পরিচ্ছেদ: পরিশিষ্ট-১
১৬২
পরিশেষে সলাতের ভিতরে দোয়ার যে বিভিন্ন ক্ষেত্র রয়েছে যেগুলোর পরিচয় ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রহঃ) তুলে। ধরেছেন তা এখানে সন্নিবেশিত হল। তিনি বলেনঃ সলাতের যে সব ক্ষেত্রগুলোতে নবী (ﷺ) দোয়া করতেন তা সাতটি।১. তাকবীরে তাহরীমার পর সলাতের শুরুতে। (এখানে সানার দোয়াগুলো উদ্দেশ্য; যা একাধিক রয়েছে যেমন সুবহানাকা..., ও আল্লাহুম্মা বা'য়িদ বাইনী... ওয়াজ্জাহতু ইত্যাদি)২. বিত্রের সলাতে কিরাআত শেষে রুকুর পূর্ব মুহুর্তে। (রসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে রুকুর পূর্বে বা পরে উভয় ক্ষেত্রেই দোয়া-এ কুনুত সাব্যস্ত আছে।)৩. রুকূ থেকে দাঁড়ানোর পর। যেমন “সহীহ মুসলিমে” আব্দুল্লাহ ইবনু আবী আওফা থেকে বর্ণিত, নবী (ﷺ) রুকূ থেকে মাথা উঠিয়ে বলতেনঃاللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَوَاتِ وَمِلْءَ الأَرْضِ وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَىْءٍ بَعْدُ، اللَّهُمَّ طَهِّرْنِي بِالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ وَالْمَاءِ الْبَارِدِ اللَّهُمَّ طَهِّرْنِي مِنَ الذُّنُوبِ وَالْخَطَايَا كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الأَبْيَضُ مِنَ الْوَسَخِউচ্চারনঃ আল্লা-হুম্মা, রাব্বানা- লাকাল ‘হামদু, মিলআস সামাওয়া-তি ওয়া মিলআল আরদ্বি ওয়া মিলআ মা- শি‘তা মিন শাইয়িন বা’দু, আল্লা-হুম্মা ত্বাহ্হিরনী বিছ্-ছালজি ওয়াল বারাদি ওয়াল মা-ইল বা-রাদ, আল্লা-হুম্মা ত্বাহ্হিরনী মিনায যুনূবী ওয়াল খাত্বা-ইয়া কামা- ইউনাক্বাছ ছাওবুল আব্ইয়াদু মিনাল ওয়াসাখ।অর্থঃ হে আল্লাহ! তোমার জন্য ঐ পরিমাণ প্রশংসা-যা আসমান ও জমিনকে পরিপূর্ণ করে দেয়। অতঃপর তুমি যা চাও তা দিয়ে পরিপূর্ণ করো। হে আল্লাহ! আমাকে বরফ, কুয়াশা, ঠাণ্ডা পানি দিয়ে পবিত্র করে দাও। হে আল্লাহ! সাদা কাপড় যেভাবে ময়লা থেকে পরিষ্কার হয়ে ধবধবে সাদা হয়ে যায়, আমাকেও তদ্রুপ যাবতীয় গুনাহ থেকে পবিত্র করে দাও। (মুসলিমঃ ৪৭৬)৪. রুকুর অবস্থায় তিনি বলতেনঃسُبْحَانَكَ اَللَّهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ، اَللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيউচ্চারনঃ সুবহা-নাকা আল্লা-হুম্মা রব্বানা ওয়াবিহামদিকা, আল্লা-হুম্মাগফির লী।অর্থঃ হে আমাদের রব আল্লাহ্! তুমি ত্রুটিমুক্ত। প্রশংসা সবই তোমার। হে আল্লাহ্! আমাকে ক্ষমা করে দাও। (বুখারীঃ ৭৯৪)এছাড়াও বেশ কিছু দোয়া রয়েছে।৫. সাজদা অবস্থায়। আর এই অবস্থায়ই তার বেশীর ভাগ দোয়া ছিল, এগুলোর মধ্যে রয়েছেঃاَللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذَنْبِيْ كُلَّهُ دِقَّهُ وَجِلَّهُ، وَأَوَّلَهُ وَآخِرَهُ، وَعَلَانِيَّتَهُ وَسِرَّهُউচ্চারনঃ আল্লা-হুম্মাগ্ ফির লী যাম্বী কুল্লাহু, দিক্কাহু ওয়া জিল্লাহু, ওয়া আউআলাহু ওয়া আ-খিরাহু, ওয়া ‘আলা-নিয়্যাতাহু ওয়া সিররাহু।অর্থঃ হে আল্লাহ্, আপনি ক্ষমা করুন আমার সকল পাপ, ছোট পাপ, বড় পাপ, প্রথম পাপ, শেষ পাপ, প্রকাশ্য পাপ, গোপন পাপ। (মুসলিমঃ ৪৮৩)এছাড়াও অন্যান্য যেসব দোয়া নবী (ﷺ) পড়তেন সেগুলো থেকে এমনকি এর বাইরে থেকেও যে কোন দোয়া এ স্থানে পড়া চলবে।৬. দু' সাজদার মধ্যবর্তী সময়। নবী (ﷺ) এই বৈঠকে নিম্নোক্ত দোয়া পড়তেনঃاَللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَارْحَمْنِي وَاجْبُرْنِي وَارْفَعْنِي وَاهْدِنِي وَعَافِنِي وَارْزُقْنِيউচ্চারনঃ আল্লা-হুম্মাগফিরলী, ওয়ারহামনী, ওয়াজবুরনী, ওয়ারফানী, ওয়াহুদিনী, ওয়াআফিনী, ওয়ারযুকনী।অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি আমাকে ক্ষমা কর, দয়া কর, ক্ষতি। পূরণ কর, আমাকে উন্নীত কর, পথ প্রদর্শন কর, নিরাপদে রাখ এবং জীবিকা দান কর।৭. তাশাহ্হুদ ও দরুদের পর সালামের পূর্ব মুহুর্তে। (যাদুল মাআদ ১/২৪৮-৪৯ কিছু বৃদ্ধিসহ)এ সকল দোয়ার সুযোগ সলাতের ভিতরেই রয়ে গেছে।