পরিচ্ছেদ: একজন ভালো রাক্কীর বৈশিষ্ট্য
১৩৩
যে সকল জিনিস রাক্বী ও রোগীর মাঝে থাকলে আল্লাহ্ চাহে ঝাড়ফুঁক দ্বারা পূর্ণ উপকার পাওয়া যায়:১. রুকিয়াহকারী সৎ ও আমলদার ব্যক্তি হওয়া।২. কোন রোগের জন্য কোন আয়াত ও জিকির উপযুক্ত তা ঝাড়ফুঁককারীর জন্য জানা।৩. রোগীকে সঠিক ঈমান ও তাকওয়ার অধিকারী হওয়া এবং সর্বপ্রকার হারাম কার্যাদি ও জুলুম থেকে বিরত থাকা। কারণ, রুকিয়াহঅধিকাংশ সময় পাপ ও নিকৃষ্ট কাজে লিপ্ত ব্যক্তির মাঝে প্রভাব ফেলে না।৪. আক্কীদা বিশুদ্ধ হওয়া। শিরক-বিদআতমুক্ত পরিচ্ছন্ন ইসলামী আক্বীদা অনুসারী হওয়া এবং আল্লাহর ওপর নিখাদ ভরসা থাকা।৫. আল্লাহর কালাম যে রোগব্যাধি, বদনজর, জাদু, জ্বীনের ওপর প্রভাব ফেলতে সক্ষম—এ ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাস রাখা। সুস্থতা কেবল আল্লাহরই হাতে, আমার কোন সাধ্য নেই মানুষকে সুস্থ করার—এটা খুব ভালভাবে অন্তরে গেঁথে নেয়া। কোন রুগী সুস্থতা লাভ করার খবর পেলে আত্মগর্বে আক্রান্ত না হওয়া বরং আল্লাহর প্রতি কতজ্ঞতা জানানো। শোকরানা সিজদা আদায় করা। এর ভাল প্রভাব রয়েছে।৬. প্রতিদিনের মৌলিক আহকাম তথা নামায-রোজা, মাহরাম-গাইর মাহরাম ইত্যাদি বিষয়ে যত্নবান হওয়া। হালাল-হারামের ব্যাপারে যত্নবান হওয়া, হারাম থেকে সম্পূর্ণভাবে বেঁচে থাকা।৭. মানসিকভাবে দৃঢ় এবং সাহসী হওয়া। আর অধিক পরিমাণে যিকির-আযকার, নফল রোজা, তাহাজ্জুদ ইত্যাদির মাধ্যমে আত্মিকভাবেও সুদৃঢ় হওয়া।৮. জ্বীন জাতির অবস্থা তথা: প্রকারভেদ, সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, তাদের আচার-আচরণ, জ্বীনেরা কীভাবে মানুষের ওপর প্রভাব বিস্তার করে, এরপর তারা কীভাবে বিদায় হয় ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে অবগত থাকা। জ্বীনদের মাঝে মিথ্যা বলার প্রবণতা খুবই বেশি। এজন্য জ্বীনদের স্বভাব, ধোঁকাবাজি, কূটকৌশলের ব্যাপারে সজাগ এবং সতর্ক থাকা।৯. জাদু, জ্বীন, বদনজর, ওয়াসওয়াসা—এই সব বিষয়গুলোতে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপারে পর্যাপ্ত ধারণা রাখা।অজ্ঞতা নিয়ে কাজে নেমে অন্যদের কাজের ক্ষেত্র নষ্ট না করা।১০. কুরআন তিলাওয়াত সহীহ-শুদ্ধ হওয়া। অশুদ্ধভাবে কুরআন পড়লে উল্টা গুনাহ হবে।১১. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে বর্ণিত প্রতিদিনের মাসনূন আমলগুলোর প্রতি যত্নবান হওয়া। বিভিন্ন সময়ে হেফাজতের দোয়া যেমন: সকাল-সন্ধ্যার দোয়া, ঘুমের আগের দোয়া, বাড়ি থেকে বের হওয়ার দোয়া, নির্জন জায়গায় গেলে পড়ার দোয়া, টয়লেটে প্রবেশের দোয়া—এসব গুরুত্বের সাথে আদায় করা। প্রয়োজনীয় কিছু দোয়া এই গ্রন্থের ‘মাসনূন আমল’ অংশে পাওয়া যাবে। এছাড়াও অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য গ্রন্থের সহায়তা নিতে পারেন। যেমন: হিসনুল মুসলিম, হিসনে হাসীন, সিলাহুল মুমিন, আযকারে মাসনূনাহ, নবীজির দোয়া, আযকার ইত্যাদি।১২. নিজের পরিবারের সদস্যদের ব্যাপারে যত্নবান হওয়া, তাদের প্রতিদিনের মাসনূন আমলগুলোতে অভ্যস্ত করে তোলা। তাদের অধিকারের ব্যাপারে সবসময় সতর্ক থাকা। রুকিয়াহ নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে যেন কোনোভাবেই তাদের হক নষ্ট না হয়।১৩. নিজের বাড়িকে গুনাহের সরঞ্জাম থেকে পবিত্র রাখা। যেমন: কোনো জীবের ছবি, ভাস্কর্য বা মূর্তি, মানুষ বা প্রাণীর পুতুল সাজিয়ে বা ঝুলিয়ে না রাখা। গান-বাজনা না চলা, বাদ্যযন্ত্র না রাখা; ঘরে যেন রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করতে পারে আর শয়তান না। থাকতে পারে—সেই ব্যবস্থা করা।