পরিচ্ছেদ: ইস্তেগফার ও সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার
৮৭. ভূমিকা
পরিমাণ নির্ধারিত ছাড়া যত বেশি সম্ভব পড়াঃতন্মধ্যে রয়েছে-سَيِّدُ الِاسْتِغْفَارِ এবংأَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الحَيَّ القَيُّومَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِইস্তেগফার পাঠের ফযিলত নিম্নে বর্ণিত হল-
৮৮. শয়তানের প্রভাব বিস্তার থেকে বাঁচার হাতিয়ার
আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الحَيَّ القَيُّومَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِপড়বে, তার গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে, যদিও সে জিহাদের ময়দান থেকে পালায়নকারী হয়। [তিরমিযী ৫/৫৬৯]দোয়ার অর্থ: আমি সেই মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি, যিনি ব্যতীত কোনো সত্য ইলাহ নেই, যিনি চিরঞ্জীব, সংরক্ষণকারী এবং তাঁরই নিকট আমি তওবা করছি।সাদ্দাদ ইবন আউস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার (অর্থাৎ মাগফেরাত চাওয়ার সর্বোত্তম পদ্ধতি) হলো, তুমি এভাবে বলবে-اَللّهُمَّ اَنْتَ رَبِيْ لَا إلَهَ إلَّا اَنْتَ خَلَقْتَنَيْ وَاَنَا عَبْدُكَ وََاَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعَدكَ مَااسْتَطْعْتُ اَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَر مَا صَنَعْتُ اَبُوْءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَاَبُوْءُ بِذَنْبِيْ فَاغْفِرْلِيْ فَإنّهُ لَا يَغْفِرُ الذّنُوْبَ إلَّا اَنْتَরাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেন, যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে দিনের যে কোনো অংশে এ ইস্তেগফার পড়বে, সে যদি ঐ দিন সন্ধ্যার পূর্বে মারা যায়, তাহলে জান্নাতবাসী হবে। অনুরূপ ভাবে কেউ যদি রাতের কোনো অংশে এ ইস্তেগফার পড়ে আর সকাল হওয়ার আগে মারা যায়, তাহলে সে ও জান্নাতবাসী হবে। [সহীহ বুখারী ৭/১৫০]দোয়ার অর্থ: হে আল্লাহ! আপনিই আমার রব আপনি ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই, আপনিই আমাকে সৃষ্টি করেছেন। আমি আপনার বান্দা, আমি সাধ্যনুযায়ী আপনার সাথে কৃত অঙ্গীকার ও ওয়াদার ওপর প্রতিষ্ঠিত আছি, আমি নিজের কৃত বদ আমল থেকে আপনার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি। আমার ওপর আপনার যে সব নি‘আমত রয়েছে, তা স্বীকার করছি এবং স্বীয় গুনাহের স্বীকারোক্তি দিচ্ছি। অতএব, আপনি আমাকে ক্ষমা করুন। কেননা আপনি ভিন্ন কেউ গুনাহ মাফ করতে পারে না।
৮৯. আল্লাহর আযাব হতে নিরাপত্তা
আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, আল্লাহর আযাব থেকে মুক্তির জন্য জমিনের বুকে দু‘টি নিরাপত্তা ছিল দু‘টির একটি উঠে গেছে, আরেকটি অবশিষ্ট আছে, তোমরা সেটাকে আঁকড়ে ধর।আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘হে নবী! আপনি তাদের ভিতর থাকা অবস্থায় আল্লাহ তাদের শাস্তি দিবেন না এবং তারা ইস্তেগফার করতে থাকলেও তিনি তাদের শাস্তি দিবেন না।” [সহীহ বুখারী ৭/১৫০]
৯০. চিন্তা থেকে মুক্তি, বৃষ্টি বর্ষণ এবং সম্পদ ও সন্তানাদি অর্জন
আল্লাহ তাআলা কুরআনে কারীমের ভেতর এস্তেগফার ও তওবার প্রক্রিয়া বয়ান করার ক্ষেত্রে বলেছেন, ‘‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর, তিনি ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদেরকে সমৃদ্ধ করবেন ধন-সম্পদ সন্তান-সন্ততি দ্বারা এবং তোমাদের জন্য স্থাপন করবেন উদ্যান ও প্রবাহিত করবেন নদী-নালা। [আবু দাউদ ২/৮৫]ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার করতে থাকে আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য প্রত্যেক অসুবিধায় মুক্তির পথ করে দেন। তাকে দুশ্চিন্তা থেকে নাজাত দেন এবং কল্পনাতীত স্থান থেকে তাকে রিযিক দান করেন। [সূরা নূহ, আয়াত: ১০-১২]