পরিচ্ছেদ: ভূমিকা

১২৪

মানুষ মহাগ্রন্থ আল কুরআনের মাধ্যমে অসুস্থতার চিকিৎসা বিষয়ে আলোচনা করছে, আর যারা এ চিকিৎসা পদ্ধতির অনুশীলন করছেন তারা এর প্রশংসা ও সমালোচনা উভয়টাই করছেন। নিম্নোক্ত দুটি বিষয়কে কেন্দ্র করেই এ প্রশংসা ও সমালোচনা আবর্তিত হয়:১. এ বিষয়ের উপর লিখিত বইসমূহ।২. এ পদ্ধতির কিছু রক্বির দ্বারা সংঘটিত ভুল এবং তারা এ চিকিৎসা পদ্ধতিকে যেভাবে অতিরঞ্জিত করেছেন।স্বচ্ছতার জন্য এসব মন্তব্য ও ভুল থেকে কিছু যদি আমরা উল্লেখ করি, তাহলে আমরা বলব যে, তাদের মধ্যে কিছু লোক আমাদের ঈমানি ভাই-তাদের কাছ থেকে অনেক লোক উপকার লাভ করেছেন-ইসলাম ও এর আকীদাহ রক্ষায় তারা গ্যাপ পূরণ করেছেন। তারা ভণ্ড ওঝা-কবিরাজ, মিথ্যাবাদী ও গণকদের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন, এদের ব্যাপারে জনসাধারণকে সতর্ক করেছেন, তারা লুপ্তপ্রায় সুন্নাহকে পুনর্জাগরিত করেছেন, পুনর্জীবন দান করেছেন। তাদের কর্ম মূলত দুটি অপরিহার্য শর্তের ওপর। একটি হল ইসলামী শরীয়াহ অনুসারে গ্রহণযোগ্যতা অর্থাৎ আন্তরিকতা, অন্যটি হল সুন্নাহ অনুসরণ করা। কারণ নিয়ত বা উদ্দেশ্য যদি আন্তরিক না হয় তাহলে তাদের কর্ম হয়ে যাবে লোক দেখানো এবং শিরক, আর কেউ যদি সঠিকভাবে সুন্নাহ অনুসরণ না করেন তাহলে তিনি নিমজ্জিত হবেন পাপ ও বিদ'আতে।শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যাহ তাদেরকে আল্লাহর পথে সংগ্রামকারী হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন: যে ব্যক্তি (জ্বিনের) বৈরিতা প্রতিহত করার ক্ষেত্রে সঠিক পথ অনুসরণ করবেন, ঠিক যেভাবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ﷺ) নির্দেশ দিয়েছেন সেভাবে করবেন, তাহলে তিনি তাদের সঙ্গে ভুল বা অনৈতিক কিছু করবেন না, বরং তিনি যার প্রতি অন্যায় করা হয়েছে তাকে সহায়তা করার মাধ্যমে, অভাবীকে সাহায্য করা এবং যন্ত্রণায় কাতর ব্যক্তির যন্ত্রণা লাঘব করার মাধ্যমে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলেরই (ﷺ) আনুগত্য করছেন, আর এ কাজটি তিনি করছেন ইসলামে নির্দেশিত উপায়ে, যেখানে আল্লাহর সঙ্গে কোনো অংশিদারিত্ব (শিরক) নেই, যে পদ্ধতিতে কারো সঙ্গে অন্যায় আচরণ করা হয় না।“এ ধরনের একজন মানুষ কখনো জ্বিন দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে না, এর কারণ হল, হয় জ্বিন জানে যে এ ব্যক্তি ন্যায়পরায়ণ ও সৎ অথবা জ্বিনরা এ ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করতে সক্ষম নয়। কিন্তু জ্বিন যদি ইফরিত হয় এবং ওই ব্যক্তি যদি দুর্বল হয় তাহলে তারা ক্ষতি করতে পারবে। সেক্ষেত্রে এ দুর্বল ব্যক্তি নির্দিষ্ট কিছু আয়াত যেমন-আয়াতুল কুরসী, আল মু'আব্বিযাত (সূরা নাস ও ফালাক ও নির্দিষ্ট কিছু দোয়া তেলাওয়াত করে আল্লাহর কাছে নিজের সুরক্ষার জন্য আশ্রয় প্রার্থনা করতে পারেন। এছাড়াও ঈমান বৃদ্ধিকারী কিছু আয়াতও তেলাওয়াত করতে পারেন এবং পাপ কাজ থেকে বিরত থাকবেন, যেগুলোর কারণে জ্বিনরা মানুষের উপর কর্তৃত্ব অর্জন করার সুযোগ পায়। কারণ তিনি এখন আল্লাহর পথে সংগ্রামরত, আর এটাই হলো সর্বোৎকৃষ্ট জিহাদ। [ইবনে তাইমিয়্যাহ, মাজমুয়া আল ফাতওয়া, আবদ আল রহমান বিন কাশেম সম্পাদিত, ১৯/৫৩]দ্বিতীয় ক্ষেত্রে সংখ্যায় অনেক বেশি-আল্লাহ এদের সংখ্যা কমিয়ে দিক-তাদের উদ্দেশ্য ও অভিসন্ধি পুরোপুরি স্পষ্ট হয়ে গেছে। তারা শরমের পর্দা সরিয়ে ফেলেছে এবং কপট শাইখের মুখোশ-পোশাক পরিধান করেছে। তারা প্রচুর সংখ্যক প্রতিকারের বই প্রকাশ অথবা চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে এ সুন্নাহকে পরিণত করেছে অশালীন বাণিজ্যে।

সেটিংস

বর্তমান ভাষা