পরিচ্ছেদ: আল্লাহ সম্পর্কে না জেনেই কিছু বলা

১২৮

পর্যাপ্ত জ্ঞান ছাড়াই আল্লাহ সম্পর্কে কিছু বলার ব্যাপারেও সতর্ক হোন, এমন কিছু বলবেন না যার ভিত্তি হবে শিরক ও কুফরী, বিদয়াত ও পাপ। পর্যাপ্ত জ্ঞান ছাড়াই আল্লাহ সম্পর্কে কিছু বলা সকল অনৈতিক কর্মকাণ্ড, পাপ ও নীতিভ্রষ্টতার চেয়েও মারাত্মক অপরাধ।এর প্রমাণস্বরূপ আল্লাহ তা'আলা অবতীর্ণ করলেন:قُلْ إِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّيَ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ وَالْإِثْمَ وَالْبَغْيَ بِغَيْرِ الْحَقِّ وَأَن تُشْرِكُوا بِاللَّهِ مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهِ سُلْطَانًا وَأَن تَقُولُوا عَلَى اللَّهِ مَا لَا تَعْلَمُونَ ﴿٣٣﴾অর্থঃ বল,‘আমার রব তো হারাম করেছেন অশ্লীল কাজ- যা প্রকাশ পায় এবং যা গোপন থাকে, আর পাপ ও অন্যায়ভাবে সীমালঙ্ঘন এবং আল্লাহর সাথে তোমাদের শরীক করা, যে ব্যাপারে আল্লাহ কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি এবং আল্লাহর উাপরে এমন কিছু বলা যা তোমরা জান না’। (আল-আ'রাফ ৭:৩৩)উপরোক্ত আয়াতে চারটি বিষয়কে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যা ভয়াবহতার ক্রমানুসারে উপস্থাপন করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন: (বল) হে মুহাম্মাদ (ﷺ), আমার প্রতিপালক যেসব বিষয় নিষিদ্ধ করেছেন। সেগুলো হল- আল ফাওয়াহিশ (বড় ধরনের ভয়ঙ্কর পাপ এবং যে কোনো ধরনের অবৈধ যৌনতা), হোক না তা প্রকাশ্যে অথবা গোপনে।” এটা হল ওই চারটি বিষয়ের প্রথমটি। অতঃপর আল্লাহ তা'আলা আরেকটি বিষয়ের কথা উল্লেখ করেন, যা প্রথমটির চেয়ে আরো ভয়াবহ, আল্লাহ তা'আলা বলেন: “অনৈতিক নিপীড়ন”। অতঃপর তিনি এর চেয়েও ভয়াবহ আরেকটি অপরাধের কথা উল্লেখ করেন, এবং আল্লাহ তা'আলা বলেন: “আল্লাহর সঙ্গে অংশীদার স্থাপন করা, অথচ যার জন্য তাকে কোনো ক্ষমতা বা অধিকার দান করা হয়নি।” অতঃপর আল্লাহ এর চেয়েও ভয়ঙ্কর অপরাধের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন: “আল্লাহ সম্পর্কে এমন কিছু বলা যে সম্পর্কে তোমার জ্ঞান নেই”।পর্যাপ্ত জ্ঞান ছাড়াই আল্লাহ সম্পর্কে কিছু বলা শিরক, কুফরি, বিভ্রান্তি কর বিদয়াত ও ফিতনার ভিত্তি। [ড. বকর বিন আবদুল্লাহ আবু যায়েদ, আল তা'আলুম, পৃ-১১২]না জেনে আল্লাহ সম্পর্কে কিছু বলা থেকে বিরত থাকতে এবং এর পরিণাম থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য দরকার মানুষের স্বভাব ও প্রকৃতি সম্পর্কিত জ্ঞানার্জন করা, মানুষ সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ অন্তর্দৃষ্টি অর্জন করা, যাতে করে আপনি বলতে পারেন, অসুস্থ দাবিকারী ব্যক্তি সত্য বলছে না মিথ্যা বলছে। এছাড়াও আপনার মানসিক অসুস্থতা এবং মানব দেহের অন্ত:ক্ষরা গ্রন্থিসমূহের (পিটুইটারী, থাইরয়েড ও অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি) কার্যাবলী সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে, কারণ এসব গ্রন্থির ভারসাম্যহীনতায় আচরণগত বিশৃংখলা ও চিত্তবৈকল্য দেখা দিতে পারে, যা দেখে কেউ মনে করতে পারে যে, তাকে শয়তানে স্পর্শ করেছে। প্রকৃতপক্ষে জ্বিন বিষয়টির উপর বেশি মনোযোগ দেয়া হয়েছে, অবশ্য এটাই উপযুক্ত।

সেটিংস

বর্তমান ভাষা