পরিচ্ছেদ: জিনের চিকিৎসা রাক্কীর জরুরী জ্ঞাতব্য বিষয়

১৩৪

ইতিমধ্যে আমরা জ্বিন-আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার শরীয়ত-সম্মত পদ্ধতি বর্ণনা করেছি। এবার জাদুগ্রস্ত রোগীর প্রাথমিক রুকিয়াহসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে আলোচনা করা হবে। বিশেষত জ্বিন তাড়ানোর সময় আপনি যেসব পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারেন, সে বিষয়ে আমরা এখানে সম্ভাব্য বিশেষ কিছু অবস্থার আলোচনা করব। কখনো এর বাইরের কোনো পরিস্থিতিও দেখা দিতে পারে, সেক্ষেত্রে আল্লাহর সাহায্য চেয়ে আপনার উপস্থিত বুদ্ধি দ্বারা সমাধান করতে হবে।১. লক্ষণ মিলে যাওয়ার পর জ্বিন তাড়ানোর জন্য প্রথমে রুকিয়াহ করার পর যদি রোগীর মাথা ঘুরতে শুরু করে, দম বন্ধ হয়ে আসে, ঝটকা দিয়ে কেঁপে ওঠে কিন্তু কোনো জ্বিন কথা না বলে তাহলে আরও দুই-তিনবার রুকিয়াহ করে দেখুন। তারপর তাকে ওপরে বলা ‘চিকিৎসা-পরবর্তী পরামর্শ দিয়ে দিন। এর সাথে আরও তিনটি কাজ করতে বলুন—ক. প্রথমে ৭দিন ডিটক্স রুকিয়াহ করা।খ. সুস্থতার লাভের নিয়তে অন্তত এক মাস যত বেশি সম্ভব রুকিয়াহ শোনা। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩ ঘন্টা। যার মাঝে থাকবে-“সূরা বাকারা এবং ৮ সূরার রুকিয়াহ (সূরা ইয়াসীন, সফফাত, দুখান, জ্বিন, যিলযাল, ইখলাস, ফালাক এবং নাস), সূরা আল ইমরান, তাওবাহ, কাহাফ, হা মীম সাজদা (ফুসসিলাত), আর-রহমান, মুলক, তাকউই ইনফিতার, বুরুজ, ত্বরিক, আলা এবং শেষ ১৫টি সূরা।”লাভার জ্বিনের সমস্যা হলে বা জ্বিন সেক্সয়ালি টর্চার করলে সেক্ষেত্রে এই সূরা গুলো আগে “রুকিয়াহ যিনা, সূরা ইউসুফ এবং সূরা নূর” শোনা উচিত। আর কিছুদিন ‘আসল বা বশ করার জাদু” এর রুকিয়াহ করা উচিত।গ. সম্ভব হলে সূরা বাকারার ৫০টি থেকে ১০০টি আয়াত (সাধ্যে থাকলে আরও বেশি পড়ি) কিংবা অন্য জায়গার একপারা কুরআন তিলাওয়াত করা। এসব কিছু করার পর আবশ্যিকভাবে নিয়মিত অবস্থার আপডেট জানাতে বলুন। এক মাস পর যাচাই করে দেখুন—এই কয়দিনে জ্বিন চলে গেছে নাকি এখনো আছে। আল্লাহর ইচ্ছায় যদি জ্বিন চলে যায় তাহলে আর জ্বিন-আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণগুলো তার মানে পাওয়া যাবে না। আর যদি সমস্যা কিছু বাকি থাকে তাহলে রুকিয়াহ করে দেখুন। যেহেত এত দিনে জ্বিন অনেক দুর্বল হয়ে গেছে, তাই আশা করা যায় এবার সে চলে যেতে সম্মত হবে। তবুও যদি যেতে না চায় তাহলে আবার পূর্বের মতই প্রেসক্রিপশন দিয়ে দিন। আর গুরুত্বের সাথে এক মাস এগুলো করার পর আবার দেখা করতে বলুন।উল্লেখ্য, একবার রুকিয়াহ করার পর কোনো কারণবশত যদি জ্বিনের রোগীর জন্য লাগাতার কয়েকদিন সরাসরি রুকিয়াহ করা সম্ভব না হয়, সেক্ষেত্রেও এই পরামর্শগুলোই দেবেন। এরপর সুবিধামত সময় বলে দেবেন, যেন এতদিন পর দেখা করে অবস্থার আপডেট জানায়।২. রুকিয়াহ করার সময় জ্বিন কখনো অতিরিক্ত চিৎকার-চেঁচামেচি করতে পারে কিংবা হুমকি-ধমকি দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। জেনে রাখুন, সে বিপদে আছে। দেখেই এমন চেঁচাচ্ছে। এরকম অবস্থায় আপনি শান্ত থাকুন। আর কানের কাছে সূরা নিসার ৭৬ নং আয়াত পড়ুন-الَّذِينَ آمَنُوا يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّـهِ ۖ وَالَّذِينَ كَفَرُوا يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ الطَّاغُوتِ فَقَاتِلُوا أَوْلِيَاءَ الشَّيْطَانِ ۖ إِنَّ كَيْدَ الشَّيْطَانِ كَانَ ضَعِيفًا ﴿٧٦﴾অর্থঃ যারা ঈমান এনেছে তারা লড়াই করে আল্লাহর রাস্তায়, আর যারা কুফরী করেছে তারা লড়াই করে তাগূতের পথে। সুতরাং তোমরা লড়াই কর শয়তানের বন্ধুদের বিরুদ্ধে। নিশ্চয় শয়তানের চক্রান্ত দুর্বল। (সূরা নিসা: ৭৬)কানের কাছে এই আয়াত কয়েকবার পড়ুন এবং ফুঁ দিন, পানিতে ফুঁ দিয়ে ছিটিয়ে দিন। ইনশাআল্লাহ খবিস জ্বিন দুর্বল হয়ে যাবে।৩. কখনো কখনো জ্বিন আপনাকে রাগাতে চেষ্টা করবে, গালিগালাজ করবে। তখন আপনাকে শান্ত থাকতে হবে, রাগান্বিত হওয়া যাবে না। আপনি আপনার মতো রুকিয়াহ করতে থাকুন। কখনো হয়তো আপনাকে বলবে, ‘আপনি অনেক ভালো মানুষ, বিরাট বুজুর্গ। আপনার কথা মেনে চলে যাচ্ছি। এসব শুনে আহ্লাদিত হওয়া বা আত্মশ্লাঘা অনুভব করা যাবে না; বরং বলুন যে, আমি আল্লাহর সাধারণ একজন বান্দা। তুমি আল্লাহর বিধান মেনে এখান থেকে চলে যাও।কখনও আপনাকে বিভ্রান্ত করার জন্য জ্বিন হা হা করে হেসে উঠবে, বলবে এসবে আমার কিছুই হবে না, আমার কিছু করতে পারবি না, ইত্যাদি...।' যেন আপনি হতাশ হয়ে রুকিয়াহ বন্ধ করে দেন। সুতরাং এসব কথায় পাত্তা দিবেন না, উল্টা ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দিন আর নিজের মত তিলাওয়াত করতে থাকুন।৪. জ্বিনের রোগীর ওপর রুকিয়াহ চলাকালীন কখনো অন্য জ্বিন এসে আপনাকে সহযোগিতা করার প্রস্তাব দিতে পারে। সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করুন। বলুন, তোমরা যা খুশি করতে পারো। তবে আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।কখনো ঘুমের মাঝে শয়তান এসে আপনাকে সম্পদ বা গুপ্তধনের লোভ দেখাতে পারে। ভুলেও শয়তানের ফাঁদে পা দেবেন না। বহু মানুষ এই ফাঁদে পড়ে নিজের এবং পরিবারের সর্বনাশ ডেকে এনেছে।৫. জ্বিনের রোগীর রুকিয়াহর ক্ষেত্রে বড় একটা সমস্যা হচ্ছে, রুকিয়াহ চলাকালীন ভেতরের জ্বিন রোগীর শারীরিক ক্ষতি করতে চেষ্টা করে, যেন জ্বিন চলে গেলেও একটা ক্ষতি থেকে যায়। যেমন: গলা টিপে ধরে, মুখে খামচি মারে, আঘাত করে ইত্যাদি। এজন্য উপস্থিত অন্যদের সতর্ক থাকতে বলবেন। প্রয়োজনে কাউকে বলবেন হাত ধরে রাখতে। আর আশেপাশে এমন কিছু রাখবেন না, যা দ্বারা রোগী নিজেকে আঘাত করতে পারে।৬. জ্বিনের রুকিয়াহ করার সময় যদি শুধু রোগীর কাঁধ বা পিঠ ব্যথা করে, বমি বমি লাগে অথবা কোনো কারণ ছাড়াই কাঁদতে থাকে, তাকে কান্না থামাতে বলুন। যদি সে বলে, ‘আমি নিজেকে সামলাতে পারছি না, এমনিতেই কান্না পাচ্ছে তাহলে সম্ভবত তাকে জাদু করা হয়েছে। তখন রোগীর কানের কাছে সিহরের অর্থাৎ জাদু সংক্রান্ত আয়াতগুলো (সূরা আরাফ: ১১৭-১২২, সূরা ইউনুস: ৮১-৮২, সূরা ত্বহা: ৬৯) কয়েকবার করে পড়ুন। এরপর যদি দেখেন কান্না বাড়ছে, বমি বমি লাগছে কিংবা এখনও শরীরের কোথাও ব্যথা অনুভব করছে তাহলে বুঝতে হবে, সত্যিই যে জাদু আক্রান্ত। সেক্ষেত্রে জাদুর জন্য রুকিয়াহ করতে হবে।এক্ষেত্রে দুই-তিন সপ্তাহ সিহরের সাধারণ রুকিয়াহ করে আপডেট জানাতে বলুন। এরপরও যদি সমস্যা থাকে তাহলে তখন সমস্যা অনুযায়ী নির্দিষ্ট জাদুর চিকিৎসা দিন, এসব বিষয়ে পরের অধ্যায়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।৭. বাচ্চাদের রুকিয়াহর ক্ষেত্রে সর্বদা বাচ্চার নিরাপত্তা এবং স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে খেয়াল রাখবেন। যেহেতু বাচ্চার আচরণ ও মানসিকতা পূর্ণবয়স্ক মানুষের মতো না, তাই বাচ্চার সাথে পূর্ণবয়স্ক মানুষের মতো আচরণ করা যাবে না। এক জায়গায়, একইভাবে দীর্ঘ সময় বসে থাকতে বাধ্য করা যাবে না। একটু পরপর খেয়াল করতে হবে, কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না। বাচ্চার কাছে আপনি অপরিচিত কেউ হয়ে থাকলে রুকিয়াহ করার আগে ও পরে তার সাথে কিছু সময় কাটান, গল্প করুন অথবা হালকা খেলাধুলাও করতে পারেন। রুকিয়াহর মাঝে তাকে বলতে পারেন,‘আমার সাথে সাথে পড়ো’; যাতে করে সে আপনাকে সহজ ভাবে নেয়। যেহেতু বাচ্চাদের গুনাহ থাকে না, তাই তাদের রুকিয়াহতে আল্লাহর রহমতে বেশ দ্রুত ফল পাওয়া যায়।বিশেষ সতর্কতা: রুকিয়াহর সময় কখনোই বাচ্চাদের প্রহার করবেন না।৮. কখনো জ্বিন কিছু শর্ত দেয়। বলে যে, এই করতে হবে, সেই করতে হবে, তাহলে আমি চলে যাব। এ ক্ষেত্রে যদি সেটা ইসলাম-সমর্থিত হয়—যেমন: নামায-কালাম পড়তে হবে, পর্দা করতে হবে—এরকম কিছু হলে বলুন, আল্লাহর বিধান হিসেবে মানতে রাজি আছি। কিন্তু শরীয়ত পরিপন্থী কিছু হলে, বিষয়টা কোনো পাপের কাজ হলে বা কোনো কিছু উৎসর্গ করতে বললে মানবেন না; বরং এসব বলার জন্য তাকে শাস্তি দিন।৯. অনেক সময় জ্বিন বোঝাবে, সে আক্রান্ত ব্যক্তিকে ছেড়ে চলে গেছে। অথচ তখনও সে ওই শরীরের মধ্যে আছে। এমনকি যখন কথা বলবে তখন আক্রান্ত ব্যক্তির মতোই বলবে। এই অবস্থায় কীভাবে বুঝবেন যে, জ্বিন চলে গেছে নাকি এখনো আছে? এমতাবস্থায় আপনি যদি রোগীর মাথায় হাত রাখেন তাহলে অস্বাভাবিক কাঁপুনি বুঝতে পারবেন। এছাড়াও হৃদস্পন্দন পরীক্ষা করলে অস্বাভাবিক হারে হৃদস্পন্দন টের পাবেন। শরীরের কোন অঙ্গ অবশ হয়ে থাকবে অথবা ব্লাড প্রেশার অনেক বেশি দেখতে পাবেন। তখন আবার রুকিয়াহ করলে দেখবেন, জ্বিন কথা বলতে শুরু করছে।১০. মাঝে মাঝে জ্বিনের কাছে ওয়াদা নেওয়ার সময় পালিয়ে যায়। অর্থাৎ যখন চলে যাবার জন্য ওয়াদাবদ্ধ হবে ঠিক তখনই পালিয়ে যায়। এমন হলে সূরা আর-রাহমানের ৩৩ থেকে ৩৬ এই চার আয়াত বারবার পড়ুন।১১. কখনো এমন হয় যে, জ্বিন চলে যেতে রাজি হয়; কিন্তু অনভিজ্ঞ হওয়ার কারণে শরীর থেকে বের হতে পারে না। এ ক্ষেত্রে আপনার উচিত হবে তাকে সহায়তা করা। আপনি তার কানে আযান দিন, এরপর সূরা ইয়াসীন পুরোটা পড়ুন, তারপর আবার আযান দিন। এতে করে ইনশাআল্লাহ সে চলে যাবে। যদি রোগীকে জাদু করা হয় আর এজন্য জ্বিন আটকে থাকে তাহলে কিছুদিন সিহরের তথা জাদুর রুকিয়াহ করার পরামর্শ দিন, সম্ভব হলে তিন দিন পর্যন্ত ‘বরই পাতা বেটে গোসল করার নিয়ম অনুসরণ করতে বলুন। এরপর আবার রুকিয়াহ করুন। ইনশাআল্লাহ এবার জ্বিন বের হতে পারবে।১২. অনেক সময় আপনাকে ভয় দেখানো বা ঘাবড়ে দেওয়ার জন্য জ্বিন বলবে, এখানে আমি একা না। আমার সাথে আরও দুইজন আছে, চারজন আছে, ৪০ জন আছে।' এ ক্ষেত্রে তার কথাকে পাত্তা দেওয়া যাবে না। উল্টো তাকে ধমক দিয়ে বলতে হবে, যতজন আছিস সব ভাগ, নইলে সব একসাথে মরবি। সে যা-ই বলুক না কেন, চলে যাওয়ার পর আবার রুকিয়াহ করলেই বোঝা যাবে, অন্য কেউ আছে কি না।১৩. সবসময় একদিনের রুকিয়াহতে জ্বিন চলে নাও যেতে পারে। এসব ক্ষেত্রে প্রতিদিন এক নাগাড়ে কয়েকঘন্টা করে রুকিয়াহ করতে হবে। এতে হয়তো জ্বিন মারা পড়বে অথবা যখন একদম মৃতপ্রায় হয়ে যাবে, তখন কোনো রকম জান নিয়ে পালাতে বাধ্য হবে। ক্ষেত্র বিশেষে জ্বিনের রোগীর জন্য এক সপ্তাহ থেকে শুরু করে কয়েকমাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। এমতাবস্থায় প্রতিদিন রুকিয়াহ করা সম্ভব হলে ভালো, নইলে প্রথম পয়েন্টে বলা পরামর্শ অনুসরণ পাশাপাশি রুকিয়াহর আয়াতগুলো পড়ে পানি খাওয়া, রুকিয়াহর। গোসল করা, প্রতিমাসে এক-দুই বার এই গ্রন্থের শেষে আলোচিত ডিটক্স রুকিয়াহ করা বেশ উপকারি ভূমিকা পালন করবে ইনশাআল্লাহ।১৪. জ্বিন চলে গেলেও সব লক্ষণ দূর হওয়া পর্যন্ত রুকিয়াহ চালিয়ে যেতে হবে, যেন আপদ আর ফিরে না আসে। এজন্য জ্বিন চলে যাওয়ার পর তৃতীয় ধাপ: চিকিৎসা পরবর্তী পরামর্শ যেন কমপক্ষে এক থেকে দেড় মাস গুরুত্বের সাথে অনুসরণ করে, এটা ভালোভাবে বলে দিতে হবে। প্রয়োজনে আরও বেশি সময় নিতে হবে।১৫. খেয়াল রাখার বিষয় হচ্ছে, রুকিয়াহ করার সময় প্রথম প্রথম কিছুদিন সমস্যা বাড়তে পারে। এতে ঘাবড়ে গিয়ে রুকিয়াহ বন্ধ করে দেওয়া যাবে না। কিছুদিনের মধ্যে সমস্যা ক্রমশ কমে আসবে। এভাবে আস্তে আস্তে জ্বিন-আক্রান্ত হওয়ার যত লক্ষণ আছে, সবগুলো দূর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।শেষ কথা হচ্ছে, রুকিয়াহ চালিয়ে যান, পাশাপাশি দোয়া এবং সাদকা করুন। সকাল-সন্ধ্যার অন্যান্য সুন্নাত আমলগুলো গুরুত্বের সাথে পালন করুন। আল্লাহ চাইলে সমস্যাগুলো একদম ভালো হয়ে যাবে। যদি আল্লাহ আপনার হাতে রোগীকে সুস্থ করেন তাহলে তাকে বলুন, যেন আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে। আর আপনিও আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করুন। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।

সেটিংস

বর্তমান ভাষা