পরিচ্ছেদ: নজরবন্দী বা ভেল্কিবাজির যাদু
৯৬
ভূমিকাসূরা আ'রাফে আল্লাহ তা'আলা এরশাদ করেনঃقَالُوا يَا مُوسَىٰ إِمَّا أَن تُلْقِيَ وَإِمَّا أَن نَّكُونَ نَحْنُ الْمُلْقِينَ ﴿١١٥﴾ قَالَ أَلْقُوا ۖ فَلَمَّا أَلْقَوْا سَحَرُوا أَعْيُنَ النَّاسِ وَاسْتَرْهَبُوهُمْ وَجَاءُوا بِسِحْرٍ عَظِيمٍ ﴿١١٦﴾ ۞ وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنْ أَلْقِ عَصَاكَ ۖ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ ﴿١١٧﴾ فَوَقَعَ الْحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ ﴿١١٨﴾ فَغُلِبُوا هُنَالِكَ وَانقَلَبُوا صَاغِرِينَ ﴿١١٩﴾ وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِينَ ﴿١٢٠﴾ قَالُوا آمَنَّا بِرَبِّ الْعَالَمِينَ ﴿١٢١﴾ رَبِّ مُوسَىٰ وَهَارُونَ ﴿١٢٢﴾অর্থঃ (১১৫) তারা বলল, ‘হে মূসা, হয় তুমি নিক্ষেপ করবে, নয়তো আমরাই নিক্ষেপ করব।’ (১১৬) সে বলল, ‘তোমরা নিক্ষেপ কর।’ অতঃপর যখন তারা নিক্ষেপ করল তখন তারা লোকদের চোখে যাদু করল এবং তাদেরকে ভীত করে তুলল। তারা বড় যাদু প্রদর্শন করল। (১১৭) আর আমি মূসার প্রতি ওহী পাঠালাম যে, ‘তুমি তোমার লাঠি ছেড়ে দাও’ তৎক্ষণাৎ সে গিলতে লাগল সেগুলিকে যে অলীক বস্তু তারা বানিয়েছিল। (১১৮) ফলে সত্য প্রকাশ হয়ে গেল এবং তারা যা কিছু করছিল তা বাতিল হয়ে গেল। (১১৯) তাই সেখানে তারা পরাজিত হল এবং লাঞ্ছিত হয়ে গেল। (১২০) আর যাদুকররা সিজদায় পড়ে গেল। (১২১) তারা বলল, ‘আমরা সকল সৃষ্টির রবের প্রতি ঈমান আনলাম, (১২২) মূসা ও হারূনের রবের প্রতি।’ (সূরা আরাফঃ ১১৫-১২২)আর সূরা ত্বা-হায় আল্লাহ তায়ালা বলেনঃقَالُوا يَا مُوسَىٰ إِمَّا أَن تُلْقِيَ وَإِمَّا أَن نَّكُونَ أَوَّلَ مَنْ أَلْقَىٰ ﴿٦٥﴾ قَالَ بَلْ أَلْقُوا ۖ فَإِذَا حِبَالُهُمْ وَعِصِيُّهُمْ يُخَيَّلُ إِلَيْهِ مِن سِحْرِهِمْ أَنَّهَا تَسْعَىٰ ﴿٦٦﴾অর্থঃ (৬৫) তারা বলল, হে মূসা, হয় তুমি নিক্ষেপ কর, না হয় আমরাই প্রথমে নিক্ষেপ করি। (৬৬) মূসা বলল, ‘বরং তোমরাই নিক্ষেপ কর। অতঃপর তাদের যাদুর প্রভাবে মূসার কাছে মনে হল যেন তাদের রশি ও লাঠিগুলো ছুটোছুটি করছে। (সূরা ত্বা-হাঃ ৬৫-৬৬)
ভেল্কিবাজি যাদুর লক্ষণসমূহ১. মানুষ কোন স্থিতিশীলবস্তুকে চলতে দেখতে পায়, আবার চলমানকে অচল জড় পদার্থের মত দেখতে পায়।২. বড় ধরণের বস্তুকে ছোট আর ছোটকে বড় দেখতে পায়।৩. একটি বস্তু অন্য কোন বস্তুতে রূপান্তরিত দেখা। যেমনঃ মূসা (আঃ)-এর সময়কালের যাদুর দ্বারা রশি আর লাঠিকে অজগর সাপের রূপে দেখতে পেয়েছিল।
ভেল্কিবাজি যাদু কিভাবে করা হয়?যাদুকর সাধারণ বা সবার কাছে পরিচিত কোন বস্তু সামনে নিয়ে আসে। অতঃপর নিজে শিরকযুক্ত মন্ত্র পড়ে শয়তানের কাছে প্রার্থনা করে। অতঃপর শয়তানের সাহায্যে সেই বস্তুটি অন্য কোন রূপ দিয়ে দেখানো হয়। এমনি এক ঘটনা এক ব্যক্তি আমার কাছে বর্ণনা করেছে, এক যাদুকর লোকজনের সামনে ডিম রেখে খুব দ্রুত ঘুরায়। অন্য একটি ঘটনা বর্ণনা করল যে, যাদুকর দু’পাথরকে পরস্পর সংঘর্ষ করে দেখতে দেখা যায় দুই ছাগল লড়ে। এসবের উদ্দেশ্য হল মানুষকে অবাক করে তাদের থেকে অর্থ লুটিয়ে নেয়া।কখনও আবার যাদুকর এই প্রকার যাদুকে অন্য প্রকার যাদুর জন্যে কাজে লাগায়। যেমনঃ স্বামী-স্ত্রী বিচ্ছেদের যাদু দ্বারা সুন্দরী স্ত্রীকে কুৎসিত রূপে দেখতে পায় তার স্বামী। আর আসক্তকারী যাদুতে কুৎসিত স্ত্রী সুন্দরীরূপে দেখতে পায় তার স্বামী। আর এ প্রকার যাদু অন্য প্রকারগুলি হতে ভিন্ন যাকে ভেল্কিবাজি বলা হয়। আর সাধারণত হাতের ম্যার-প্যাচের উপর নির্ভর করে।
ভেল্কিবাজির যাদুকে নষ্ট করার পদ্ধতিএই যাদুকে প্রত্যেক এমন নেক কাজ দ্বারা ভঙ্গ করা যায়, যার দ্বারা শয়তানকে তাড়ানো হয়। যেমনঃ১. আযান, ২. আয়াতুল কুরসী, ৩. শয়তান বিতাড়িতকারী দোয়া-দরূদ ও ৪. বিসমিল্লাহ বলা। তবে এসব কিছু ওযু অবস্থায় করতে হবে।ভেল্কিবাজি যাদুর ক্ষেত্রে উক্ত ব্যবস্থা নেয়ার পরও যদি তা নষ্ট না হয়, তবে বুঝতে হবে ভেল্কিবাজ তার হাতের কারসাজিকেই কাজে লাগিয়েছে, সে আসলে যাদুকর নয়।
ভেল্কিবাজি যাদুর একটি বাস্তব দৃষ্টান্ত ও তার প্রতিকারএক যাদুকরের কুরআনকে ঘুরানোঃমিশরের এক যাদুকর কুরআন ঘুরিয়ে তার তেলেসমাতি জাহের করত লোকজনের সামনে। কুরআনে এক সূতা বেঁধে সেটাকে চাবির সাথে বেঁধে দিত এরপর কুরআন উপরে উঠিয়ে লটকিয়ে রেখে কিছু মন্ত্র পড়ে কুরআনকে বলত ডানে ঘুর আর কুরআন ডানে ভন ভন করে ঘুরত, বামে ঘুরতে বললে বামে ঘুরত। এভাবে মানুষ ফিতনায় পড়ে যাওয়ার উপক্রম কেননা কুরআনের সাথে এ যাদু। আমি যাদুকরকে চ্যালেঞ্জ করে বললাম আমার সামনে যাদু দেখাতে পারবে না। লোকজন আমার কথা শুনে অবাক হল। আমার সাথে এক যুবক ছিল তাকে অন্য প্রান্তে বসতে বললাম। আমি আমার সাথীকে বললাম বার বার আয়াতুল কুরসী পড়তে থাক।এবার সে আয়াতুল কুরসী পড়তে লাগল। আর আমিও অন্য প্রান্তে আয়াতুল কুরসী পড়তে লাগলাম। অন্যদিকে যাদুকর তার যাদুমন্ত্র শেষ করে কুরআনকে বলল যে, ডান দিকে ঘুর এবার আর ঘুরছে না। দ্বিতীয়বার সে তার যাদুমন্ত্র পড়ে বলল বামে ঘুর; কিন্তু তার যাদু বিফলে গেল। কুরআন নিজ স্থানে অবস্থান করছে। এভাবে আল্লাহ তায়ালা যাদুকরকে লোক সমাগমের সম্মুখে অপদস্ত করেছেন।وَلَيَنصُرَنَّ اللَّـهُ مَن يَنصُرُهُঅর্থঃ “নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা তাকেই সাহায্য করে যে, আল্লাহর আনুগত্য করে।” (সূরা হজ্জঃ ৪০)
ভেল্কিবাজি যাদুর লক্ষণসমূহ১. মানুষ কোন স্থিতিশীলবস্তুকে চলতে দেখতে পায়, আবার চলমানকে অচল জড় পদার্থের মত দেখতে পায়।২. বড় ধরণের বস্তুকে ছোট আর ছোটকে বড় দেখতে পায়।৩. একটি বস্তু অন্য কোন বস্তুতে রূপান্তরিত দেখা। যেমনঃ মূসা (আঃ)-এর সময়কালের যাদুর দ্বারা রশি আর লাঠিকে অজগর সাপের রূপে দেখতে পেয়েছিল।
ভেল্কিবাজি যাদু কিভাবে করা হয়?যাদুকর সাধারণ বা সবার কাছে পরিচিত কোন বস্তু সামনে নিয়ে আসে। অতঃপর নিজে শিরকযুক্ত মন্ত্র পড়ে শয়তানের কাছে প্রার্থনা করে। অতঃপর শয়তানের সাহায্যে সেই বস্তুটি অন্য কোন রূপ দিয়ে দেখানো হয়। এমনি এক ঘটনা এক ব্যক্তি আমার কাছে বর্ণনা করেছে, এক যাদুকর লোকজনের সামনে ডিম রেখে খুব দ্রুত ঘুরায়। অন্য একটি ঘটনা বর্ণনা করল যে, যাদুকর দু’পাথরকে পরস্পর সংঘর্ষ করে দেখতে দেখা যায় দুই ছাগল লড়ে। এসবের উদ্দেশ্য হল মানুষকে অবাক করে তাদের থেকে অর্থ লুটিয়ে নেয়া।কখনও আবার যাদুকর এই প্রকার যাদুকে অন্য প্রকার যাদুর জন্যে কাজে লাগায়। যেমনঃ স্বামী-স্ত্রী বিচ্ছেদের যাদু দ্বারা সুন্দরী স্ত্রীকে কুৎসিত রূপে দেখতে পায় তার স্বামী। আর আসক্তকারী যাদুতে কুৎসিত স্ত্রী সুন্দরীরূপে দেখতে পায় তার স্বামী। আর এ প্রকার যাদু অন্য প্রকারগুলি হতে ভিন্ন যাকে ভেল্কিবাজি বলা হয়। আর সাধারণত হাতের ম্যার-প্যাচের উপর নির্ভর করে।
ভেল্কিবাজির যাদুকে নষ্ট করার পদ্ধতিএই যাদুকে প্রত্যেক এমন নেক কাজ দ্বারা ভঙ্গ করা যায়, যার দ্বারা শয়তানকে তাড়ানো হয়। যেমনঃ১. আযান, ২. আয়াতুল কুরসী, ৩. শয়তান বিতাড়িতকারী দোয়া-দরূদ ও ৪. বিসমিল্লাহ বলা। তবে এসব কিছু ওযু অবস্থায় করতে হবে।ভেল্কিবাজি যাদুর ক্ষেত্রে উক্ত ব্যবস্থা নেয়ার পরও যদি তা নষ্ট না হয়, তবে বুঝতে হবে ভেল্কিবাজ তার হাতের কারসাজিকেই কাজে লাগিয়েছে, সে আসলে যাদুকর নয়।
ভেল্কিবাজি যাদুর একটি বাস্তব দৃষ্টান্ত ও তার প্রতিকারএক যাদুকরের কুরআনকে ঘুরানোঃমিশরের এক যাদুকর কুরআন ঘুরিয়ে তার তেলেসমাতি জাহের করত লোকজনের সামনে। কুরআনে এক সূতা বেঁধে সেটাকে চাবির সাথে বেঁধে দিত এরপর কুরআন উপরে উঠিয়ে লটকিয়ে রেখে কিছু মন্ত্র পড়ে কুরআনকে বলত ডানে ঘুর আর কুরআন ডানে ভন ভন করে ঘুরত, বামে ঘুরতে বললে বামে ঘুরত। এভাবে মানুষ ফিতনায় পড়ে যাওয়ার উপক্রম কেননা কুরআনের সাথে এ যাদু। আমি যাদুকরকে চ্যালেঞ্জ করে বললাম আমার সামনে যাদু দেখাতে পারবে না। লোকজন আমার কথা শুনে অবাক হল। আমার সাথে এক যুবক ছিল তাকে অন্য প্রান্তে বসতে বললাম। আমি আমার সাথীকে বললাম বার বার আয়াতুল কুরসী পড়তে থাক।এবার সে আয়াতুল কুরসী পড়তে লাগল। আর আমিও অন্য প্রান্তে আয়াতুল কুরসী পড়তে লাগলাম। অন্যদিকে যাদুকর তার যাদুমন্ত্র শেষ করে কুরআনকে বলল যে, ডান দিকে ঘুর এবার আর ঘুরছে না। দ্বিতীয়বার সে তার যাদুমন্ত্র পড়ে বলল বামে ঘুর; কিন্তু তার যাদু বিফলে গেল। কুরআন নিজ স্থানে অবস্থান করছে। এভাবে আল্লাহ তায়ালা যাদুকরকে লোক সমাগমের সম্মুখে অপদস্ত করেছেন।وَلَيَنصُرَنَّ اللَّـهُ مَن يَنصُرُهُঅর্থঃ “নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা তাকেই সাহায্য করে যে, আল্লাহর আনুগত্য করে।” (সূরা হজ্জঃ ৪০)