পরিচ্ছেদ: দোয়া ও প্রার্থনার ফযীলত

০৪. দোয়া এক মহান ইবাদত

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,﴿وَقَالَ رَبُّكُمُ ٱدۡعُونِيٓ أَسۡتَجِبۡ لَكُمۡۚ إِنَّ ٱلَّذِينَ يَسۡتَكۡبِرُونَ عَنۡ عِبَادَتِي سَيَدۡخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ﴾ [غافر: ٦٠]“তোমাদের রব বলেন, তোমরা আমার কাছে প্রার্থনা কর, আমি তোমাদের প্রার্থনা কবুল করব। যারা অহংকারবশতঃ আমার ইবাদত থেকে বিমুখ তারা অবশ্যই জাহান্নামে প্রবেশ করবে লাঞ্ছিত হয়ে”। [সূরা আল-মুমিন, আয়াত: ৬০] রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন,«الدُّعَاءُ هُوَ العِبَادَةُ»“দোয়া-ই হলো ইবাদত”। [আবূ দাউদ, হাদীস নং ১৪৭৯; তিরমিযী, হাদীস নং ২৯৬৯; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৩৮২৮]রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আরো বলেন,«أَفْضَلُ الْعِبَادَةِ هُوَ الدُّعَاءُ»“সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত হলো দোয়া”। [হাকেম, হাদীস নং ১৮০৫]রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আরো বলেন,«لَيْسَ شَيْءٌ أَكْرَمَ عَلَى اللَّهِ تَعَالَى مِنَ الدُّعَاءِ»“আল্লাহর কাছে দোয়ার চেয়ে উত্তম কোনো ইবাদত নেই”। [তিরমিযী, হাদীস নং ৩৩৭০]

০৫. দোয়া অহংকার থেকে দূরে রাখে

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,﴿وَقَالَ رَبُّكُمُ ٱدۡعُونِيٓ أَسۡتَجِبۡ لَكُمۡۚ إِنَّ ٱلَّذِينَ يَسۡتَكۡبِرُونَ عَنۡ عِبَادَتِي سَيَدۡخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ﴾ [غافر: ٦٠]‘তোমাদের রব বলেন, তোমরা আমার কাছে প্রার্থনা কর, আমি তোমাদের প্রার্থনা কবুল করব। যারা অহংকারবশতঃ আমার ইবাদত হতে বিমুখ তারা অবশ্যই জাহান্নামে প্রবেশ করবে লাঞ্ছিত হয়ে”। [সূরা আল-মুমিন, আয়াত: ৬০]এ আয়াতে প্রমাণিত হলো, যারা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে না তারা অহংকারী। অতএব প্রার্থনা করলে অহংকার থেকে মুক্ত থাকা যাবে।ইমাম শাওকানী রহ. বলেন, এ আয়াত স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে দোয়া অন্যতম ইবাদত। আর এটা পরিহার করা আল্লাহর সঙ্গে অহংকার করার নামান্তর। এ অহংকারের চেয়ে নিকৃষ্ট কোনো অহংকার হতে পারে না। কীভাবে মানুষ আল্লাহর সঙ্গে অহংকার করতে পারে যে আল্লাহ তাকে সৃষ্টি করেছেন, তাকে সব ধরনের জীবনোপকরণ দিয়েছেন, যিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান এবং ভালো-মন্দের প্রতিদান দিয়ে থাকেন? [তুহফাতুয যাকিরীন: আশ-শাওকানী]

০৬. দোয়া কখনো বৃথা যায় না

যেমন, হাদীসে এসেছে: আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন,«مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَدْعُو بِدَعْوَةٍ لَيْسَ فِيهَا إِثْمٌ، وَلَا قَطِيعَةُ رَحِمٍ، إِلَّا أَعْطَاهُ اللَّهُ بِهَا إِحْدَى ثَلَاثٍ: إِمَّا أَنْ تُعَجَّلَ لَهُ دَعْوَتُهُ، وَإِمَّا أَنْ يَدَّخِرَهَا لَهُ فِي الْآخِرَةِ، وَإِمَّا أَنْ يَصْرِفَ عَنْهُ مِنَ السُّوءِ مِثْلَهَا " قَالُوا: إِذًا نُكْثِرُ، قَالَ: «اللَّهُ أَكْثَرُ»“যখন কোনো মুমিন ব্যক্তি দোয়া করে, যে দোয়াতে কোনো পাপ থাকে না ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয় থাকে না, তাহলে আল্লাহ তিন পদ্ধতির কোনো এক পদ্ধতিতে তার দোয়া অবশ্যই কবুল করে নেন। যে দোয়া সে করেছে হুবহু সেভাবে তা কবুল করেন অথবা তার দোয়ার প্রতিদান আখেরাতের জন্য সংরক্ষণ করেন কিংবা এ দোয়ার মাধ্যমে তার ওপর আগত কোনো বিপদ তিনি দূর করে দেন। এ কথা শুনে সাহাবীগণ বললেন, আমরা তাহলে অধিক পরিমাণে দোয়া করতে থাকবো। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তোমরা যত প্রার্থনাই করবে আল্লাহ তার চেয়ে অনেক বেশি কবুল করতে পারেন”। [মুসনাদ আহমদ, হাদীস নং ১১১৩৩]এ হাদীসে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে কোনো মুসলিম ব্যক্তির দোয়া কখনো বৃথা যায় না।

সেটিংস

বর্তমান ভাষা