পরিচ্ছেদ: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু...
৮৩. ভূমিকা
সকাল-সন্ধ্যায় দশবার, দৈনিক একশতবার বা তার চেয়ে বেশি, আর বাজারে ঢুকার সময় একবার পড়াঃلَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ وَلَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كلِّ شَيْ ٍ قّدِيْرٌদোয়াটি পাঠের ফযিলত নিম্নে বর্ণিত হল-
৮৪. বড় হিফাযত মাধ্যম ও বিরাট সাওয়াব
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি সকাল বেলায় এ দোয়াটি দশবার পড়বে, আল্লাহ তা‘আলা থাকে একশত নেকী দান করবেন। তার একশত গুনাহ মাফ করে দিবেন, একটি গোলাম আযাদ করার সমান সাওয়াব দান করবেন এবং ঐ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত তাকে হিফাযত করবেন। আর যে ব্যক্তি সন্ধ্যা বেলায় এ দোয়া পড়বে, সেও এ সমস্ত পুরস্কার প্রাপ্ত হবে। [মুসনাদে আহমদ ৪/৬০]অপর বর্ণনায় রয়েছে, যে ব্যক্তি দিনে একশত বার উক্ত দোয়াটি পড়বে সে দশটি গোলাম আযাদ করার সমান সাওয়াব লাভ করবে, আর একশত নেকী অর্জন করবে। তার একশত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে; ঐ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সে শয়তান থেকে হিফাযতে থাকবে। ঐ দিন সে সব চেয়ে উত্তম আমলকারী হিসেবে সাব্যস্ত হবে। তবে হ্যাঁ, কেউ যদি তার চেয়েও বেশি পড়ে, তবে ভিন্ন কথা, উক্ত ব্যক্তিই ইত্যাকার সকল সওয়াবের মালিক হবে। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬৯১]দোয়ার অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোনো মা‘বুদ নেই, তিনি একক, তার কোনো অংশীদার নেই, রাজত্ব এবং প্রশংসা তাঁরই, তিনি সর্ব বিষয়ের ওপর ক্ষমতাবান।
৮৫. বাজারে প্রবেশকালে আল্লাহর সঙ্গে লক্ষ লক্ষ নেকীর ব্যবসা!
উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি বাজারে প্রবেশ করে নিম্নের এ দোয়াটি পড়বে,لَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ وَلَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الحَمدُ يُحْيِيْ وَيُمِيْتُ وَهُوَ حَيٌّ لَا يمُوْتُ بِيَدِهِ الخَيْرَُ وَهُوَ عَلَى كل شَيْ ءٍ قَدِيْرٌআল্লাহ তা‘আলা তার জন্য দশ লক্ষ নেকী লিখে দিবেন। তার দশ লক্ষ গুনাহ মুছে দিবেন এবং তার দশলক্ষ মর্যাদা উন্নত করে দিবেন।অপর এক বর্ণনায় আছে তার জন্য জান্নাতে একটি মহল তৈরি করে দিবেন। [তিরমিযী, হাদীস নং ৩৪২৪]দোয়ার অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই তিনি একক, তাঁর কোনো শরীক নেই, রাজত্ব এবং ক্ষমতা তাঁরই, তিনিই জীবিত করেন এবং মৃত্যু দান করেন তিনি চিরঞ্জীব, তার মৃত্যু নেই, সকল কল্যাণ তার হাতে, তিনি সর্ব বিষয় ক্ষমতাবান।হাদীসের বর্ণনাকারী হাকেম রহ. বলেন, আমি খোরাসানে গিয়েছিলাম। তখন সেখানকার দায়িত্বশীল কুতাইবা ইবন মুসলিমের দরবারে হাযির হয়ে বললাম, আপনার জন্য হাদিয়া নিয়ে এসেছি এবং তাকে এ হাদীস শুনালাম। এরপর থেকে তিনি দৈনিক নিজ বাহনে আরোহন করে বাজারে যেতেন এবং এ দোয়া পড়ে ফিরে আসতেন।প্রিয় পাঠক! এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই যে, এ ছোট আমলের জন্য এতো বিরাট পুরস্কার! কারণ, মহান আল্লাহ তা‘আলা সর্বাধিক দাতা। তাঁর দান সর্বব্যাপী। এটা তার তার পক্ষ থেকে ঘোষণা যে, বাজারে গিয়ে তাঁর সাথে ব্যবসা করা অন্যের সঙ্গে ব্যবসা করার তুলনায় অনেক বেশি লাভজনক, যাতে বান্দা দুনিয়ার ব্যবসায় ডুবে আপন প্রভূকে ভুলে না যায়। শয়তান প্রাণান্ত চেষ্টা করে বাজারের লোকদের ওপর নিজের কর্তৃত্ব চালানোর জন্য। যে কারণে যত রকম মিথ্যা, ধোকাবাজি, প্রতারণা, খিয়ানত হৈ হুল্লোড় -সব বাজারেই হয়।আবু উসমান রহ. সালমান রহ. থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন: তোমার পক্ষে যদি সম্ভব হয়, তাহলে বাজারে সর্বাগ্রে প্রবেশকারী এবং সর্বশেষ প্রত্যাবর্তনকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না। কেননা, বাজারে শয়তানের যুদ্ধক্ষেত্র সেখানে সে পতাকা স্থাপন করে। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৪৫১]কায়েস ইবন আবু গারযা রহ. বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমাদের কাছে তাশরীফ আনলেন। আমরা দালালী করতাম। তিনি এসে বললেন, হে ব্যবসায়ী সমপ্রদায়! ব্যবসায়ে শয়তান হাযির হয় ও গুনাহ হয়ে থাকে। কাজেই ব্যবসা করার সঙ্গে সঙ্গে তোমরা বিশেষভাবে সাদকাও কর। [তিরমিযী, হাদীস নং ১২০৮]