পরিচ্ছেদ: পরিশিষ্ট-২
১৬৩
নিম্নে সালাম ফিরানোর পর নবী (ﷺ) থেকে যে সব দোয়ার কথা বিশুদ্ধ হাদীসে এসেছে তাও সন্নিবেশিত হল।সলাত সমাপ্তির পর পঠিতব্য দোয়া ও যিক্রসমূহনবী (ﷺ) থেকে সাব্যস্ত সহীহ সুন্নাহ অনুযায়ী মুসলিম ব্যক্তির জন্য প্রতি ফরয সলাত শেষে নিম্নোক্ত যিক্রসমূহ পাঠ করা বাঞ্ছনীয়ঃসালাম ফিরে ৩ বার বলবে -أَسْتَغْفِرُ اللَّهَউচ্চারনঃ আস্-তাগফিরুল্লা-হঅর্থঃ আমি আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চাই।অতঃপর একবার পড়বেঃاَللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلَامُ وَمِنْكَ السَّلَامُ تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِউচ্চারনঃ আল্লা-হুম্মা আনতাস সালা-ম ওয়া মিনকাস সালা-ম, তাবা-রাকতা ইয়া যাল জালা-লি ওয়াল ইকরা-ম।অর্থঃ হে আল্লাহ্, আপনিই সালাম (শান্তি), আপনার থেকেই শান্তি, হে মহাসম্মানের অধিকারী ও মর্যাদা প্রদানের অধিকারী, আপনি বরকতময়। (মুসলিমঃ ৫৯১)لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ، اَللَّهُمَّ لَا مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ، وَلَا مُعْطِىَ لِمَا مَنَعْتَ، وَلَا يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّউচ্চারনঃ লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু, ওয়া’হ্দাহু লা- শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু, ওয়া লাহুল ‘হামদু, ওয়া হুআ ‘আলা- কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর। আল্লা-হুম্মা, লা- মা-নি'আ লিমা- আ’ত্বাইতা, ওয়ালা- মু’ত্বিয়া লিমা- মানা’তা, ওয়ালা- ইয়ান্ফা'উ যাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দুঅর্থঃ আল্লাহ্ ছাড়া কোনো প্রকৃত মাবুদ নেই, তিনি একক, তার কোনো শরীক নেই। রাজত্ব তারই এবং প্রশংসা তারই। তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ্, আপনি যা দান করেন তা ঠেকানোর ক্ষমতা কারো নেই। আর আপনি যা না দেন তা দেওয়ার ক্ষমতাও কারো নেই। কোনো ভাগ্যবানের ভাগ্য বা পরিশ্রমীর পরিশ্রম আপনার ইচ্ছার বাইরে কোনো উপকারে লাগে না। (বুখারীঃ ৮৪৪)ফজর ও মাগরিব সলাতের পরلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ يُحْيِي وَيُمِيتُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌউচ্চারনঃ লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু, ওয়া‘হ্দাহু লা- শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু, ওয়া লাহুল ‘হামদু, ইউ‘হ্য়ী ওয়া ইউমীতু ওয়া হুআ ‘আলা- কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীরঅর্থঃ আল্লাহ্ ছাড়া কোনো প্রকৃত মাবুদ নেই, তিনি একক, তার কোনো শরীক নেই। রাজত্ব তারই এবং প্রশংসা তাঁরই। তিনিই জীবন দান করেন এবং মৃত্যু দান করেন। তাঁর হাতেই সকল কল্যাণ এবং তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান। (হাসান। তিরমিযীঃ ৩৫৩৪)لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَلَا نَعْبُدُ إِلَّا إِيَّاهُ لَهُ النِّعْمَةُ وَلَهُ الْفَضْلُ وَلَهُ الثَّنَاءُ الْحَسَنُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُوْنَউচ্চারনঃ লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া’হদাহু লা- শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল ‘হামদু, ওয়া হুআ ‘আলা- কুল্লি শাইইন ক্বাদীর। লা- ‘হাওলা ওয়ালা- ক্বুওয়্যাতা ইল্লা- বিল্লা-হ, লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়ালা- না্‘বুদু ইল্লা-ইয়্যা-হু। লাহুন নি’মাতু, ওয়া লাহুল ফা্দ্বলু, ওয়ালাহুছ ছানা-উল ‘হাসান। লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু মুখলিসীনা লাহুদ্দীনা ওয়ালাও কারিহাল কা-ফিরূন।অর্থঃ আল্লাহ্ ছাড়া কোনো প্রকৃত মাবুদ নেই, তিনি একক, তার কোনো শরীক নেই। রাজত্ব তাঁরই এবং প্রশংসা তারই। তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান। আল্লাহ্র দ্বারা ও আল্লাহ্র মাধ্যম ছাড়া কোনো অবলম্বন নেই এবং কোনো ক্ষমতা নেই। আমরা আল্লাহ্ ছাড়া কারো ইবাদত করি না। নিয়ামত তাঁরই, দয়া তাঁরই এবং উত্তম প্রশংসা তাঁরই। আল্লাহ্ ছাড়া কোন প্রকৃত মাবুদ নেই। আমাদের দ্বীন বিশুদ্ধভাবে শুধুমাত্র তারই জন্য, এতে যদিও কাফিরগণ অসন্তষ্ট হয়। (মুসলিমঃ ৫৯৪)যে ব্যক্তি প্রত্যেক সলাতের পরে আল্লাহর পবিত্রতা জ্ঞাপন করে, অর্থাৎ সুবহানাল্লাহ বলে ৩৩ বার, প্রশংসা জ্ঞাপন করে অর্থাৎ আল-হামদুলিল্লাহ বলে ৩৩ বার এবং মহানত্ব বর্ণনা করে অর্থাৎ আল্লাহু আকবার বলে ৩৩ বার, এই হলো নিরানব্বই বার। অতঃপর একশত পূর্ণ করে এ দোয়ার মাধ্যমেঃلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌউচ্চারনঃ লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু লা- শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা- কুল্লি শাই’ইন ক্বাদীর।অর্থঃ একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই, রাজত্ব তাঁরই, সকল প্রশংসা তাঁরই এবং তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।তাহলে পাঠকারীর গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হয়; যদিও তা সমুদ্রের ফেনা বরাবর হোক না কেন। (মুসলিম ১/৪১৮, নং ৫৯৭)اَللَّهُمَّ أَعِنِّى عَلَى ذِكْرِكَ وَشُكْرِكَ وَحُسْنِ عِبَادَتِكَউচ্চারনঃ আল্লা-হুম্মা, আ’ইন্নী ‘আলা- যিক্রিকা ওয়া শুকরিকা ওয়া 'হুসনি ‘ইবা-দাতিক।অর্থঃ হে আল্লাহ্, আপনি আমাকে আপনার দোয়া করতে, কৃতজ্ঞতা আদায় করতে এবং আপনার ইবাদত সুন্দরভাবে করতে তাওফীক ও ক্ষমতা প্রদান করুন। (সহীহ। আবু দাউদঃ ১৫২২)اَللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْبُخْلِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْجُبْنِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ أَنْ أُرَدَّ إِلَى أَرْذَلِ الْعُمُرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الدُّنْيَا وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِউচ্চারনঃ আল্লা-হুম্মা, ইন্নী আ‘ঊযু বিকা মিনাল বুখ্লি ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিনাল জুব্নি ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিন আন উরাদ্দা ইলা- আরযালিল 'উমুরি ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিন ফিতনাতিদ দুনইয়া- ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিন ‘আযা-বিল, ক্বাব্র।অর্থঃ হে আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে কৃপণতা থেকে আশ্রয় চাই ভীরুতা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই; তোমার কাছে আশ্রয় চাই, যেন নিকৃষ্টতর বয়সে পৌঁছে না যাই; তোমার কাছে দুনিয়ার পরীক্ষা থেকে আশ্রয় চাই; আর তোমার কাছে আশ্রয় চাই কবরের পরীক্ষা থেকে। (বুখারীঃ ৬৩৭০)নবী (ﷺ) সলাত শেষে সালামের পর বলতেনঃاَللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي مَا قَدَّمْتُ وَمَا أَخَّرْتُ وَمَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ وَمَا أَسْرَفْتُ وَمَا أَنْتَ أَعْلَمُ بِهِ مِنِّي أَنْتَ الْمُقَدِّمُ وَأَنْتَ الْمُؤَخِّرُ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَউচ্চারনঃ আল্লা-হুম্মাগ্ফির লী মা- ক্বাদ্দামতু ওয়ামা- আখ্খারতু ওয়ামা- আস্রারতু ওয়ামা- আ’লান্তু ওয়ামা- আস্রাফতু ওয়ামা- আনতা আ’লামু বিহী মিন্নী। আনতাল মুক্বাদ্দিমু ওয়া আনতাল মুআখ্খিরু লা- ইলা-হা ইল্লা- আনতা।অর্থঃ হে আল্লাহ্, আপনি ক্ষমা করে দেন আমার আগের পাপ, পরের পাপ, গোপন পাপ, প্রকাশ্য পাপ, আমার বাড়াবাড়ি এবং যে সকল পাপের কথা আপনি আমার চেয়ে বেশী জানেন। আপনিই অগ্রবর্তী করেন এবং আপনিই পিছিয়ে দেন। আপনি ছাড়া কোন প্রকৃত উপাস্য নেই। (মুসলিমঃ ৭৭১)উকুবাহ্ বিন আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে আদেশ প্রদান করেছেন প্রতি সলাতের পরে “কুল আ’উযুবি রাব্বিল ফালাক ও কুল আ’উযুবি রব্বিন নাস” পড়ার জন্য। (হাদীসটি সহীহ, আবু দাউদঃ ১৫২৩)কোন কোন বর্ণনাতে সূরাহ ইখলাস পড়ার কথাও আছে। সূরা তিনটি মাগরিব ও ফজরের পর তিনবার করে এবং বাকী সলাতের পর একবার করে পাঠ করবে।যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয সলাতের পর আয়াতুল কুরসী। (সূরা বাক্বারার ২৫৫ নং আয়াত) পাঠ করে তার জন্য জান্নাতে যাওয়ার ব্যাপারে কোন কিছু বাধা দানকারী থাকে না একমাত্র মৃত্যু ছাড়া। অর্থাৎ মুত্যুবরণ করে না হেতু জান্নাতে প্রবেশ করতে পারে না। (হাদীসটি ইমাম নাসাঈ বর্ণনা করেছেন, বিশ্ব বিখ্যাত মুহাদ্দিস আলবানী সহীহ প্রমাণ করেছেন।) (সহীহুল জামেঃ ৬৪৬৪)নবী (ﷺ) ফজরের সলাতের সালামান্তে বলতেনঃاَللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا وَرِزْقًا طَيِّبًا وَعَمَلًا مُتَقَبَّلًاউচ্চারনঃ আল্লা-হুম্মা, ইন্নী আস্আলুকা ই’লমান না-ফি’আন, ওয়া রিয্ক্বান ত্বাইয়িবান, ওয়া ‘আমালান মুতাক্বাব্বালান।অর্থঃ হে আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে চাই উপকারী জ্ঞান, পবিত্র জীবনোপকরণ ও (তোমার নিকট) কবুল হওয়ার মতো আমল। (সহীহ। ইবনু মাজাহঃ ৯২৫)নবী (ﷺ) বিত্র সলাতের পর-سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْقُّدُّوْسِ رَبُّ الْمَلَائِكَةِ وَالرُّوحِউচ্চারনঃ সুব’হা-নাল মালিকিল ক্বুদ্দূস, রাব্বুল মালা-ইকাতি ওয়ার-রূহ।অর্থঃ পবিত্রতা ঘোষণা করছি মহা-পবিত্র মালিকের। যিনি সকল ফেরেশতা ও জিবরীলের মনিব।এ দোয়াটি তিনবার পড়তেন। তৃতীয়বার উঁচু ও দীর্ঘ স্বরে পড়তেন। (সুনানে দারা কুত্বনী ২/৩১, মু'জামুল আওসাত্ব ৮/১০৮, সুনানে বায়হাকি ৩/৪০)