আর আপনার চিকিৎসায় এ সফলতা যেন আপনার সীমালজঘনও অহংকারের কারণ না হয়।আল্লাহ তায়ালা বলেনঃوَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكُمْ لَئِن شَكَرْتُمْ لَأَزِيدَنَّكُمْ ۖ وَلَئِن كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ ‎﴿٧﴾অর্থঃ আর যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় কর, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আযাব বড় কঠিন’। (সূরা ইবরাহীমঃ ৭)আর রোগী সুস্থ হওয়ার পরও আশঙ্কা মুক্ত নয়, কোথাও আবার কেউ দ্বিতীয়বার তার যাদু পুনরাবৃত্তি না করে। কেননা যারা যাদু করিয়েছে তারা যদি তার চিকিৎসকের নিকট গিয়ে সুস্থ হওয়ার বিষয় জানতে পারে তবে তারা দ্বিতীয়বার যাদুকরের নিকট গিয়ে যাদু করতে সচেষ্ট হবে। সুতরাং রোগী তার চিকিৎসকের নিকট যাওয়ার বিষয় গোপন রাখবে। আর রোগীর সুরক্ষার জন্যে নিম্নের নির্দেশাবলী তাকে প্রদান করুনঃ১. জামাতের সাথে নামায আদায় করা।২. গান-বাজনা শ্রবণ না করা।৩. ঘুমানোর পূর্বে ওযু করে নেয়া এবং আয়াতুল কুরসী তিলাওয়াত করা।৪. সব কাজ বিসমিল্লাহ বলে করা।৫. ফজরের নামাযের পর দৈনিক নিম্নের দোয়া ১০০ বার পড়া।لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌউচ্চারণঃ লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু, ওয়া‘হদাহু লা- শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল ‘হামদু, ওয়া হুআ ‘আলা- কুল্লি শাইয়্যিন ক্বাদীরঅর্থঃ আল্লাহ্‌ ছাড়া কোনো সত্য মাবুদ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই; রাজত্ব তাঁরই, সমস্ত প্রশংসাও তাঁর; আর তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান।৬. প্রত্যহ সামান্য হলেও কুরআনের তিলাওয়াত অবশ্যই করা। যদি কুরআন পড়তে না জানে তবে অন্য কারো থেকে অথবা ক্যাসেটে শুনবে। (কুরআন কারীমের শিক্ষা গ্রহণ করবে। কেননা মুসলমানদের জন্য তা অবশ্যই জরুরী।)৭. সৎলোকদের সংস্পর্শে ওঠা-বসা করবে।৮. সকাল-সন্ধ্যার মাসনুন দোয়াসমূহ পড়বে।

সেটিংস

বর্তমান ভাষা