পরিচ্ছেদ: জ্ঞানহীন ব্যক্তিদের রুকইয়াহ করা

১২৬

অভিজাত-নীচ, জ্ঞানী ও মুখ, বিশ্বাসী ও নীতিহীন প্রত্যেকেই এ ক্ষেত্রে জ্ঞান আছে বলে দাবি করছেন এবং এ বিষয়ে কথাও বলছেন। প্রত্যেকেরই নিজস্ব উৎস রয়েছে এবং তারা নিজেকে শায়খ হিসেবেও দাবি করেন। কোনো ধরনের জ্ঞান অথবা নির্দেশনা অথবা কোন স্পষ্ট কিতাব ছাড়াই স্রেফ অনুমানের উপর ভিত্তি করে আল্লাহকে নিয়ে কথা বলার মতো স্পর্ধা দেখান। আর এ অনুমান হলো সবচেয়ে বড় মিথ্যা।তারা দাবি করেন, রোগীর দেহে কারীন অবস্থান নিয়েছে, এ কারীনই তার উপর অন্যায় অবিচার করেছে (কিন্তু তাদের এ দাবি নতুন আইডিয়া, এর জন্য স্পষ্ট প্রমাণ দরকার), তারা আরো দাবি করেন যে, এ রোগী যাদুটোনার কবলে পড়েছে এবং তার দেহে উম্মুল সুবিয়ান অবস্থান নিয়েছে। আর তাদের সকল প্রচেষ্টা যদি ব্যর্থ হয় এবং জ্বিন কথা না বলে, তাহলেই তারা বলতে শুরু করেন যে, এ লোকের ওপর কারো বদনজর পড়েছে। আপনি খেয়াল করে দেখবেন, তারা অতি দ্রুতই রোগ নির্ণয় করে ফেলেন এবং পুরো কাহিনী বোঝার আগেই চিকিৎসা শুরু করে দেন, এমনকি ইসলামের খাটি শায়খগণ যেসব আলোচনা থেকে বিরত থাকতেন, তারা দিব্যি সেসব আলোচনা করছেন।তাদের অনেকেই কুরআনের আয়াতসমূহকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করেন। তাই আপনি দেখবেন, অনেকেই রোগীকে সমুদ্র তীরে নিয়ে যান এবং রোগীকে সেই পানিতে নিমজ্জিত করে এ আয়াত পাঠ করছেন:ارْكُضْ بِرِجْلِكَ ۖ هَٰذَا مُغْتَسَلٌ بَارِدٌ وَشَرَابٌ ﴿٤٢﴾অর্থঃ [আমি বললাম], ‘তুমি তোমার পা দিয়ে (ভূমিতে) আঘাত কর, এ হচ্ছে গোসলের সুশীতল পানি আর পানীয়’। (সা'দ ৩৮: ৪২)আবার অনেককে দেখবেন, রোগীকে আঘাত করছেন আর নিম্নোক্ত আয়াত পাঠ করছেন:ذُقْ إِنَّكَ أَنتَ الْعَزِيزُ الْكَرِيمُ ﴿٤٩﴾অর্থঃ (বলা হবে) ‘তুমি আস্বাদন কর, নিশ্চয় তুমিই সম্মানিত, অভিজাত’। (আল দুখান ৪৪:৪৯)অনেককে আবার দেখবেন রোগীর গায়ে বরফ শীতল পানি ঢালছেন এবং নিম্নোক্ত আয়াত তেলাওয়াত করছেন:ثُمَّ صُبُّوا فَوْقَ رَأْسِهِ مِنْ عَذَابِ الْحَمِيمِ ﴿٤٨﴾অর্থঃ তারপর তার মাথার উপর ফুটন্ত পানির আযাব ঢেলে দাও। (আল দুখান ৪৪:৪৮)বর্তমানে সচেতন জ্ঞানী ব্যক্তিরা এসব কপটদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে শুরু করেছে। এটা মুসলিমদের অধিকার যে, তাদের শায়খরা এসব ভণ্ড হাতুড়ে ওঝা-কবিরাজদের যুক্তি খণ্ডন করবেন, তাদেরকে অমূলক বলে প্রমাণ করবেন, প্রত্যেক ভুলকারী ও তার ভুল, জ্ঞানী লোকদের ভুল ও বাজে কৌশলকে যুক্তির তরবারিতে খণ্ডন করবেন, যাতে করে এ ধরনের বাতিল ও অনৈতিক অভিলাষ মুসলমানদের সাধারণ চেতনাকে কলুষিত করতে না পারে।এ ধরনের অস্বাভাবিক ও অদ্ভুত গল্পের অনুরাগী হওয়া এবং এগুলোর অনুসন্ধান করা খুবই বিপজ্জনক। জ্ঞানী ব্যক্তিরা সবসময়ই সতর্ক করেছেন। যে, শয়তান বিদ্বান ব্যক্তিদের উপরও সওয়ার হতে পারে।যিয়াদ বিন যাদির থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: ওমর (রাঃ) আমাকে বলেন: “তুমি কি জান, ইসলামের অধঃপতন হবে কিভাবে? আমি বললাম: না। তিনি বললেন: ইসলামের অধঃপতন হবে স্কলার বা আলিমদের ভুলে, বকধার্মিকদের কুরআনকে ভুলের উপর ভিত্তি করে করা যুক্তি-তর্কে এবং বিপথগামী শাসকের শাসনে।” [সুনান আদ-দারিমী ১/৭১]

সেটিংস

বর্তমান ভাষা