পরিচ্ছেদ: যেসব কারণে জ্বিনরা মানুষের ওপর প্রভাব খাটাতে পারে

৫১. ভুমিকা

এটা জেনে রাখা উচিত যে, জ্বিনদের পক্ষে মানুষের ক্ষতি করা বা তার মধ্যে উপস্থিত হওয়া খুব সহজ কাজ নয়, কারণ এটা করতে গেলেই সে কুরআনের শাস্তির মুখে পড়ে যায়, মানুষের দেহের মধ্যে আটকে পড়ে যায় বলেই তার এ শাস্তি। আর জ্বিন যখন অন্য কোনো রূপে বা বেশে আবির্ভূত হয় তখন সে পড়ে যায় ধ্বংস ও মৃত্যুর মুখে, কারণ তখন সে ওই নিয়ম-কানুনের অধীন হয়ে যায়, যা তার ধারণ করা বেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। উদাহরণ স্বরূপ, কোনো জ্বিন যদি বিড়ালের রূপে আবির্ভূত হয়, আর আপনি যদি তাকে তখন বর্শা বা বল্লম দিয়ে হত্যা করেন, তাহলে ওই জ্বিন হত্যার শিকার হবে। এরকম একটি ঘটনা বর্ণিত হয়েছে এক আনসার যুবকের মাধ্যমে, যা সহীহ মুসলিমে উল্লেখ করা হয়েছে।সুতরাং জ্বিন কোনো মানুষের ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো ক্ষতি করে না, যতক্ষণ সে নিশ্চিত হতে না পারে যে, ওই ব্যক্তি আল্লাহর স্মরণ হতে বিমুখ, আর এটা নিশ্চিত হতে পারলেই, অর্থাৎ কোনো মানুষ যখন আল্লাহ বিমুখ হয়, তখনই কেবল জ্বিনরা তার ক্ষতি করতে পারে।জ্বিনরা মানুষের ক্ষতি করতে পারে সে সম্পর্কে আলোচনা করার আগে আমি আপনাদের নিম্নোক্ত কোনো একটি কাজ না করার ব্যাপারে সতর্ক করব, কারণ আল্লাহ তো আপনাকে অসুস্থতা দিয়ে পরীক্ষাও করতে পারেন। এসব ক্ষেত্রে ধৈৰ্যই হবে আপনার একমাত্র হাতিয়ার, আর ইসলামে নির্দেশিত প্রতিকার বা নিরাময় ব্যবস্থা হবে আপনার একমাত্র পাথেয়।

৫২. ওঝা বা জাদুকর এবং যারা তার কাছে বার বার যান

জ্বিন তার জীবদ্দশায় ওঝা-ডাকিনীবিদের ওপর প্রচুর ক্ষমতা অর্জন করে। তারা অনেক জাদুকরকে অসুস্থ বানিয়ে দেয় এবং অনেককে হত্যাও করে, অতঃপর ওই ডাকিনীবিদের সন্তান-সন্ততির উপর ভর করে জ্বিন, তাদেরকেও বশ করে নেয়, কারণ জ্বিনরা ভালো করেই জানে যে, তাদের কোনো ক্ষমতা নেই।মন্দ জ্বিনরা শুধু ডাকিনীবিদের হয়ে কাজ করে, তার কিছু অনুরোধ রাখে, এ অনুরোধ পূর্ণ করার কারণ হলো, ওই জাদুকর বা ওঝা তার কথা অথবা তার উচ্চারিত মন্ত্রের মাধ্যমে আল্লাহকে অবিশ্বাস করেছে, তার মন্ত্রে এমন কিছু ছিল যা আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোনো সত্ত্বাকে অংশিদার। করে, অথবা সে তার কর্মের মাধ্যমে আল্লাহর কথার প্রতি অশ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছে। এসব কারণেই জ্বিনরা তার জন্য কাজ করে এবং তার কিছু অনুরোধ পূর্ণও করে। আর অন্যদিকে ওঝা জ্বিনের সকল চাওয়া পূরণ করে, তাকে এটা করতে হয়, কারণ এ ক্ষেত্রে তার অবস্থান হলো। অবমাননার, এখানে তার ব্যক্তিগত কোনো পছন্দ নেই।শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াহ (রঃ) বলেন:যদি কোনো ব্যক্তি রুকইয়াহ তেলাওয়াত করেন এবং এর মাধ্যমে শুধু নিরাময় বা প্রতিকার প্রত্যাশা করেন, তিনি কিন্তু জ্বিন প্রসঙ্গে সীমা লঙ্ঘন করেন না, একইভাবে কোনো জাদুকর যখন জ্বিনদেরকে কাউকে হত্যা করতে বলে যাকে হত্যা করা অনুমোদিত নয় অথবা কাউকে আটক। করার অনুরোধ করে যাকে আটক রাখার দরকার নাই। এক্ষেত্রে জ্বিনরা জাদুকরকে টার্গেট করতে পারে শুধু তার সীমালঙ্ঘনের কারণে, আর এ সীমালঙ্ঘন হল কাউকে হত্যা করা অথবা কাউকে অসুস্থ বানিয়ে দেয়া অথবা কারো পরিবার, শিশু বা গবাদিপশুর ক্ষতি করা। [মাজমুআ ফাতাওয়া, খণ্ড ১৯]যেসব ওঝার কাছে মানুষ বার বার শরণাপন্ন হয় তারা হল বড় ধরনের শয়তান। এদেরকে কাজে লাগিয়ে জ্বিন তাদের চাওয়া পূরণ করে এবং ওঝাদের প্রতি বেশ কিছু শর্তারোপ করে, এসব শর্ত আবার ওঝারা তাদের কাছে প্রায়ই আসা যাওয়া করে এমন লোকদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়, যেমন-নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে পাখি জবেহ করা, নির্দিষ্ট কিছু খাবার খাওয়া, অথবা কিছু সময় ধরে একটি নির্দিষ্ট অন্ধকার কক্ষে অবস্থান করা ইত্যাদি। এ ক্ষেত্রে ওঝা মর্যাদার দিক দিয়ে যত নিচে নামবে, মন্দ জ্বিনের খারাবি তত বাড়বে, সে তত ভয়ঙ্কর হবে, আর জ্বিনদের সকল শর্ত পালন করা সত্ত্বেও ওই ওঝার কোনো চাওয়াই পূরণ হয় না। আল্লাহ তা'আলা এ প্রসঙ্গে সত্য কথাটা প্রকাশ করে দিয়েছেন:وَأَنَّهُ كَانَ رِجَالٌ مِّنَ الْإِنسِ يَعُوذُونَ بِرِجَالٍ مِّنَ الْجِنِّ فَزَادُوهُمْ رَهَقًا ﴿٦﴾অর্থঃ আর নিশ্চয় কতিপয় মানুষ কতিপয় জিনের আশ্রয় নিত, ফলে তারা তাদের অহংকার বাড়িয়ে দিয়েছিল। (আল-জ্বিন্ন ৭২:৬)

৫৩. যর চক্র এবং যারা প্রায়শই এটা করে

যারা প্রায়শই যর চক্র আয়োজন করে তাদেরও ওপর জ্বিন ও শয়তান সহজেই কর্তৃত্ব অর্জন করে এবং তাদের বিভিন্নভাবে ক্ষতি করে, যারা এ চক্রে অংশগ্রহণ করে তারাও মারাত্মক ক্ষতির শিকার হন। এ ধরনের জলসার আয়োজন করা হয় মূলত রোগ নিরাময়ের নাম করে, মহিলারা একটি স্থানে একত্রিত হন, তখন জ্বিনরা যর চক্র আয়োজনকারীদের কাছে তাদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরে, যেমন-নারীদেরকে অলঙ্কার ও সুন্দর পোশাক পরানো, তাদের শ্রেষ্ঠ গহনাগুলো পরিধান করানো, নির্দিষ্ট কিছু পাখি জবেহ করা, মহিলাদের মুখে রক্তের প্রলেপ দেয়া, মোমবাতি জ্বালানো, ড্রাম বা ঢোল বাজানো এবং এ ঢোলের বাজনার তালে তালে সংশ্লিষ্ট মহিলাকে এমন উন্মাদনায় নাচানো যা শয়তানকে খুশি করবে। অনেক ক্ষেত্রেই এ নৃত্যকারী নারী মোটেই অসুস্থ থাকেন না, কিন্তু আসরে। বসে নাচার কারণে জ্বিন এসে তার দেহে অবস্থান নেয়।এসব উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মাঝে, ওই নৃত্যকারী দরিদ্র নারীরা মনে করেন, তার অসুস্থতা ভালো হয়ে গেছে, কিন্তু জ্বিন তখন আরো বেশ বেশ করে তার দাবি পেশ করতে শুরু করবে। আর এ আসরে যতবার ওই নারীর সম্মান বিনষ্ট করা হবে তার সংখ্যাই হল যর চক্র।আমার সামনে মরক্কো থেকে আসা একটি চিঠি রয়েছে, যর চক্র আয়োজনকারী এক ব্যক্তি এটি পাঠিয়েছেন, এ চিঠি থেকে সংক্ষেপে আমি কিছু উদ্ধৃত করব এখানে। আমি এটি এখানে উল্লেখ করব তাদের জন্য, যারা তাদের নারীদেরকে এ ধরনের চক্রে নিয়ে যান, তাদেরকে এখান। থেকে কিছু শিখানোই আমার উদ্দেশ্য।চিঠির লেখক বলছেন:১৯৮৪ সাল থেকে আমি যে কষ্ট ও যন্ত্রণা ভোগ করেছি তা থেকে প্রণোদিত হয়েই আমি এ চিঠি লিখেছি। আর খোলাখুলিভাবেই বলব, তার একমাত্র কারণ ছিল আমার অবহেলা। যদিও আমি একজন শিক্ষক, সুশিক্ষিত ব্যক্তি, সাবলিলভাবে কোনো জড়তা ছাড়াই আরবী ও ফরাসি ভাষা বলতে পারি, কিন্তু তা সত্ত্বেও আমি অ্যালকোহলে আসক্ত হয়ে পড়ি, নারীদের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে যাই এবং আমি সালাত আদায় করতাম না। খুব ছোট বেলা থেকেই আমি আমার বাড়িতে যর চক্র আয়োজন করতে দেখেছি, আমার বাবা-মা এটা করতেন। ১৯৭৪ সালে আমি আমার প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেই, তার গর্ভে আমার এক কন্যা সন্তান জন্ম হয়েছিল। এর পর থেকেই আমার অন্য নারীদের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে, এসব নারীরা আমার মায়ের কাছে আসত চিকিৎসার জন্য। আমার কাজ ছিল তাদের জন্য পাখি সংগ্রহ করা এবং তা জবেহ করা, মোমবাতিতে তাদের জন্য লেখা, এবং তাবিজ তৈরি করা।এর দশ বছর পরে-১৯৮৪ সালে-আমি ওয়াসওয়াসায় ভুগতে শুরু করি। দুজন লোককে একসঙ্গে কথা বলতে দেখলেই আমি মনে করতাম, তারা আমাকে নিয়েই কথা বলছে, আর স্বভাবতই আমি কোনো কারণ ছাড়াই তাদের মুখোমুখি হয়ে কলহে লিপ্ত হয়ে যেতাম। ১৯৮৫ সালে আমি আবার বিয়ে করি, মদ্যপান ছেড়ে দেই এবং সালাত আদায় করতে শুরু করি। কিন্তু তখনই অস্বাভাবিক কিছু একটা ঘটল আমার জীবনে। আমি আমার ঘরে অবস্থানকালে প্রায়ই প্রতিবেশির কণ্ঠ শুনতে পেতাম, আমার প্রতিবেশি আমাকে গালি-গালাজ করছে, আমাকে অপমান করছে, আমি তার স্ত্রী ও মেয়েদের গলার আওয়াজও পেতে শুরু করলাম। এভাবে আমি ওই এলাকায় বসবাসরত সকল প্রতিবেশির কণ্ঠ শুনতে শুরু করলাম, তারা প্রত্যেকেই আমাকে যথাসম্ভব নিকৃষ্ট ও অশ্লীল উপায়ে গালিগালাজ করছে, যখন আর ধৈর্য্যের বাধ মানত না, তখন গিয়ে আমি তাদের সঙ্গে ঝগড়া করতাম। আমি বড়ই দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে গেলাম, ঘুমোতে পারতাম না, এক পর্যায়ে আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি। আমার প্রতিবেশি ও তার স্ত্রী শপথ করে পর্যন্ত বলেছেন যে, তারা এ ধরনের কথা কখনোই আমাকে বলেননি। কিন্তু তারপরও আমি তাদের গলার আওয়াজ শুনতে পেতাম, এমনকি তারা যখন বাড়িতে থাকতেন না, তখনও তাদের গলার। আওয়াজ শুনতাম।এর কিছু দিন পরে আমি আমার দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দিলাম, তার গর্ভেও আমার এক সন্তান ছিল। আবারো মদ্যপানে আসক্ত হয়ে পড়লাম। এবং জাদুমন্ত্র পাঠ শুরু করলাম।পনের দিন পরে, আমি এমন কিছু কণ্ঠ শুনতে শুরু করলাম, যা অন্য কেউ শুনতে পেত না, এমনকি তারা আমার কাছে থাকা সত্ত্বেও এটা শুনতে পেত না। যার ফলে কোনো উপায়ান্তর না পেয়ে আমি জাদুকরদের শরণাপন্ন হলাম। তাদের পেছনে আমার প্রচুর অর্থ খরচ হল, কিন্তু কোনো উপশম বা নিরাময় লাভ হল না। এসব জাদুকরদের কেউ কেউ আমাকে ধুপ পোড়ানোর জন্য শিডিউল তৈরি করে দিল, কেউ আবার আমাকে উটের চুল কিনে ধুপের সঙ্গে পোড়ানোর পরামর্শ দিল, কিন্তু এসবই ছিল নিষ্ফল চেষ্টা। আমি দেখতে খুব কদাকার হয়ে গেলাম, সবসময় উদ্বিগ্ন থাকতাম, রাতে দেখতাম দুঃস্বপ্ন, বিভিন্ন গলার আওয়াজ শুনতাম এবং খাবারে কোনো স্বাদ পেতাম না।এর কিছু দিন পরে আমরা বাড়ি বিক্রি করে অন্যত্র চলে গেলাম, কিন্তু সেখানেও একই অবস্থা। ওই অদ্ভুত কণ্ঠ আর আমার পিছু ছাড়ল না। কখনো ওই কণ্ঠগুলো আমাকে হুমকি দিত, কখনো আমাকে বলত অনৈতিক কর্মকাণ্ড করার জন্য। এ সময় আমার বন্ধুরা আমাকে আরেক জাদুকরের খোঁজ দিল, আমি তার কাছে গেলাম এ আশায় যে, হয়ত কাছে আমার জন্য উপশম রয়েছে। সে আমাকে কিছু নাম দিল এবং প্রত্যেক সালাতের পর এগুলো আবৃত্তি করার পরামর্শ দিল। তার পরামর্শ। অনুসারে আমি সবকিছুই করলাম, কিন্তু সবই নিষ্ফল। [মরক্কো থেকে শায়খ ওয়াহীদ বালির কাছে প্রেরিত এক পত্র থেকে নেয়া হয়েছে]আপনারা কি দেখতে পাননি যে, এসব আসরে কী ধরনের অনৈতিক ও মন্দ কর্মকাণ্ড হয়ে থাকে, এবং জ্বিনরা কিভাবে এ চিঠির লেখকের উপর কতৃর্ত করেছে, এ লোকটিও এ ধরনের যর চক্রের আয়োজন করত। সুতরাং নারীদেরকে এসব আসরে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক হোন।চিঠির লেখকের উদ্দেশ্যে আমি বলব: আপনার এখন নিম্নোক্ত কাজগুলো করা দরকার:১. আপনি যেসব অনৈতিক কাজ করেছেন তার জন্য দ্রুত তওবা করুন এবং আপনার গুনাহর জন্য চোখের পানি ফেলুন।২. এমন একজন ব্যক্তির কাছে যান, যিনি মহান কুরআনের মাধ্যমে চিকিৎসা করেন, পূর্ববর্তী সেকশনে যার রূপরেখা দেয়া হয়েছে, তিনি যাতে কুরআনিক পদ্ধতিতে আপনার চিকিৎসা করতে পারেন এবং জাদুকরদের ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন।৩. নিয়মিত মসজিদে গিয়ে জামায়াতে সালাত আদায় করবেন।৪. সকাল ও সন্ধ্যায় আযকার পাঠ করবেন এবং এ বইয়ের শেষে উল্লেখিত সহীহ দোয়াগুলো পাঠ করবেন।৫. প্রতিদিনই কুরআনের কিছু অংশ তেলাওয়াত করবেন এবং বাড়িতে প্রতি তিন দিন পর পর, সূরা বাকারা তেলাওয়াত করবেন।৬. যথাসম্ভব দান সদকা করবেন।৭. কিছু নফল ‌ইবাদত করবেন, যেমন রাত জেগে কিয়াম বা সালাত আদায় করা, নফল রোযা রাখা ইত্যাদি। বেশি বেশি করে এগুলো। করবেন।৮. আল্লাহর দিকে ফিরে আসুন, বেশি বেশি দোয়া করবেন, যখন দোয়া কবুল হবে, তখন সময় চাইবেন।

৫৪. নবপ্রবর্তিত বৈরাগ্য ও ইবাদত

মানুষের ওপর জ্বিনের কর্তৃত্ব লাভ করার আরেকটি কারণ হল বিদ’আতী আযকার করা, যার জন্য আল্লাহ তা'আলা কোনো নির্দেশনা অবতীর্ণ করেননি।কিছু লোক অন্ধকার কক্ষের নির্জনতায় একা বসে কিছু আয়াত অথবা আল্লাহর নামসমূহ বিদ'আতী কায়দায় আওড়াতে থাকেন, একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে এটা পাঠ করেন, নির্দিষ্ট সংখ্যায় এটি পাঠ করেন এবং তারা মনে করেন এসব আয়াত বা এ নামসমূহের একজন সেবক রয়েছে, তাই তারা এ সেবকের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন এবং তারা তাকে ডাকতে থাকেন, কিন্তু শয়তান এসে দখল না করা পর্যন্ত তারা এ স্থান থেকে উঠে দাঁড়ান না।শায়খ আল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াহ (রহ) বলেন:সবশেষে বলতে চাই, বিপথগামী ও বিদআতে লিপ্ত মানুষ হল তারা, যারা শরীয়াহ বহির্ভূত বৈরাগ্যবাদ ও ইবাদত পালন করে, যারা কখনো। কখনো ভবিষ্যদ্বাণী করার চেষ্ট করে এবং এর মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করতে। চায়, শয়তান বা মন্দ জ্বিন যেখানে বিচরণ করে বা এ ধরনের আসরে, যেখানে সালাত আদায় করা নিষিদ্ধ, সেখানে প্রায়ই যাতায়াত করে, কারণ মন্দ জ্বিনরা এখানে আসে এবং তাদের সঙ্গে কিছু বিষয়ে কথা বলে, যেভাবে তারা গণকের সঙ্গে কথা বলে থাকে। [ইবনে তাইমিয়াহ, মাজমু আল ফাতওয়াহ, ১৯/৪১]

৫৫. অন্যান্য কারণসমূহ

জ্বিনের ভুল মানুষকে টার্গেট করাজ্বিন কখনো কখনো কোনো উদ্দেশ্য ছাড়াই ভুল মানুষকে টার্গেট করতে পারে, যেমনটি করে থাকে বোকা লোকরা।জ্বিনের মানুষের প্রেমে পড়াকখনো জ্বিন মানুষের প্রেমে পড়তে পারে এবং তাকে পাওয়ার আকাক্ষাও করতে পারে, ঠিক যেমনটি ঘটে মানুষের মাঝে, সুতরাং এ কারণেও জ্বিন মানুষের ওপর প্রভাব খাটাতে পারে। মানুষকে জ্বিনের শাস্তি দেয়াঅনেক সময় মানুষ না বুঝে কোনো জ্বিনের ক্ষতি করতে পারে, যেমন-জ্বিনের উপর পড়ে যাওয়া, জ্বিনকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করা, জ্বিনের উপর প্রস্রাব করা অথবা জ্বিনের দেহে গরম পানি ঢেলে দেয়া। এসব কারণে মানুষকে জ্বিন তার প্রাপ্যেরও অধিক মাত্রায় শাস্তি দিয়ে থাকে।

সেটিংস

বর্তমান ভাষা