৪৯৬. মাজলিসের আখিরী দোয়া
اَللَّهُمَّ اقْسِمْ لَنَا مِنْ خَشْيَتِكَ مَا يَحُولُ بَيْنَنَا وَبَيْنَ مَعَاصِيْكَ وَمِنْ طَاعَتِكَ مَا تُبَلِّغُنَا بِهِ جَنَّتَكَ وَمِنَ الْيَقِيْنِ مَا تُهَوِّنُ بِهِ عَلَيْنَا مُصِيْبَاتِ الدُّنْيَا وَمَتِّعْنَا بِأَسْمَاعِنَا وَأَبْصَارِنَا وَقُوَّتِنَا مَا أَحْيَيْتَنَا وَاجْعَلْهُ الْوَارِثَ مِنَّا وَاجْعَلْ ثَأْرَنَا عَلَى مَنْ ظَلَمَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى مَنْ عَادَانَا وَلَا تَجْعَلْ مُصِيْبَتَنَا فِي دِيْنِنَا وَلَا تَجْعَلِ الدُّنْيَا أَكْبَرَ هَمِّنَا وَلَا مَبْلَغَ عِلْمِنَا وَلَا تُسَلِّطْ عَلَيْنَا مَنْ لَا يَرْحَمُنَا
আল্লা-হুম্মাক্বসিম্ লানা- মিন্ খাশ্ইয়াতিকা মা- ইয়া’হূলূ বাইনানা- ওয়া বাইনা মা’আ-স্বীকা, ওয়া মিন্ ত্বা-‘আতিকা মা- তুবাল্লি’গুনা- বিহী জান্নাতাকা, ওয়া মিনাল ইয়াক্বীনি মা- তুহাওয়িনু বিহী ‘আলাইনা- মুস্বীবা-তিদ্ দুন্ইয়া-। ওয়ামাত্তি‘অ্না- বিআস্মা-’য়িনা- ওয়াআব্স্বা-রিনা- ওয়াক্বুওয়াতিনা- মা- ‘আহ্ইয়াইতানা-, ওয়াজ্’আল্হুল ওয়া-রিছা মিন্না-, ওয়াজ্’আল ছা’অ্রানা ‘আলা- মান্ যোলামানা- ওয়ান্স্বুর্না- ‘আলা- মান্ ‘আ-দা-না-, ওয়ালা-তাজ্'আল্ মুস্বীবাতানা- ফী দীনিনা- ওয়ালা- তাজ্’আলিদ দুন্ইয়া- আকবারা হাম্মিনা- ওয়ালা- মাব্লাগা ‘ইলমিনা- ওয়ালা- তুসাল্লিত্ব ‘আলাইনা- মান্ লা ইয়ার্‘হামুনা-
হে আল্লাহ্, আপনি আমাদেরকে আপনার ভয় করার তাওফীক দিন যে ভয় আমাদেরকে আপনার অবাধ্যতা থেকে রক্ষা করবে। এবং আপনি আমাদেরকে আপনার আনুগত্য করার তাওফীক প্রদান করুন, যে আনুগত্যের দ্বারা আপনি আমাদেরকে আপনার জান্নাতে পৌছাবেন। এবং আপনি আমাদেরকে দৃঢ় বিশ্বাস প্রদান করুন, যে বিশ্বাস আমাদের জন্য দুনিয়ার বিপদ-আপদকে সহজ করে দেবে। আপনি আমাদের শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি ও দেহের শক্তিকে আমাদের জন্য মরণ পর্যন্ত অক্ষুন্ন রাখুন এবং এগুলোকে বহাল রেখে আমাদের মৃত্যু দান করুন। যারা আমাদের জুলুম করেছে তাদের উপর আমাদের প্রতিশোধ অর্পণ করুন এবং যারা আমাদের শত্রুতা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সাহায্য করুন। আমাদের দীনকে বিপদযুক্ত করবেন না, দুনিয়াকে আমাদের চিন্তাভাবনার মূল বিষয় বানাবেন না এবং আমাদের জ্ঞানকে দুনিয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখবেন না। আমাদের প্রতি মমতাবিহীন কাউকে আমাদের উপর ক্ষমতাবান করবেন না।
আব্দুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ) বলেন, “রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) মাজলিস থেকে উঠার আগে এ কথা বলে তার সাথীদের জন্য দোয়া না করে খুব কমই মাজলিস ত্যাগ করতেন।” হাদীসটি হাসান। [তিরমিযী (৪৯-কিতাবুদ দাওয়াত, ৮০- বাব) ৫/৪৯২-৪৯৩] অন্য বর্ণনায় তাবিয়ী নাফি বলেন, “আব্দুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ) কোনো মাজলিসে বসলে মাসলিসে বসা মানুষদের জন্য এ কথাগুলো বলে দোয়া না করে দাঁড়াতেন না। [নাসায়ী, আস-সুনানুল কুবরা ৬/১০৬; ইবনুল আসীর, জামিউল উসূল ৪/২৭৯] লক্ষণীয় যে, এ দোয়া করার সময় রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ), তাঁর মাজলিসের সাহাবীগণ, আব্দুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ) বা তাঁর মাজলিসের মানুষেরা তাদের হাত উঠিয়ে দোয়া করতেন বলে বর্ণিত হয়নি। আমরা দেখেছি যে, সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর সুন্নাত বর্ণনায় অত্যন্ত আগ্রহী ও সচেষ্ট থাকতেন। কখনো দোয়ার সময় হাত উঠালে তারা তা বর্ণনা করেছেন। এজন্য যেখানে হাত উঠানোর কথা নেই সেখানে উঠাননি বলেই প্রমাণিত হয়। পাশাপাশি আমরা দেখেছি যে, দোয়ার সময় হাত উঠানো দোয়ার একটি আদব। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কখনো কখনো একাকী এবং কখনো কখনো সাহাবীদের সাথে হাত তুলে দোয়া করেছেন। হাদীসের আলোকে বুঝা যায় যে, মাজলিসের শেষে আলোচক মুখে দোয়ার বাক্যগুলো বলবেন এবং উপস্থিত মানুষেরা আমীন বলবেন। কখনো যদি সকলে হাত তুলে এ কথাগুলো বলে দোয়া করেন তবে তা অবৈধ বা বিদআত বলে গণ্য করার সুযোগ নেই। তবে সাধারণ ফযীলতের হাদীসের উপর নির্ভর করে এরূপ দোয়ার ক্ষেত্রে হাত উঠানো জরুরী বলে গণ্য করা বা হাত না উঠানোকে দুষণীয় বলে মনে করা বিদআত। হাদীসে যেহেতু বিষয়টি উন্মুক্ত সেহেতু বিষয়টিকে উন্মুক্ত রাখতে হবে।