০১

সূরা আল-ফাতিহা পড়া

০২

আয়াতুল করসী

০৩

সূরা আল-বাকারা-এর শেষ দুই আয়াত

০৪

সূরা আল-ইখলাস এবং মু‘আউওয়াযাতাইন (সূরা নাস ও ফালাক)

০৫

লা হাওলা ওয়ালা ক্বুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ

০৬

বিসমিল্লাহ্‌

০৭

বিসমিল্লাহিল্লাযি লা ইয়াদ্বুররু মা'আসমিহি...

০৮

আউযু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন শাররি মা খালাক্ব

০৯

হাসবিয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়া 'আলাইহি তাওয়াক্কালতু...

১০

বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু 'আলাল্লাহি...

১১

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু...

১২

আউযুবিল্লাহিল 'আযীম ওয়াবি ওয়াজহিহিল কারিম...

১৩

ইস্তেগফার ও সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার

১৪

রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর ওপর বেশি বেশি দুরূদ পড়া

১৫

জামা‘আতের সাথে ফজরের সালাত আদায়

১৬

আস্তাওদি'উকুমুল্লাহুল্লাযী লা তুদ্বি'উ ...

১৭

আলহামদুলিল্লাহিল্লাযি 'আফানী মিম্মাব তালাকা বিহি ...

১৮

গোপনে ও প্রকাশ্যে সদকা করা

১৯

গুনাহ থেকে দূরে থাকা

২০

চোখ লাগা থেকে হিফাযত

২১

শয়তানদের ছড়িয়ে পড়ার সময় শিশুদের হিফাযত করা

২২

বিপদ ও দূর্যোগের হিকমত এবং সে সময়ের করণীয়

২৩

মুমিন ও সৎ লোকদের বিপদে পতিত হওয়ার ভিতর হিকমত ও কল্যাণ নিহিত

২৪

প্রতিদিনের সংক্ষিপ্ত আমল

২৫

এমন কিছু বিশেষ আমল যার ওপর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বিরাট সাওয়াব ও পুরস্কারের কথা উল্লেখ করেছেন

পরিচ্ছেদ: সূরা আল-ফাতিহা পড়া

৪৭. ভূমিকা

সূরা আল-ফাতিহা একবার, তিনবার, সাতবার অথবা তার চেয়ে বেশিবার পড়া। এটি সর্ব রোগের নিরাময়ের জন্য কল্যাণকর।সূরা ফাতিহা পাঠের ফযীলত নিম্নে বর্ণিত হল -

৪৮. বিষাক্ত প্রাণীর দংশনের চিকিৎসা

আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সাহাবীগণের একদল সফরে বের হলেন। সফরকালে তারা আরবের কোনো এক এলাকায় যাত্রা বিরতি দিলেন। সে এলাকার লোকদের কাছে তারা মহেমানদারীর আবেদন করলেন, কিন্তু তার মেহমানদারী করতে অস্বীকার করলো। ঘটনাক্রমে সাহাবীগণের কাফেলা সেখানে অবস্থানকালেই তাদের গোত্রপতিকে বিচ্ছু দংশন করে। তার চিকিৎসার জন্য তারা অনেক চেষ্টা-তদবীর করে বিফল হয়। তখন তাদের একজন বললো, তোমরা যদি এ নবাগত পথিকদের কাছে যেতে, হতে পারে তাদের কেউ কিছু জানে।লোকটির কথা অনুযায়ী এলাকার লোকজন সাহাবীগণের কাছে এসে বললো, হে কাফেলার যাত্রীদল! আমাদের সরদারকে বিচ্ছু দংশন করেছে, আমরা তার চিকিৎসার জন্য বহু চেষ্টা করে বিফল হয়েছি। তোমাদের মধ্যকার কেউ কি এ বিষয়ে কিছু জানো?সাহাবীগণের একজন তখন বললেন, হ্যাঁ, আমি জানি। আল্লাহর কসম! আমি ঝাড়ফুঁক জানি। কিন্তু আগে চুক্তি কর, আমাদেরকে কী দেবে? কারণ আমরা তোমাদের নিকট মেহমানদারী চেয়েছিলাম, তা কর নি। তখন তাদের সঙ্গে একপাল বকরির চুক্তি হলো।অতঃপর সে সাহাবী তাদের সঙ্গে গিয়ে সূরা আল-ফাতিহা অর্থাৎ اَلْحَمْدُ لِلَّهِ পড়তে থাকলেন এবং রোগীর গায়ে ফুঁক দিতে লাগলেন। এভাবে কিছুক্ষণ পড়ার পর সরদার সুস্থ হয়ে উঠলো। কেমন যেনো এখন-ই তাকে শৃঙ্খল মুক্ত করা হলো। [হাকেম ১/৫০২]

৪৯. পাগলামির সফল চিকিৎসা

খারেজা স্বীয় চাচা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন: আমরা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর দরবার থেকে ফিরে আসার পথে আরবের এক গ্রামে পৌঁছলে তারা আমাদের বললো, আমরা জানতে পেরেছি আপনারা মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর কাছ থেকে কল্যাণ নিয়ে এসেছেন। অতএব, আপনাদের নিকট কী কোনো রোগ নিরাময়কারী কিছু আছে? কারণ আমাদের এখানে শৃংখলাবদ্ধ এক পাগল আছে।আমরা উত্তর দিলাম, হ্যাঁ, আছে। তখন তারা শৃংখলাবদ্ধ এক পাগলকে নিয়ে এলো। তিনি বলেন, আমিই তখন লাগাতার তিনদিন সকাল-বিকাল সূরা আল-ফাতিহা পড়ে ওকে ঝাড়লাম। ঝাড়ার নিয়ম ছিলো যতবার সূরা আল-ফাতিহা শেষ করেছি, ততবার ওর গায়ে হালকা থুথু দিয়েছি। এ নিয়মে ঝাড়ার পর সে সম্পূর্ণরূপে সুস্থ হয়ে উঠলো। তখন তারা আমাকে এর পারিশ্রমিক দিতে চাইলো, কিন্তু আমি নিতে অস্বীকার করলাম এবং বললাম, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে জিজ্ঞেস না করে নিবো না।রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি উত্তর দিলেন: হ্যাঁ, তা গ্রহণ করে খাও। কতজন মিথ্যা ঝাড়ফুঁক করে সে পারিশ্রমিক খায়, আর তুমি সত্যভাবে ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে খাচ্ছো। [সহীহ বুখারী ১০/১৯৮]

৫০. টিউমার জাতীয় রোগের চিকিৎসা

আল্লামা ইবন হাজার রহ. ইরাকের এক শাইখের ঘটনা বর্ণনা করেন। শাইখ বলেন, শৈশবে আমার চোখের ভ্রুর উপরে ছোট্র মেজের মতো ছিলো। ফলে আমার চোখের ভ্রু ঝুলে পড়লো। যে কারণে ভালো করে তাকানো আমার পক্ষে কষ্টকর হয়ে দাঁড়ালো। সেময় একজন আমাকে বললো, বাগদাদে এক ইয়াহূদী আছে সে ভ্রু ফেঁড়ে টিউমার বের করে দেয়। কিন্তু ইয়াহূদী হওয়ায় তার কাছে যেতে মন বেশি সায় দিলো না। এর কিছু দিন পরের ঘটনা। একরাতে আমি স্বপ্নে দেখি কেউ আমাকে বলছে, অযুর সময় এর উপর সূরা আল-ফাতিহা পড়। আমি তাই করলাম। এভাবে কয়েক দিন যাওয়ার পর হঠাৎ একদিন চেহারা ধোয়ার সময় মেঝটা এমনিতেই পড়ে গেলো এবং দাগও মুছে গেলো। তখন আমি বুঝতে পারলাম, এটা সূরা আল-ফাতিহারই বরকত।তারপর থেকে আমি নিজের জন্য সূরা আল-ফাতিহাকে জ্বরসহ বিভিন্ন রোগের ঔষধ বানিয়ে নিলাম। আল-হামদুলিল্লাহ! অধিকাংশ রোগই আল্লাহর হুকুমেই সেরে গেছে। [আল আছার ফিল আযকার, পৃ: ২০]

৫১. সূরা আল-ফাতিহা সকল রোগের শিফা

আব্দুল মালেক ইবন উমায়ের (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, “সূরা আল-ফাতিহা সকল রোগের শিফা। [দারেমী]ইমাম ইবনুল কাইয়্যেম রহ. বলেন, আমি মক্কায় দীর্ঘ সময় অবস্থান করেছি। সে সময় আমার নানা রোগ-ব্যধি দেখা দিতো; কিন্তু এর চিকিৎসার কোনো ডাক্তার বা ঔষধ পেতাম না। আমি তখন সূরা আল-ফাতিহার মাধ্যমে নিজের চিকিৎসা করেছি এবং এর আশ্চর্য তাছির দেখেছি। শুধু নিজে করেছি তাই না; বরং কেউ আমার নিকট ব্যাথার অভিযোগ করলে, তাকেও সূরা আল-ফাতিহার ওপর আমল করার কথা বলতাম। তাদের অনেকেই খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতো।এতক্ষণ তো হাদীসে বর্ণিত ঘটনা এবং সলফে সালেহীনদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করলাম।বর্তমানকালেও আল্লাহর ফযলে এ সূরার মাধ্যমে অনেক দৈহিক ও মানসিক রোগের চিকিৎসা সু-সম্পন্ন হয়েছে এবং তারা সম্পূর্ণরূপে সুস্থতা অর্জন করেছে। এর জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, প্রিয় নবী (ﷺ) এ সূরার নামকরণ করেছেন ‘রুকুইয়া’ অর্থাৎ নিরাময়কারী এবং তিনি কোনো রোগ নির্ধারিত করেন নি।

সেটিংস

বর্তমান ভাষা